বনানীতে ছাত্রী ধর্ষণ: দুই নম্বর এর দুই নম্বরি

 

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

রাজধানীর বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণ মামলার দুই নম্বর আসামি নাঈম আশরাফের বিরুদ্ধে নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন রকম প্রতারণা করে বেড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে ১০ মে বুধবার দুপুরে বনানী থানা পুলিশ কর্মকর্তা (তদন্ত) আবদুল মতিন জানান, আসামি নাঈম আশরাফের বাড়ি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার গান্দাইল ইউনিয়নে। তিনি নিজেকে গান্দাইল ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে বলে পরিচয় দিতেন।

সিরাজগঞ্জের গান্দাইলের স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজখবর নিয়ে নাঈম আশরাফের প্রকৃত পরিচয় সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে। তার প্রকৃত নাম আব্দুল হালিম। নাঈম আশরাফ পরিচয় দানকারী আবদুল হালিম অসচ্ছল পরিবারের সন্তান। এলাকায়ও তিনি দুই নম্বরির জন্য পরিচিত।

নাঈম আশরাফ পরিচয় দানকারী আবদুল হালিমকে চেনেন কি না জানতে চাইলে গান্দাইল ইউপির চেয়ারম্যান আশরাফ আলী মুঠোফোনে বলেন, ও শুধু সিরাজগঞ্জের ছেলেই না। আমরা একই উপজেলার একই ইউনিয়নের একই গ্রামের মানুষ। ওর গোটা পরিবারকেই আমি চিনি। আমার ছেলের নাম ব্যবহার করে সে ঢাকায় মানুষ ঠকিয়ে বেড়াচ্ছে।

তিনি জানান, আবদুল হালিম দশম শ্রেণিতে টেস্ট পরীক্ষার সময় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ঠগবাজির শুরু করে। এসএসসি পাশের পর বগুড়ার এক মেয়েকে নিয়ে এসে মেয়র সাহেবের বাড়ি দেখিয়ে বলেছিল, ওটা তার বাড়ি। মেয়েটির পরিবার পরে তা জানতে পেরে আবদুল হালিমকে বেদম মারধর করে।

তিনি আরও বলেন, গত বছর তিনি ঢাকার একটি থানা থেকে একজন উপপরিদর্শক ফোন করে তাকে জানান, একজন যুবক পুরান ঢাকার এক ধনাঢ্য শিল্পপতির মেয়েকে তুলে নিয়ে গেছেন। ওই যুবক নিজেকে তার আত্মীয় বলে পরিচয় দিচ্ছেন। তিনি পরে থানায় গিয়ে আবদুল হালিমকে শনাক্ত করেছিলেন। পরে আশরাফ ওই মেয়েকে বিয়ে করলে মেয়েটি গান্দাইলে গিয়ে দেখেন, মিথ্যা বলে স্বামী ঠকিয়েছেন। পরে বিচ্ছেদ ঘটান ওই নারী।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর নির্যাতনের ঘটনা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি জানাজানি হয় কাজিপুরেও। গ্রামের ছেলের এমন কুকীর্তির খবর টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখে লজ্জায় পড়েন এলাকার নারী-পুরুষসহ শিশুরাও। এ ঘটনায় তারাও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।

তার ব্যাপারে উপজেলার গান্ধাইল ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম জানান, ইতোপূর্বেও বগুড়া-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিজের নাম বদলেছে সে। পূর্বেও অনেক কুকীর্তি প্রমাণ রয়েছে হালিমের। হালিম এলাকায় না থাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। এমন ঘটনায় তিনি নিজেও বিব্রত।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে, ঢাকায় গুলশানের ঊর্ধ্বতন এক পুলিশ সদস্য বলেন, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্মের মালিক পরিচয়ে নাঈম আশরাফ নারীদের প্রলুব্ধ করতেন এবং মামলার প্রধান আসামি শাফাত আহমেদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন বলে তারা খবরে পেয়েছেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইন ট্রি’ হোটেলে সাফাত আহমেদ নামে এক বন্ধুর জন্মদিনে যোগ দিতে এসে ধর্ষণের শিকার হন দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। ধর্ষণের শিকার ওই দুই ছাত্রী গত ৬ মে শনিবার সন্ধ্যায় বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন- সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিব, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী সাকিফ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!