অ-মানব ও এক বিন্দু রহস্য ( তৃতীয় পর্ব )

 

 

অ-মানব ও এক বিন্দু রহস্য ( তৃতীয় পর্ব )
রচনাঃ- সেলিনা জাহান প্রিয়া ।।

দারগা সাব তার স্ত্রী দিকে একটু রহস্য ভাবে তাকিয়ে আছে । দারগা বাসায় আসা থেকে আজ তাকে কেমন কেমন জানি লাগছে । রেখা বেগম একবার মাথায় এসে হাত দিয়ে বলল আজ কি হয়েছে তোমার ?তোমার ভাব তো কিছুই বুঝতে পাড়ছি না আজ !
দারগা একটু রাগের মাথায় বলল
—- আর কইও না । আলম মিয়ারে সাথে যত দিন কাজে গিয়েছি একটা না একটা সমস্যায় পরেছি ।
—- পান মুখে দিয়ে চোখ একটু বাঁকা করে রেখা বেগম স্বামীকে বলল তুমি তো আলমের খুব ভক্ত আজ এত মেজাজ কেন ? আসল কথা খুলে বল ।
—– তোমাকে আসল কথা বলা আর নিজের পায়ে কুড়াল মাড়া সমান কথা । সব তো তুমি আর তোমার মেয়ে নিয়েই আমার যত চিন্তা ।
—– আমি মনে হয় তোমার কথা বাজারে ঢোল মেরে মানুষ কে বলে বেড়াই । থাক আমাকে বলা দরকার নাই । তোমাকে আসল কথা বলি । তোমার মেয়ে তার বড় মামিকে বলেছে এই জীবন রেখে কি লাভ ? তোমার মেয়ের মেজাজ মর্জি কিন্তু তোমার মতো । ঘটনা কিন্তু আমি কিছুই জানি না। আমার পেট থেকে এমন কাল সাপ কেমনে জন্ম নিল আমি ভেবে পাই না। এই টুক মাইয়া
আর কিনা প্রেম করে । দারগা বউয়ের দিকে তাকিয়ে বলল – তোমার বিয়ের সময় তোমার বয়স কত ছিল । ভাগ্য ভাল আমার মেয়ে এস এস শি পাশ করে কলেজে পড়ে আর তুমি তো এইট পাশ করেই আমার সংসারে আসছো ।
রেখা বেগম মেজাজ খারাপ করে বলল আমাকে কি ভাবে বিয়ে করেছ তা কি ভুলে গেছ ।
—– ভুলে যাই নাই । তখন এই নিজাম পুলিশ না থাকলে তোমার ভাই যে ভেজালে পড়ছিল তা থেকে বাঁচতে পারত ? আমি ছিলাম কপাল ভাল তোমাদের ।
—— হে উপকার করে তার বোন রে বিয়ে কইরা গোষ্ঠী উদ্ধার করেছ ।
রেখা বেগমের কথায় দারগা আর কোন কথা বলে না। দরজার পাশে কুকুর চুপ করে বসে আছে । দারগার দিকে মাঝে মাঝে তাকায় । দারগা মনে মনে কুকুর কে খুব ভয় পায় । রেখা বেগম দারগা স্বামী কে বলে তুমি বার বার কুকুরের দিকে এমন করে তাকাও কেন ? মনে হয় কোন রহস্য আছে । দারগা হেসে বলে তোমার দেখি পুলিশের মতো সভাব হয়ে গেছে !
— রেখা বলে হবে না সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে ঠিক তেমনেই পুলিশের সাথে সংসার করতে করতে পুলিশ হয়ে গেছি ।
***************************************************************************************
দারগা সাব রাত বার টায় ঠিক রেল স্টেশনে চলে এসেছে । সাথে তিন জন নতুন পুলিশ । রেল স্টেশন ভাল করে চার পাশ দেখল । না কোথাও সেই অ-মানব নেই । কুকুর গুলো ও নেই । স্টেশন ম্যানেজারের রুমে গিয়ে চেয়ারে বসে বলল ভাই জান কাল রাতে যে আগুন পোয়াইলাম একটা লোকের সাথে তাকে কি দেখেছেন । ম্যানেজার বলল আগে চা খেয়ে নেন । রেল স্টেশনে মানুষ বিপদে না পড়লে আসে না। বিভিন্ন কারনে মানুষ রেল স্টেশনে আসে । আপনি কাল যেই লোকের সাথে আগুন পোয়াইছিলেন লোকটা ঐ যে ঐ বেঞ্চে সেই সকালে এসে বসেছিল । আমি সকালে দেখে রাতে যখন স্টেশনে আসি দেখি ঐ খানেই বসা । কিছু কুকুরের সাথে খুব ভাব দেখলাম । প্রথম দেখায় ভদ্র লোক মনে হলে পরে মনে হয়েছে পাগল ।
———– পরে কেন পাগল মনে হল ।
———– আপনি পুলিশ মানুষ বললেই বুঝবেন । ট্রেন আসার সময় হলে আমরা একটা ঘণ্টায় বাড়ি দেই । আমি যত বার ঐ ঘণ্টায় বারি দিতে গেছি ঐ পাগল এসে মনের ইচ্ছা মতো কত গুলো বাড়ি দিল । তবে মজার বিষয় প্রতিবার ঠিক সময় বারি দিয়েছে । পাগল মনে হল এই কারনে আমাদের স্টেশনে ঐ কোনায় দুই তিনটা ফকির রাতে ঘুমায় ছালা বিছাইয়া । সে কি করলো গত কাল রাতে আমাকে বলল ভাইয়া একটা কথা বলি । আমি বললাম বলেন । সে বলল আপনি কিছু কিছু ভাল কাজ করে স্বর্গে যেতে পারেন । আমি বললাম যেমন । সে বলল আজ যদি কোন বড় কর্তা আসে আপনি কি ঐ রেস্ট রুম খুলে দিবেন না। আমি বললাম দিব । সে বলল সেই কাজ আপনি ভয়ে করতেন কিন্তু এই চার পাঁচ জন ফকির কে রাত ১০ টায় যদি রুম খুলে দেন বিশেষ করে বর্ষা আর শীতের সময় তারা একটা ঠাণ্ডা বাতাস থেকে আরামে থাকতে পারে । তারা যেই আরাম পাবে আর আপনার জন্য যে দোয়া দিবে সারা জীবন সেই দোয়া টাকা দিয়ে কিনে পাবেন না। মহান সৃষ্টি কর্তা আপনার এই ভাল কাজের পুরুস্কার এই জগতে বা পরের জগতে দিবে । আমি কিন্তু দারগা সাব ঐ লোকটার মতো কোন দিন চিন্তা করি নাই । একটা ছোট রেল স্টেশন মেইল আর লোকাল ট্রেন থামে । তাদের যদি থাকার জায়গা থাকত তাহলে কি রেল স্টেশনে আসতো ।
দারগা আর কোন কথা না বলে বলল চায়ের জন্য ধন্যবাদ । আপনার কথায় কিন্তু তাকে পাগল মনে হচ্ছে না।
—– আরে পাগল হবার মতো কাজ করেছে দারগা সাব । আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে সেই রেস্ট রুম নিজেই পরিষ্কার করে তাঁদের কে নিয়ে রুমে আসে । আর কি ভাবে রুম ব্যবহার করতে টয়লেট ব্যবহার করতে তা তাঁদের দুই ঘণ্টা শিখিয়েছে । আপনি বলুন আমি আর আপনি কি এই কাজ গুলো কাউকে এই ভাবে শিখাইব । ঐ লোকটা পাগল ছাড়া কিছুই না। তবে আপনার সাথে কি কোন সমস্যা হয়েছে দারগা সাব ।
——– না কোন সমস্যা নেই । তাকে একটু দরকার । আমার কাছে তাকে কোন সাধারন মানুষ মনে হয় না। আমার মনে হয় সে কোন বড় ধরনের ক্রিমিনাল হতে পারে ?
——- না দারগা সাব ! যত বড় ক্রিমিনাল হউক না কেন? পুলিশ দেখলে ভয় পাবার কথা । আমি দেখেছি তার চেহারা সে কোন পাগল মানুষ হতে পারে তবে ক্রিমিনাল না।
——- ঠিক আছে ম্যানেজার সাব আমি আসি । যদি তাকে দেখেন তাহলে ফাঁড়ীতে খবর দিয়েন । তাকে আমার একটু দরকার ।
—– ঠিক আছে দারগা সাব অবশ্যই খবর দেব । পুলিশের চোখে সন্দেহ তা চিন্তার বিষয় । আমাদের দেশের পুলিশ বলে কথা ঘটনা কিছু আছে মনে হয় ।
দারগা চিন্তায় পরে গেল । আমার মানি ব্যাগ সে কি ভাবে নিল । আমার বাসা পর্যন্ত চিনে গেছে হারাম জাদা । আমি ভেবেছি বাজিতে জিতলে কি আর পুলিশের কাছে টাকা পয়সা চাইতে পাড়বে । শ্যালা হারাম জাদা আমার কলিজা চেয়ে বসেছে । সে কোন সাধারন মানুষ না। সে আমার বিষয়ে সব তথ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে । আমার মেয়ে যেই ছেলের সাথে সম্পর্ক করেছে সেই ছেলের কিছু হতে পারে । আমি গিয়ে হলাম একজন দারগা আর আমার মেয়ে প্রেম করে এক চাষার ছেলের সাথে । তাও সেই ছেলে ম্যাট্রিক পাশ না। সদরে একটা ব্যাটারির দোকানে কাজ করে । ব্যাটারে আমি ভাল করে শিক্ষা দিলে ঐ পাগলেরে আমার পিছনে লাগাইত না। যাই হউক আমি এর শেষ দেখে নিব । ওর বাজী যদি আমি ওকে শিক্ষা না দেই তবে আমি ও নিজাম দারগা না।
সাথের পুলিশ বলল এসে বলল স্যার যেমন লোক খুঁজ করছেন তেমন কোন লোক স্টেশনে নাই । খুব বেশী শীত আজ । চলেন স্যার সামনে বাস স্ট্যান্ডে যাই । ঐ খানে কয়টা চায়ের দোকান খোলা থাকে ।
দারগা বলল তোমরা যাও গাড়ী নিয়ে চা খেয়ে এসো । আর রাস্তায় কোন কুকুর সাথে মানুষ দেখলে আমাকে এসে নিয়ে যেও । চার পুলিশ গাড়ী নিয়ে বাস স্ট্যান্ডের দিকে যায় । দারগা পকেট থেকে সিগারেট বের করে । রাত প্রায় দুটা বাজে । পকেটে হাত দিয়ে দেখে ম্যাচ নাই । মনে পড়েছে আসার সময় বিছানার উপর ম্যাচ রেখে এসেছে । আর একটু আগে হলে সাথের লোকদের বলে দিলেই ম্যাচ নিয়ে চলে আসতে পারত । বেশী টেনশন করলে দারগা সিগারেট খেতে ভুলে যায় । সামান্য একটা বিষয় কিন্তু তাকে ভাবিয়ে তুলেছে ।
অনেক দূর থেকে মাইকে বাউল গান শুনা যাচ্ছে । শীত কাল আসলে আর নির্বাচন আসলে মাইকের ব্যবহার বেড়ে যায় । এই সময় মুন্সি মৌলবি আর পালা গান আর বাউল শিল্পীদের খুব কদর । পাগলের সেই বেঞ্চে গিয়ে দারগা সাব বসলো । মাপলার দিয়ে ভাল করে গলা মাথা বেঁধে নিল যাতে ঠাণ্ডা কম লাগে । মফস্বলের রেল স্টেশন তাই খুব নীরব । তার পর শীত বলে কথা । দারগা চার পাশ ভাল করে দেখল । না কেউ নাই । ভাবলো দেখি ম্যানেজারের কাছে আগুন আছে কিনা । ম্যানেজারের রুম বন্ধ । আবার এসে সেই আগের বেঞ্চে এসে বসলো । বাউল গান কানে আসছে । এমন সময় দেখে কিছু কুকুর ঘেউ ঘেউ করছে । কিন্তু স্টেশনে তো কোন কুকুর নাই । পূর্ব দিকের রেল লাইন ধরে কুয়াশার মধ্য একটা একটা করে কুকুর আসতে লাগলো । দারগা গুনে দিকে প্রায় সাত টা কুকুর । স্টেশনের চার দিক ছড়িয়ে যে যার মতো বসে পড়লো । কোন কুকুরের আর কোন শব্দ নাই । লাইটের আলোতে কুয়াশার মধ্যে রেল লাইন ধরে সেও অ-মানব হেঁটে আসছে । এত শীত কিন্তু একটা জিন্সের প্যান্ট , পায়ে চটীর স্যান্ডেল । একটা টিশার্ট ফুল হাতা । মুখ দেখে সাদা ধোঁয়া বের হচ্ছে তবে সিগারেটের না কুয়াশার । সামনে একটা কুকুর পিছনে একটা কুকুর । দারগা রেল স্টেশনের চার পাশ ভাল করে দেখল । এক মাত্র দারগা ছাড়া আর কেউ নাই । একটু একটু ভয় পেতে লাগলো । লোকটার হাটার মাঝে একটু একটু ভয়ের ছাপ আছে , হাত পা গুলো খুবেই সাদা । মনে হয় দারগার দিকেই আসছে খুব ধীরে ধীরে হেঁটে । দারগা ভাল করে দেখে নিল তার কোমরে পিস্তল আছে কি না । একটু শান্ত হল যে তার কোমরে পিস্থল আছে । আর যাই হউক কম পক্ষে ছয়টা গুলি করতে পাড়বে । গুলির শব্দে তার সাথে যারা আছে সবাই চলে আসবে । ঠিক এমন সময় স্টেশন ম্যানেজার পিছন থেকে ডাক দিল –
দারগা সাব রুমে আসেন আমি একটু বাথ রুমে গিয়েছিলাম । একটু পরে আপনাকে কালকের সেই চা খাওয়াব । দারগা পিস্তল থেকে হাত টা ধীরে সরিয়ে নিল । ম্যানেজার সাব কে বলল ভাই জান ম্যাচ হবে । সিগারেট ধরাব ।
——- আরে রুমে এসে বসুন । আমি সিগারেট খাই না। দেখি আপনাকে আগুন দেয়া যায় কিনা ।
——- দারগার চোখ কিন্তু অ-মানবের দিকে । অ-মানব মাথা নিচু করে প্ল্যাটফরমের উপর উঠল ।

এর মধ্যে দারগার সামনে এসে হাসি দিয়ে একটা লম্বা সালাম দিল ।
অ-মানব বলল স্যার আজ তো আপনার ডিউটি নাই । তবে কি আমাকে খুঁজতে আসছেন ?
——– কথা কম বল ? কোথায় থেকে আসছ আর গত কাল না বলেই কোথায় চলে গেছ ?
——– স্যার আমি কারো চাকুরী করি না। তাও কোন জবাব দিহিতা নাই । আপনি যেই ভাবে কথা বলছেন মনে হয় আমি কোন চোর আর আপনি আমাকে খুঝতে বের হচ্ছেন ।
——— আগে বল কাল আমার মানি ব্যাগ কি করে পেলে ?
——— দেখুন আপনি যে ভাবে বেঞ্চে বসে আছেন আজো মনে হয় কালকের মতো মানি ব্যাগ পরে যাবে ।
——— দারগা পিছনের পকেটে হাত দেখে ঠিকেই পরে যেতে পারে ।
——— কিন্তু কাল তুমি মানি ব্যাগ না দিয়েই ট্রেনে চরে চলে গেলে কেন ?
——— না আমি ট্রেনে চরে যাই নাই । আমি অতি প্রকৃতিক কাজ করতে গিয়ে ছিলাম । এসে দেখি আপনি নাই । মানি ব্যাগটা পরে আছে ।
——— আর কুকুর গুলো কাল কোথায় গেল ।
——— দারগা সাব ট্রেনে মানুষেই উঠতে পারে না আর কুকুর ট্রেনে উঠবে । কুকুর গুলো আমার সাথে সাথে ঐ দুরের জমিতে গিয়েছিল ।
———— দারগা একটু রাগ হয়ে আমার সাথে ফাজলামি কর মিয়া তুমি ।
এমন সময় সব গুলো কুকুর এক সাথে ঘেউ ঘেউ করে দারগার চার পাশে ঘিরে ধরলো । এক সাথে ঘেউ ঘেউ করতে লাগলো । অ-মানব দারগার দিকে চেয়ে একটু হাসি দিয়ে বলল স্যার ভয় পাবেন না।
আপনি এখনো লাইন ক্রস করেন নাই আপনাকে কামড়াবে না। নেন আগুন নেন । সিগারেট ধরান । একটা টান দিলেই নিকোটিন আপনাকে শীতল করে দিবে । কারন নিকোটিন মনের উপর দারুন প্রভাব ফেলে । কুকুর গুলো থেমে গেল । দারগা ম্যাচটা হাতে নিয়ে সিগারেটে আগুন দিল । শান্ত হতে চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত বলল ভাই আপনি কে – যে আমাকে এত টা টেনসনে ফেলে দিয়েছেন ?
———অ-মানব আবারো একটু হেসে বলল স্যার আমি অ-মানব । মানব হাবার জন্য জন্ম থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছি । আজ পর্যন্ত ভাল কোন স্কুল কলেজ বিশ্ব বিদ্যায় পেলাম না যেই খানে যে মানুষ হওয়া যায় । এই জগতে যত যুদ্ধ যত মারামারি সব কিন্তু শিক্ষিত মানুষ লাগাচ্ছে । এই যে আপনি শিক্ষিত মানুষ
কিন্তু দমাতে পাড়ছেন না। এই খানে আপনার শিক্ষা আর মানুষ হওয়া ১০০% ফেইল । আমি তাই মানুষ না হয়ে অ-মানব হয়ে রয়ে গেলাম । একটা কথা বলব স্যার ! রাগ করবেন না কিন্তু ?
———— কি কথা বল শুনি ?
———– আমি কিন্তু আমার বাজির কথা ভুলে যাই নাই । আপনিও কিন্তু ভুলার চেষ্টা করবেন না।
আমার সাথে কেউ কথা দিলে তা রাখতে হয় ।
————- আর যদি না রাখি ?
————– স্যার আমি কিন্তু আপনার শ্বশুর বাড়ি চিনি । ছেলেটা কিন্তু চিনে না, যদি চিনে আপনার মেয়ে কে নিয়ে পালাবে । ঢাকা কোটি মানুষের শহর । ছেলেটা যে কাজ জানে তাতে তার চলার কষ্ট হবে না। আর একটা কথা আমাকে নিয়ে চিন্তা না করে নিজ মেয়েটা নিয়ে চিন্তা করুন ।
————— তুমি জান কি ঐ ছেলেটা এখন কোথায় আছে ?
—————জানি স্যার , জানি! অন্য থানার অন্য জেলার মিথ্যা মামলায় এখন জেলে । সব আপনার কার সাজি । কাজ চলছে সেই মামলা ঠিক বে না।
দারগা নিজাম সাব চুপ হয়ে যায় । এ দেখি বাঘের উপর সিংহ । মনে একটু ভয় নাই । বাঘের বাচ্চার মতো সিনা উঁচু করে কথা বলে । দারগা খুব শান্ত হয়ে বলল তা ভাই অ-মানব এত রাতে শীতের মধ্যে
কই থেকে আসা হল ।
————– স্যার ঐ যে মাইকে গান শুনতে পাচ্ছেন না ! ঐ গানের আসর থেকে আসলাম ।
———— তা কই যাচ্ছেন ?
————- স্যার যাচ্ছি না বলেন আপনার কাছে আসলাম । সন্ধ্যায় ফাঁড়ী গিয়ে শুনলাম আপনার ছুটি । পরে আপনার বাসায় গেলাম । আপনার স্ত্রী শীতের পিঠা খেতে দিল । কুকুর কে দেখে আসলাম । আর জানলাম আপনি আবার রাতের ডিউটি তে বের হয়েছেন । আমি ভাবলাম বাউল গান শুনে একবারে মাঝ রাতে স্টেশনে দেখা করব ।
————– আমাকে যে স্টেশনে পাবে এটা ভাবলে কই ভাবে ?
————— এটা একটা সাধারন সাইকলজি স্যার । ঠিক ধীরে ধীরে জেনে যাবেন ।
——————————————————-চলমান ।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!