ইহকালে না দিলে পরকালে দেব

ইহকালে না দিলে পরকালে দেব
(দেশ, জাতি ও হোমিওপ্রাথি)
আওলাদ হোসেন

লেখালেখি একটা নেশা। লেখায় লেখা বাড়ে। আমার লেখায় আমি আল্লাহর আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে থাকি যা অন্যেরা দেন নাই। কেন দেন নাই বলতে পারব না। মানুষ মানুষের কথা বলতে পারে না, স্রষ্টা পারেন। ইহকালে না দিলে পরকালে দেব কথাটি আমরা বিশ্বাস করি না বা মানি না। যদি করতাম তাহলে আমরা সম্পদের পাহাড় গড়তে পারতাম না এবং সংসারের মায়ায় জড়িয়ে পরতাম না। মৌলভীরা টাকা পয়সা লেনদেন করতেন না। ফকির বাদশা অথবা বাদশা ফকির কথাটি প্রচলিত থাকতো। সাহাবাদের অনুসারী হতাম। উমাইয়া, আব্বাসীয়, হানাফি, আহমদি, হাম্বলী প্রভৃতি নামের ভক্ত হতে পারতাম না। এক আল্লাহ ওয়াহেদুন ওয়াহেদুন বলতেই জীবন যেত। পৃথিবীর ইতিহাসটিকে কি পাল্টিয়ে দেয়া যায় না। মতবাদ, মতভেদ,মতবিরোধ ইত্যাদি দিয়ে কি কলুষমুক্ত করা যায় না। মাজারে টাকা যদি সরকার নেয় তাহলে আল্লাহকে খুঁজে নিতে বলা হয় আর যদি গদীনসীনরা পেয়ে থাকে তাহলে দিন রাত ২৪ ঘন্টাই আল্লাহ তার সাথে থাকে ও……….পালন করে থাকে, কি আশ্চর্য সেলুকাসের এই দেশ। সরকারকে যদি কামাল আতাতুর্ক অথবা হিটলার হতে হয় তাহলে সাধারণ পাবলিক যাবে কোথায়? বাতাস ও স্রোত বিপরীতমুখী বইছে। কে শোনে কার কথা। এক তরফা বেচা কেনাকে বলা হয় ।Monogamy/Monopoly. Competitive G Multi National Company কাজ করে থাকে। Democracy এর বিপরীত Tyranny একদল, একমত, একপথ ইত্যাদি জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়ে বৃহৎ শক্তি ক্ষুদ্র শক্তিকে কিভাবে ধ্বংস করে তার উপমা দেশে দেশে বিরাজিত। গরীবের সংসারে বৃহৎ শক্তির মহাজন বা জমিদারের মনোবাঞ্ছা পূরণ করা সম্পূর্ণ বিকৃত মন মানসিকতা। নিজের গৃহে ১০১জন বারবণিতা থাকা সত্ত্বেও গরীবের ১টি বউকে কক্ষচ্যুত করার জন্য যতরকম কায়দা কৌশল করা দরকার তার সবই করার পর আরও ১০টি দাসী কিনে দেয়ার অঙ্গীকার করবে তাতেও যদি কাজ না হয় তা হলে হেন অপকর্ম নেই যা সে করবে না। মুসলমানদের জন্য পৃথিবীর অনেক দেশ উপমা হিসেবে কাজ করছে। মুসলমানকে শুধু জুজুর ভয় এবং একমাত্র বন্ধু হিসেবে প্রমাণ করার জন্য সব কিছু করতে রাজী থাকবে ইত্যাদি। বোকা কুমীর লেজ নাড়িয়ে প্রমাণ করে যে সে মরে নাই। বাঙালির হাসির গল্পে এ সমস্ত সূক্ষ্ম উপদেশ উপহার হিসেবে বর্ণনা দেয়া আছে। নাপিত ও ব্রাক্ষন গল্পে এসেছিল নিমাই দত্ত। বলে গেছে সকল তত্ত্ব। তোমার এত গুণ, তুমি নাকি এমন তেমন তখন নাপিত ভয় পেয়ে যায় এবং বউকে আর অত্যাচার করে না। অচ্ছুৎ গল্পটিতে ছুতা দিয়ে কাকের যখন চড়ুই এর গোশত খাওয়ার সময় আসে তখন কাককে পবিত্র মুখে গোসত খাওয়ার জন্য বল্লে কাক দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকে এবং বলতে থাকে-
গেরস্ত ভাই! গেরস্ত ভাই!
দাও আগুন, গড়বে কাস্তে,
কাটবে ঘাস, খাবে মোষ,
খুড়বে মাটি, গড়বে ঘটি,
ভরবে জল ধুব ঠোঁট,
তবে নেব চড়–ইর জোট। (পরিবর্তিত)
মা এর মুখে শোনা।

এ ধরণের গল্পে বাঙালির জীবনে হাসি আনন্দ কতটা সহজ সরল তার প্রমাণ মিলে। ইহকালে না পেলে পরকালে দেয়া হবে এই বিশ্বাস পুনরায় গ্রহণ করতে হবে আর এ জন্যে আল-কুরআনের আদেশ নির্দেশ বাংলায় পড়তে হবে। এটা সাধনার বিষয়। হোমিওপ্যাথিতে ড. হ্যানিম্যান Organon বইটিতে আবিষ্কারের কঠিন সূত্রগুলি দিয়ে যে চিকিৎসা শাস্ত্রটি সাজিয়েছেন তা বুঝতে না পারার কারণে বিলুপ্তির পথে ধাবিত হয়ে এখন বোতল ও বড়ি বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে, অথচ অনেক সাধনার পর বুঝা গেল যে art কথাটি কিভাবে কার্যকর করা হয়েছে। অর্থাৎ রোগ যাকে আক্রান্ত করে তার মনে ও দেহে পরিবর্তন বা রূপান্তর ঘটে তা অদৃশ্য। কিন্তু রোগটি ধরার জন্য প্রকাশিত Sign and symptom প্রভাব বিস্তার করে মাত্র ওখানে কোন চিকিৎসা নেই। চিকিৎসা হচ্ছে রোগী (মানুষটি) কি রূপ ধারণ করেছে। রোগী বল্ল পায়ে কাঁটাগারা হয়েছে। আসলে রোগী কিসে পরিণত (ওষুধ) হয়েছে তাই সূত্রমতে খুঁজতে হবে। দেখা গেল রোগী R/T তে রূপান্তরিত হয়েছে। Sign and Symptom  বিশ্লেষণ করে তাই পাওয়া গেল। অর্থাৎ জিহবা লাল ত্রিকোনা বিশিষ্ট এবং হাটাহাটিতে উপশম। কোথায় রোগ কোথায় রোগী। এবং ক্রমেই চির রোগের ক্ষেত্রে রোগী কিসে রূপান্তরিত হয়েছে Organon এর আলোকে স্থির করতে হয় যা জানতে হয়, শিখতে হয়, বুঝতে হয়, পারতে হয় যা কঠিন ও দুর্বোধ্য ফলে সকলেই সফল ডাক্তার হতে না পেরে প্যাটেন্ট এর দ্বার প্রশস্ত করে দিচ্ছেন যা অদৃশ্য তত্ত্বের মূল ঘুরটিকে নির্বাসিত করে দিচ্ছে। এই কথাটি বুঝতে আমার অনেক বৎসর পার হয়ে গেছে। এটাকে প্রবেশ করা বলে এবং আমার ক্ষেত্রে যা অন্যেরা হয়তো সহজেই বুঝতে পেরেছেন বা প্রথম কথাতেই ধরতে পেরেছেন ইউরেকা। রোগ ভাইরাস জনিত অথবা মরণ ব্যাধি (Fatal Disease) দীর্ঘ দিন ধরে হতে পারে। হোমিওপ্যাথিকে রক্ষা করতে হলে Organon শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। অর্গাননকে প্রতিষ্ঠিত করাই আমার ব্রত। মুসলমানদেরকে পৃথিবীতে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আল-কুরআনের শিক্ষাকে পুনরায় গ্রহণ করতে হবে তা যতই তিক্ত হোক না কেন। সেহেতু পুনরায় কিছু আয়াত তুলে ধরা হলো যাতে আমার কথার চাইতে মূল্যবান উপদেশ গ্রহণ করাই ভাল। সূরা বাকারা-আয়াত নং-২৮ (কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ? অথচ তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ। অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে প্রাণ দান করেছেন, আবার মৃত্যু দান করবেন। পুনরায় তোমাদেরকে জীবনদান করবেন। অতঃপর তারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে।)

(সূরা বাকারা-আয়াত নং-১৬৪) নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের সৃষ্টিতে, রাত ও দিনের বিবর্তনে এবং নদীতে নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ তা’ আলা আকাশ থেকে যে পানি নাযিল করেছেন, তদদ্বারা মৃত যমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম জীব-জন্তু। আর আবহাওয়া পরিবর্তনে এবং মেঘমালার যা তাঁরই হুকুমের অধীনে আসমান ও যমীনের মাঝে বিচরণ করে, নিশ্চয়ই সে সমস্ত বিষয়ের মাঝে নিদর্শন রয়েছে বুদ্ধিমান সম্প্রদায়ের জন্যে।

(সূরা বাকারা-আয়াত নং-২৫৫) আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।

(সূরা আল ইমরান-আয়াত নং-২৬-২৭) বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল।

(সূরা আরাফ আয়াত নং-২৩) তারা উভয়ে বললঃ হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।

(সূরা নূর আয়াত নং-৩৫) আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের জ্যোতি।

(সূরা কাহাফ আয়াত নং-১১০) বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।

সূরা বনিইসরাইল আয়াত নং-১১০ (পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।)

(সূরা ইয়াসিন আয়াত নং-৮২-৮৩) তিনি যখন কোন কিছু করতে ইচ্ছা করেন, তখন তাকে কেবল বলে দেন, ‘হও’ তখনই তা হয়ে যায়। অতএব পবিত্র তিনি, যাঁর হাতে সবকিছুর রাজত্ব এবং তাঁরই দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।

(সূরা ত্বীন-আয়াত নং-৮) আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বিচারক নন?

(সূরা যিলযাল-আয়াত নং-১-২) যখন পৃথিবী তার কম্পনে প্রকম্পিত হবে, যখন সে তার বোঝা বের করে দেবে।)

(সূরা ইখলাছ আয়াত নং-১-৪) বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।

দেশটি স্বাধীন হওয়ার পর বৃহৎ রাষ্ট্রসমূহের তাবেদারীতে নিজেদের পায়ের উপর দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে তাই মনে হচ্ছে। রাজনীতি একটি নেশা। আমার মত above 70 এর অনেকেই ছ্যাকা খেয়ে পটল তুলেছেন। অনেকেই পটল তুলার পথে। অনেকেই শ্রীঘর দর্শন করেছেন অনেকেই Pipe Line এ আছেন। বরাতগুনে সাক্ষাৎ হতে পারে। স্বাধীন দেশের নাগরিক গণতন্ত্র হারিয়ে পথে বসেছে। বৃহৎ রাষ্ট্রের টানাটানিতে দেহখানি ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে পঙ্গুত্বে বরণ করার পর হারানো গণতন্ত্রের আর প্রয়োজন হবে না। এখনও সময় আছে বাহিরের ইন্ধনে নিজেরা নিজেদের শক্তি খর্ব করে দুর্বল হয়ে পড়ার চাইতে ঘাড়ের জোড়ের বদলে কলামিস্টদের দেয়া বুদ্ধিমতে অনেকের ক্ষতি হলেও দেশের যদি মঙ্গল হয় সেই পথ গ্রহণ করাই ভাল অন্যথায় বানরের পিঠা ভাগের পাল্লায় পড়ে ধন মান সবই না হারায়। আমরা দেখেছি সিকি আধুলীদের রাস্তায় নেমে কষ্ট করার চাইতে বিদায় নিয়ে ঘরে বসে থেকে আল্লাহ আল্লাহ করাই ভাল কারণ ব্রিটিশ ভারতে মুসলমানরা তার প্রমান। যেমন আমার এক আত্মীয়ের MDS রোগ হওয়াতে ডাক্তার আল্লাহ আল্লাহ করতে বলেছেন। আল্লাহকে যদি ডাকতেই হয় বাল্যকাল হতেই ডাকা ভাল তাতে ইহকালে মঙ্গল এবং পরকালেও মঙ্গল হবে। আর ইহকালে যদি কোন কারণে কেউ বঞ্চিত হয় ইহকালে না দিলে আল্লাহ অবশ্যই পরকালে দিবেন। রোগে মানুষ ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ে, মনে হয় পৃথিবীটাও ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ছে, অন্য কোন ব্যথায়, বিপাকে, বিভ্রমে।

বিশ্বে মুসলমানদের ভাটির টান উজান ঠেলতে পারমানবিক শক্তির সমকক্ষহতে হবে, অন্যথায় নিশিথের গরু চোরের মত আন্তর্জাতিক অখ্যাতি সম্পন্নরা লজ্জায় ঢেকে দেবে দেশের সম্মান। একটি পিঁপড়া অপর একটি পিঁপড়াকে বিরাট কিছু মনে করে। কিন্তু বিশ্ব ব্রহ্মান্ডে পৃথিবী একটি পিঁপড়া, পৃথিবীর তুলনায় মানুষই পিঁপড়া, এই জ্ঞান কি মস্তিস্ক ধারনে সক্ষম-তারপরও মানুষ কত দাম্ভিক, Transdressor.

আগে যদি জানতামরে বন্ধু ঘর বানাইতাম বৃক্ষের তলে
কাক পক্ষিও জানতো নারে বন্ধু মরিবারও কালে
বন্ধুরে… বন্ধু কোথায় তোমার বাস।
কুল্লমান আলাইহা ফানিউ ওয়াইয়াবকা রাব্বিকা জুলযালালি ওয়াল ইকরাম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!