উপলক্ষ সনিয়া, আজ দিল্লিতে বিরোধী বৈঠকে মমতাও, সবার চোখ আগামিকালের ফলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

উপলক্ষটা ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীর ৭২তম জন্মদিন। আর তাকে কেন্দ্র করে দিল্লিতে বিরোধী নেতাদের আগমন এবং বক্তব্য বুঝিয়ে দিচ্ছে, আগামিকালের মহাবৈঠকের জন্য কী ভাবে তৈরি হচ্ছে বিরোধী শিবির। তার পরের দিন, মঙ্গলবারই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের গণনা। সেই ভোটের ফলের উপর অনেকখানি নির্ভর করবে আগামী দিনের বিরোধী ঐক্যের ছবি। নরেন্দ্র মোদী-বিরোধী এই জোটকে এক সুতোয় গাঁথতে এ বারে সনিয়ার পাশাপাশি সক্রিয় হয়েছেন রাহুল গাঁধীও।

এ দিন দিল্লি পৌঁছে সনিয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর কাছে যান ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিন। সঙ্গে ছিলেন কানিমোজি, এ রাজা-সহ ডিএমকে-র শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে উপস্থিত রাহুল পরে টুইট করেন, ‘‘সময়ের পরীক্ষায় যে জোট উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও মজবুত হল।’’ কংগ্রেস সূত্রের খবর, ১৬ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে প্রয়াত ডিএমকে নেতা করুণানিধির একটি মূর্তির উন্মোচন হবে। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই সনিয়াকে আমন্ত্রণ জানান স্ট্যালিন। কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে সনিয়ার গ্রহণযোগ্যতা যথেষ্ট। তাই অসুস্থ শরীরেও তেলঙ্গানায় প্রচারে অং‌শ নিয়েছেন সনিয়া। শরীর সুস্থ থাকলে চেন্নাইয়ের অনুষ্ঠানেও যাবেন ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন।

সোমবারের বিরোধী বৈঠকে যোগ দিতে আজ রাতেই দিল্লি পৌঁছেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সকালেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সনিয়াকে। তেজস্বী যাদব থেকে ওমর আবদুল্লা— সকলেই সনিয়াকে জন্মদিনের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনকি ভোট প্রচারে গিয়ে সনিয়াকে ‘কংগ্রেসের বিধবা’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন যে নরেন্দ্র মোদী, তিনিও আজ টুইটে শুভেচ্ছা জানান।

রাতে দিল্লি বিমানবন্দরে মমতা বলেন, ‘‘আমি কেন এসেছি, আপনারা জানেন। আগামিকাল বিরোধী দলের বৈঠক আছে। তাতে যোগ দিতেই আমার দিল্লি সফর।’’ কিন্তু তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, শুধু মাত্র বকলমে রাহুলের নেতৃত্বে বিরোধী জোটের বৈঠকে হাজির থাকা মমতার লক্ষ্য নয়। উনিশের লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী নেতৃত্বের হিসেবটিও নিজে দেখে নিতে চান তিনি। তৃণমূলের এক নেতা জানান, সনিয়া, অরবিন্দ কেজরীবালের পাশাপাশি মমতা দেখা করবেন শত্রুঘ্ন সিন্‌হা, অরুণ শৌরি, রাম জেঠমলানীদের সঙ্গেও। জানুয়ারিতে ব্রিগেডের সভায় উপস্থিত থাকার জন্য অখিলেশ যাদব এবং চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করবেন তিনি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে যশবন্ত সিন্‌হা আজ কলকাতায় বলেন, ‘‘দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।’’

কংগ্রেসের সূত্রের মতে, অনেক বিরোধী দল এখনও রাহুলের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। মায়াবতীও এখনও পর্যন্ত বৈঠকে উপস্থিত থাকার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেননি। তিনি বরং ১১ ডিসেম্বর পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফল দেখে কৌশল স্থির করতে চান। কিন্তু চন্দ্রবাবু নায়ডু চেষ্টা করছেন, বিরোধী দলগুলিকে এক করতে। সম্প্রতি দিল্লিতে কৃষকদের সভায় রাহুল এবং কেজরীবাল প্রথম বার এক মঞ্চে এসেছেন। তার নেপথ্যে কাজ করেছেন চন্দ্রবাবু এবং শরদ পওয়ার। বৈঠকে কেজরীবাল যোগ দেবেন। শিবপাল যাদবের মঞ্চে দাঁড়িয়ে আজ মুলায়ম সিংহ যাদবও বলেছেন, জোটের স্বার্থেই কাল বিরোধী বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি।

কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, সব কিছুই নির্ভর করবে মঙ্গলবার ৫ রাজ্যের ফলের উপর। যদি কংগ্রেস ভাল ফল করে , তা হলে আরও দল সঙ্গে আসবে। যদি না করে, তা হলে যারা আছে, তারাও চলে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!