একডজন সাব-কমিটি গঠন করছে বিএনপি

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের দেড় বছর পর বিষয়ভিত্তিক সাব-কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। ২০১৬ সালের ১৯শে মার্চ অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে এসব সাব- কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। জাতীয় সংসদের সংসদীয় কমিটির আদলটি বিবেচনায় রেখেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কাউন্সিল। দলের গঠনতন্ত্রে পরিবর্তন এনে সংযুক্ত করা হয়েছিল সাব-কমিটির বিষয়টি। দেড় বছর পর প্রাথমিক পর্যায়ে ১২টি সাব-কমিটি গঠনের উদ্যোগ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ১২টি কমিটির মধ্যে ৮টি কমিটির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যানের নাম চূড়ান্ত করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। বাকিগুলোও আগামী সপ্তাহের মধ্যে চূড়ান্ত হবে। তবে কমিটিগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্তদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে কিছুটা সময় নিতে পারে বিএনপি। প্রাথমিক পর্যায়ের ১২টি কমিটির নামগুলো চেয়ারপারসন অনুমোদন করার পর তা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হতে পারে। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতা জানান, কাউন্সিল অনুমোদিত বিষয়ভিত্তিক সাব-কমিটিগুলো গঠনের মূল দায়িত্ব পালন করছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ। বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা জানান, সাব-কমিটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারদর্শী, অভিজ্ঞ, বিশেষজ্ঞদের স্থান দেয়া হবে। আবার যে সব যোগ্য নেতা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাননি তাদেরও জায়গা দেয়া হবে এ কমিটিতে। তবে যারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন তাদের নিরুৎসাহিত করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, প্রতিটি সাব-কমিটি হবে ১০ সদস্যবিশিষ্ট। কমিটির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান চূড়ান্ত করবে দল। বাকি ৮ সদস্য নির্বাচন করবেন কমিটির চেয়ারম্যান। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যোগ্য ব্যক্তিকে সে কমিটিতে যুক্ত করার জন্য দলের পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হবে। কমিটিতে চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি পদগুলো সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক পর্যায়ে গঠিত ১২টি কমিটির মধ্যে তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন মাহমুদা হাবিবা। এ কমিটিতে কো- চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া মাহবুবুর রহমান বর্তমানে একটি কোর্সের জন্য জাপানে অবস্থান করছেন। স্থানীয় সরকার বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পেয়েছেন জাতীয় ছাত্র ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি আহাদ আহমেদ। হারুন অর রশিদকে করা হয়েছে নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশন বিষয়ক চেয়ারম্যান। মানবাধিকার বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাচ্ছেন যথাক্রমে- বিএনপির মুখপত্র ‘ধানের শীষ’-এর সম্পাদক ও জি নাইনের অন্যতম সমন্বয়ক ডা. শাখাওয়াত হোসেন সায়ন্ত ও ব্যারিস্টার এজাজ আহমেদ। বন, পরিবেশ ও পানিসম্পদ বিষয়ক কমিটিতে চেয়ারম্যান ও কো- চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাচ্ছেন যথাক্রমে- ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম ও ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন। টেলিকমিউনিকেশন বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান হচ্ছেন রিয়াদ হাসনাইন। সূত্র জানায়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাচ্ছেন যথাক্রমে- মেজর (অব.) ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন ও ব্যারিস্টার তাসমিয়া রহমান। ইঞ্জিনিয়ার মিয়া মোহাম্মদ কাইয়ুম যোগাযোগবিষয়ক কমিটি, ইঞ্জিনিয়ার মাসুদ রানা নৌ-পরিবহন ও নৌ- যোগাযোগ কমিটি, ড. মুহিত ক্ষুদ্র ঋণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক কমিটি, রুবায়েত জামিল তথ্য প্রযুক্তিবিষয়ক কমিটি এবং ইঞ্জিনিয়ার রেজাউর রহমান স্বপন শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাচ্ছেন। তবে বেশ কয়েকটি কমিটিতে চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান হিসেবে এসব নাম প্রস্তাব হলেও প্রয়োজনে পরিবর্তন হতে পারে।
বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার আগে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রাথমিক পর্যায়ের সাব-কমিটিগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। চেয়ারপারসনের নির্দেশনা অনুযায়ী কয়েকটি সাব-কমিটির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যানকে চিঠিও দেয়া হয়। বাকিদের কমিটির চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যানরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে চিঠি পাবেন। এদিকে যে সব বিষয়ভিত্তিক কমিটি ইতিমধ্যে গঠন করা হয়েছে তারা কার্যক্রমও শুরু করেছেন। এর মধ্যে গত ২৬শে অক্টোবর তথ্য প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক কমিটি ‘বিদ্যুৎ ও চালের মূল্য বৃদ্ধি এবং বিপর্যস্ত জনজীবন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভারও আয়োজন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!