কোটা বিরোধী আন্দোলন ও তারুণ্য

কোটা বিরোধী আন্দোলন ও তারুণ্য
সিডনীর কথকতা-১৯
রণেশ মৈত্র (সিডনী থেকে)
সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, ঐক্য ন্যাপ

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাতি অর্জন করেছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সূতিকাগার ছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

শিক্ষা-সংস্কৃতি সত্য-সুন্দরের ও তারুণ্যের চিরকালের অঙ্গন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

পাকিস্তান আমলের তাবৎ আন্দোলন সংগ্রামের পীঠস্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

বাঙালি জাতির জাতীয়তাবোধ, তার সংস্কৃতি চেতনা, তার ঐক্য প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অপরিসীম ভূমিকা রাখার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তাবৎ গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের ও তা সুরক্ষার সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকায় ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এক কথায়, ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে স্বাধীনোত্তর বাংলাদেশে জাতির সকল গৌলবোজ্জ্বল বিজয় অর্জনে একক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বরণীয় ভূমিকা রাখায় সমগ্র জাতি এই বিশ্ব বিদ্যালয়টির ঋণী এবং এ ঋণ অপরিশোধ্য। তারাই আমাদের তারুণ্যের প্রতিনিধি যে তারুণ্যের ওপরই আবার দেশের ভবিষ্যৎ তা স্বাধীনোত্তর বাংলাদেশেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষ করে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরাচারী এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনেও অপরিশীম ভূমিকা রেখেছিল বলেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা সফল হয়েছিল- যদিও ঐ বিজয় পরবর্তীকালে আকাংখিত সাফল্যে পৌঁছাতে পারে নি। নেতৃত্বের নীতি বিচ্যৃতির ফলেই তা সম্ভব হয় নি-তারুণ্যের দোষে নয়।

অতীতের কথাও মনে পড়ে গেল। তখন আইউব মোনায়েমের যুগ। প্রকৃতই অন্ধকারের যুগ। রাজনীতি-রাজনৈতিক দল সংবিধান সবই কার্য্যত: নিষিদ্ধ। ছাত্র ইউনিয়ন – ছাত্রলীগ জাতীয় ছাত্র সংগঠনগুলিকে শায়েস্তা করার লক্ষ্যে মোনায়েম খামের সরাসরি তত্ত্বাবধানে এন.এস.এফ নামক এক সশশ্র বাহিনী গড়ে তোলা হলো। তারা অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের পথে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করলে বাদ-বাকী ছাত্র সংগঠনগুলি (ছাত্র ইউনিয়ন – ছাত্রলীগ সহ) এবং শিক্ষক সমাজ একত্রিত হয়ে তাড়িয়ে দেয়। এন. এস. এফ. এতটাই ভয় পায় যে তারা আর বিশ্ববিদ্যালয় মুখী হতে সাহস করে নি। সকলে দৃড়ভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকার ফলেই
এমন বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছিলো।

যে লক্ষ্যে এই নিবন্ধটির অবতারণা। দেশবাসী আবার বি ̄§য়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজকে এই মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে সরকারী চাকুরী কোটা সংস্কারের নামে কার্য্যত: কোটা প্রথা উচ্ছেদ করার লক্ষ্যে ব্যাপক আন্দোলন প্রত্যক্ষ করলেন। বহুকাল যাবত এমন শক্তিশালী এবং এমন ঐক্যবদ্ধ হাত আন্দোলন চোখে পড়ে নি।

এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে ঢাকার অপরাপর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল কলেজ-
বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেও। অচল হয়ে পড়ে লক্ষ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষাজীবন। শিক্ষকেরাও সমর্থন দিলেন। আন্দোলন এক বিশাল আকার ধারণ করলো। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পর অর্থাৎ প্রায় তিন দশকের মধ্যে এমন ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশে ঘটতে দেখা যায় নি। মনে হচ্ছিল যেন অভিভাবকদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশও এর প্রতি মৌন সমর্থন জানিয়েছিলেন।

কিন্তু আকস্মাৎ আন্দোলন তার অহিংস বা নিয়মতান্ত্রিক রূপ চেড়ে ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলারের বাস ভবন ঘেরাও বাসভবে অবৈধভবে ঢুকে পড়ে ভাংচাুর করে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করা এবং পেলে হয়তো তাঁকে দৈহিক নির্য্যতনও চরমভাবে করা হতো তাঁকে মেরে ফেলার লক্ষ্য ছিল বলেও অনেকে মনে করেন।

এখানেই আন্দোলনটির অযৌ৩িক ও ক্ষতিকর উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যটি ধরা পড়ে। কারণ কোটা সংস্কারের দাবীটি আসলে সর্বাংশে বেকারত্ব দূর করার দাবী। দেশে যে পরিমাণে বেকারের সংখ্য দ্রুত হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে তাতে তরুণ-তরুণীদের মনে ব্যাপকভাবে ক্ষোভ জমে ওঠা অত্যন্ত স্বাভাবিক। তবে আন্দোলনকারীরাও প্রকাশ্যে ঐ আন্দোলনেরে উদ্যোক্তারা যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সেই হেতু নিশ্চিতভাবে ধরে নেওয়া যায়। যে শিক্ষিত বেকারদের এ আন্দোলনের লক্ষ্য ছিল শিক্ষিত বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। ফলে যে পরিমাণ
সরকারী আধা সরকারী পদে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব তা যদি কোটা ছাড়াই কথিতরূপে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয় তাতে শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে কত জনকে চাকুরীর আওতায় আনা সম্ভব হবে সম্ভবত: সে ব্যাপারে তাদের ধারণা স্পষ্ট ছিল না অনুমান করি শতকরা ২৫ ভাগের বেশী নয়। ফলে শিক্ষিত মোট বেকারদের বিপুল অংশই বেকার থাকার কথা যদি তাদের দাবী পূরাপূরি মেনেও নেওয়া হয়।

আবার যদি কোটা বজায় যা তাদের (মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঘোষনায় তার অস্তিত্ব নেই কোটা প্রথা বাতিল করা হয়েছে) তখনও তো সম সংখ্যক শিক্ষিত যুবক-যুবতীই চাকুরী পেতো এবং ৭৫ ভাগ (আনুমানিক) বেকারেই কর্মসংস্থানহীন অবস্থায় থাকতো। ফলে সংখ্যাগত দিক থেকে কোন ইতর বিশেষ হতো না। আন্দোলনকারীরা যে বিভ্রান্ত তা এই বিশ্লেষণেই বুঝা যায়। আরও বুঝা যায় যে কোন মহল থেকে (হতে পারে বাইরের) কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে ভূল বুঝিয়ে বিবধান্ত করে আন্দোলনে নামিয়েছিল।

বিষয়টি আরও স্পষ্ট হলো যখন দিন কয়েকের শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন হঠাৎ করেই যেন ধ্বংসাত্মক চেহারা নিয়ে ভাইস চ্যান্সেলারের বাড়ী আক্রমণ করে ব্যাপক ভাংচুর করা হলো। এটি গভীরভাবে ভাবনার বিষয়। তবে ভাইস চ্যান্সেলার যে কোন ক্রমেই বেকারত্ব দূরীকরণের বা তা কমানোর বা বাড়ানোর ক্ষমতা রাখেন না তা একটি নাবালক বা অশিক্ষিত মানুষও জানে। তা হলে কোটা বাতিল বা সংস্কার আন্দোলন কারীরা তাদের দাবীর সাথে এটার সম্পর্ক কিভাবে আবিস্কার করলো ঐ দাবী পূরণ করতে পারে একমাত্র সরকার ভাইস চ্যান্সেলার কোন ক্রমেই তা পারেন না। তার সে এখতিয়ার নেই।

আবার এই ঘটনা নিয়ে আকস্মাৎ ছাত্রলীগ এত তৎপর হয়ে আইন হাতে তুলে নিয়ে যা যা করে বসলো তাও চরম অসহিষ্ণুতার প্রকাশ এবং তারাও দিব্যি প্রকাশ্য আইন তুলে নিলো একেবারেই নির্বিবাদে এবং নিরাপদে নিজেদের হাতে। কোন অধিকারে? কোন আইন বলে?

ছাত্রলাীগ বলে অবিহিতরা ঐ আন্দোলনকারীদের মারপিট করবে কেন? সে রকম কোন কিছু করার এখতিয়ার তো তাদের নেই কিন্তু ছাত্রলীগের ঐ সন্ত্রাসীরা অপরাধ করা সত্বেও পুলিশ নির্বিবাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তা দেখেও দিব্যি দর্শকের মত নীরব ভূমিকা পালন করলো। শুধুমাত্র ছাত্রলীগকে কিছু বললো না তাই না পুলিশ মারাত্মকভাবে নিশ্চুপ থাকলো আন্দোলনকবারীরা যখন ভাইস চ্যান্সেলারের বাসভবন আক্রমণ করলো তছনছ করলো ভাংচুর করলো তখনও।
তাহলে নিষ্ক্রিয়তা ও কর্তব্যে চরম অবহেলা প্রদর্শন করার অভিযোগে বিভাগীয় শাস্তি ছাড়াও আদালতের তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলাই বা দায়ের করা হচ্ছে না কেন?

পরবর্তী ঘটনাবলী নাটকের চেয়েও অদ্ভুত যোগ্যতায় অভিনীত হলো যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, তার নানা হল-ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ, শিক্ষকদের একাংশ-পুলিশ এবং স্বয়ং ভাইস চ্যান্সেলার নানা দৃশ্যে আমাদের মত অবোধ দর্শকদের চিত্তে আকর্ষনীয় নানা ভূমিকায় অভিনয় করে এমন সব দৃশ্য উপহার দিলেন যা অতিশয় উপভোগ।

একটি হলের একজন ছাত্রী কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের কাউকে কাউকে প্রহার ও নির্য্যতন করার অভিযোগে আকস্মাৎ ঐ নেত্রীকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বহিস্কার করলেন। গঠন করলেন তদন্ত কমিটি অভিজ্ঞ ছাত্রলীগ নেতাদের সমবায়ে। মনে হলো মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যে অর্থাৎ নিমেষেই যেন তাঁরা গোটা বিষয়টা তদন্ত করে ফেললেন – তার রিপোর্টও জমা দিলেন এবং বিদ্যুৎগতিতে ঐ রিপোর্টের ভিত্তিতে ঐ ছাত্রলীগ নেত্রী নামক মেয়েটিকে সংগঠন থেকে দেওয়া বহিস্কারাদেশটি প্রত্যাহার করে স্বপদে তাকে পুনর্বহাল করলো। ঘটনাবলী
বিষ্ময়কর দ্রুততায় অগ্রসর হতে থাকলো।

ভাইস চ্যান্সেলার? ছাত্রলীগ তাদের ঐ নেত্রীকে বহিস্কার করার সাথে সাথে ততোধিক দ্রুততার সাথে মেয়েটিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে, হল থেকে এবং ছাত্রত্ব থেকেও বহিস্কার করলেন কোন কারণ দর্শানো বা আত্মপক্ষ সমর্থনের বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়েই। আবার দেখা গেল ছাত্রলীগ যখন তাদের সাংগঠনিক বহিস্কার প্রত্যাহার করে ছাত্রটিকে স্পদে বহাল করলো-সঙ্গে সঙ্গে মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলার তাঁর প্রদত্ত আদেশটিও অধিকতর ক্ষিপ্রতার সাথে প্রত্যাহার করে মেয়েটির ছাত্রত্ব ও হলের থাকবার অধিকার দিব্যি ফিরিয়ে দিলেন।

ঘটনাগুলি যেন একটি সু-অভিনীত নাটকের কয়েকটি ঘূর্ণায়মান দৃ্শ্য। অভিনয়গুলি অত্যান্ত চমকপ্রদ এবং ইতিহাসে পূরোদস্তুর নজির কাজের দ্বারা প্রমাণ করলেন রাষ্টপতি-প্রধানমন্ত্রী-সিন্ডিকেট নন – তিনি ছাত্রলীগ কতৃক নিয়োগপ্রাপ্ত এবং তাদেরই আদেশ নির্দেশের অধীন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোটাপ্রথা সংস্কার নয় – পূরোপূরি বাতিল করলেন। আন্দোলনকারীদের দাবী ষোল আনা নয়-আঠার আনা পূরণ করলেন। আন্দোলন কারীরা খুশীতে ডগমগ। তবে বলে বসলেন ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ করতে হবে। হলো না সে অনুযায়ী গেজেট। অত:পর বলা সাত দিনের মধ্যে গেজেট গড়ে তোলা হবে। তাও হলো না। তারপরে আর তেমন উচ্চ বাচ্য বেশ কিছুদিন যাবতই শুনা যাচ্ছে না। নেপথ্যে কি ঘটছে জানি না।

তবে যে বিষয়টি জেনে বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন বোধ করছি তা হলো “আমরা রাজাকারের সন্তান” বা “আমরা রাজাকার” এমন ব্যানার নিয়ে আন্দোলনকারী হিসেবে প্রকাশ্যে মিছিল সমাবেশে অংশ গ্রহণ। এরা কি কবে ঠাঁই পেলো? কি করে নিরাপদে থাকলো? আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে যাঁরা ছিলেন তাঁর যদি তাদের বিরোধী হন তবে তাড়িয়ে দিলেন না রাজাকার বলে ‘গৌরব’ বোধ করা দেশের ঐ শক্তিদেরকে? এর দ্বারাই কি প্রমানিক হয় না যে মূল উদ্দেশ্য তাদের ছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিল করানো। বাদ-বাকীদের বিষয় তাদের কাছে আদৌ প্রধান
না। কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা বাতিলের ফলে রাজাকারের সন্তানদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে পারে।

এরা প্রকাশ্যে বিচরণ ও ব্যানার নিয়ে “আন্দোলন” করতে পারার সাথে নতুন করে হেফাজতে ইসলামের দাবী ১৩ দফা পুনরায় সম্পধতি ঊর্ধে তুলে ধরার ব্যাপারটা কি আকিস্মিক? কাকতালীয় না কি যোগ সঞ্জিস পূর্ণ?

ব্যাপারটা ভালোভাবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাব। সঙ্গে সঙ্গে বলতে চাই এহেন পরিস্থিতিতে অন্ত: আগামী ২০ বছরের জন্য সকল কোটা বহাল রাখাটাই সঙ্গত। মুক্তিযোদ্ধা ও নারীদের কোটাসহ।

সার্বিক আলোচনার ভিত্তিতে এই মনোভাব গ্রহণ করা আদৌ যাবে না যে আমাদের তরুণ-তরুনীরা রাজাকারদের নেতৃত্বে চলছে।

তাদের স্বত: স্ফুর্ততা লক্ষ্য করা গেছে।

এখন প্রয়োজন তাদের জবাবদিহিতা। তাই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সকল কলেজে অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিয়ে ছাত্র সমাজের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা ও তাদের জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প দেখিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!