গণভবনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দেখে ‘কনসেনট্রেশন’ ঠিক ছিল না নুরের?

অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণভবনে ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীদের দেখে তার ‘কনসেনট্রেশন’ ঠিক ছিল না।

রবিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি ডাকসুর পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান।

স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ডাকসুর পুনর্নির্বাচনের দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের এ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেয়।

গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে গণভবনে গিয়েছিলেন ডাকসু ও হল সংসদের নির্বাচিত নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হক নুর বলেন, “আমরা প্রথম শুনেছিলাম গণভবনে শুধু ডাকসু এবং হল সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা যাবেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত। তাদের দেখে আমার নিজের অস্বস্তিবোধ হয়েছে। আপনারা জানেন, স্বাভাবিকভাবে মানুষের একবার ‘কনসেনট্রেশন’ নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে মানুষের আর কথা বলার মুড থাকে না। তাই আমি সেখানে (গণভবনে) অনেক কথা বলতে পারিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে আমরা সেখানে গিয়েছি। কারণ, তিনি রাষ্ট্রের সবোর্চ্চ নির্বাহী ব্যক্তি। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম স্বাধীনভাবে পরিচালনা করার সেই এখতিয়ার রয়েছে। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পুনর্নির্বাচন দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচনটা হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়, এটা সরকারের কোনও বিষয় না। প্রধানমন্ত্রী কারচুপি ও অনিয়মের নির্বাচনে যারা জয়ী হয়েছেন তাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমাদের শ্রদ্ধাবোধ থেকে আমরা সেখানে গিয়েছি। সেখানে ডাকসুর বাইরেও আবাসন সংকট এবং শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। আমি শুধু প্রধানমন্ত্রীর নজরে এনেছি যে এই নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সেটির সমাধান চাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জায়গা থেকে তিনি যেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন।’

সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে ডাকসুর ভিপি বলেন, ‘আমাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করবেন না। আমি যেটা আগেই বলেছি যে এত অনিয়ম-কারচুপির পরেও ভিপি ও সমাজসেবা পদে আমরা জয়ী হয়েছি। সে জায়গা থেকে বলেছিলাম, অন্তত এই দুটি পদ বাদে বাকি পদগুলোতে নির্বাচন দিতে। তবে, এটা ছিল আমার ব্যক্তিগত বক্তব্য। কিন্তু আমরা দেখেছি শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে সব পদে পুনর্নির্বাচন। সে জায়গা থেকেই আমিও তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বলছি, পুনর্নির্বাচন দেওয়া হোক।’

এর আগে সকালে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। সেখান থেকে তারা পাঁচ দফা দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো, জালিয়াতির ডাকসু নির্বাচন বাতিল, পুনঃতফসিল ঘোষণা, ব্যর্থ ভিসির পদত্যাগ, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হামলাকারী সন্ত্রাসীদের শাস্তি প্রদান।

প্রগতিশীল ছাত্রজোট আগামীকাল সোমবার (১৮ মার্চ) সকালে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এদিন সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জমায়েত করবে তারা। এরপর উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে। তাদের এ দাবির সঙ্গে বাকি চারটি প্যানেল সম্মতি জানিয়েছে এবং দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এক ও অভিন্ন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!