নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় কারাগারে

আইন-আদালত ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম প্রধান আসামি নুর উদ্দিন। রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে আদালতের কাছে তাঁর জবানবন্দি দেওয়া শেষ হয়। এখন জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেছেন এই মামলার আরেক আসামি শাহাদাত হোসেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা  জানিয়েছেন, নুর উদ্দিন ঘটনার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। নুর বলেছেন, এপ্রিলের ১ ও ৩ তারিখ কারাগারে আটক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেখানেই নুসরাতের গায়ে আগুন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। অধ্যক্ষের পরামর্শেই নুসরাতের গায়ে আগুন ধরানো হয়। রোববার বিকেল সাড়ে তিনটায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া শুরু করেন আসামি নুর উদ্দিন। রাত সাড়ে নয়টায় তাঁর জবানবন্দি নেওয়া শেষ হয়।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নুর উদ্দিনের পর মামলার আরেক আসামি শাহাদাত হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু হয়। এই প্রতিবেদন লেখ পর্যন্ত শাহাদাত জবানবন্দি দিচ্ছিলেন। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানিয়েছে, নুরের বক্তব্যের সমর্থনেই জবানবন্দি দিচ্ছেন শাহাদাত।

রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে এই দুই আসামিকে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম জাকির হোসাইনের আদালতে হাজির করা হয়। সেখানে পর্যায়ক্রমে দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিচ্ছেন।

৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষার্থী রাফিকে সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় করা মামলার তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তদন্তকারী সংস্থা বলেছে, দুটি কারণে নুসরাতকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক. শ্লীলতাহানির মামলা করে অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করিয়ে নুসরাত আলেম সমাজকে ‘হেয়’ করেছেন। দুই. আসামি শাহাদাত নুসরাতকে বারবার প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু নুসরাত তা গ্রহণ না করায় শাহাদাতও হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পিবিআই বলছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এঁদের মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ আটজন গ্রেপ্তার রয়েছেন। বাকি আরও অনেকের নাম উঠে আসতে পারে। তদন্তের কারণে কয়েকজনের নাম এখনই বলা হবে না। সূত্র-প্রথম আলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!