সাদিক এর গল্প- নেফারতিতি

নেফারতিতি

———- সাদিক

‘হাত বাড়িয়ে ছুয়ে দিতে তুমি পারো না
একা চাঁদ চাঁদের কঙ্কাল
হেটে যেতে যেতে ভুল পথে তুমি থামো না
খুজো না উদার আকাশ
কিছু সূর্যবন্দী মেঘ
কিছু বিস্মরনের নদী
বয়ে যায় তোমার আত্মার কাছাকাছি
নেফারতিতি——’

শাহবাগের যাত্রি ছাউনিতে বসে থাকতে থাকতে হেডফোনে মেঘদলের গান শুনছি  ।অপেক্ষা করছি নেফারতিতি আসার জন্য । না পাঠক ,এই নেফারতিতি খ্রীষ্টপূর্ব ১৩৭০ সালের অপূর্ব সুন্দরী মিশরীয় রমনী কিংবা রাজা আখেনাটেনের রানী কিংবা প্রথন মহিলা ফারাও ,কোনটাই নয় । ,এই নেফারতিতি একবিংশ শতাব্দীর একজন সাধারন মানুষ । এর আগে আমাদের ফোনে শত শত বার কথা হয়েছে , কিন্তু মুখোমুখি দেখা এই প্রথম ।আজ ও আমাকে বলেছিল শাহবাগে আসতে । কথামত আমি চলে এসেছি ।নেফারতিতি বাসে করে আসছে মতিঝিলের দিক থেকে ।অনন্তকাল ধরে আমি বসে আছি ওখানেই । শাহবাগের রাস্তা পুলিশ বন্ধ করে দিল এক সময় । প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কোন ভি আই পি এই রাস্তা ধরে বিশাল গাড়ি বহর নিয়ে যাবেন একটু পরে । তার নিরাপত্তার জন্য অনেক আগে থেকেই সাধারন ট্রাফিক বন্ধ করে দেওয়া হল । এমনকি পথচারীরা রাস্তা পার ও হতে পারবে না । আধা ঘন্টার বেশি এই অবস্থা চলল । এক সময় প্রধানমন্ত্রী আসল । সামনে পিছনে অনেক গুলা  র‌্যাব পুলিশের গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে তাকে পাহারা দিয়ে সন্তর্পনে নিয়ে চলল । তারপরে পুলিশ রাস্তা খুলে দিল । কিছুক্ষনের মধ্যেই আমার প্রধানমন্ত্রী (নাকি রানী!) আসলেন । পাবলিক একটা বাসে করে জনগনের সাথে মিশে রাস্তার স্বাভাবিক জ্যাম এবং অস্বাভাবিক জ্যাম (ভি আই পি দের জন্য রাস্তা বন্ধ) কে সহ্য করে চলে আসলেন আমি যেখানে বলেছিলাম ঠিক সেই জায়গায় ।

আমি চুপচাপ বসে ছিলাম যাত্রী ছাউনিতে ।কিছুটা নার্ভাস । হঠাৎ একটা মেয়ে এসে ডাক দিল ,সামনে আয় । বলেই সে এগিয়ে গেল ,আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই । আজব ! এই মেয়ে প্রথম এক পলক দেখেই এত মানুষের ভীড়ে আমাকে আইডেন্টিফাই করে ফেলল ? এত কনফিডেন্টলি ?

প্রথম দেখায় যে জিনিসটা আমার চোখে বিশেশভাবে পড়েছিল তা হল ওর সিম্পলিসিটি । কোন বাড়তি সাজগোজ নাই । খুব ই নর্মাল একটা সালোয়ার কামিজ পরনে ছিল তার ।তবুও সেই অবস্থায়ই তাকে অপরুপ লাগছিল ।শেষ বিকালে কোমল একটা আলো বের হয় ,যে আলোয় সব মেয়েকেই রূপবতী লাগে । হুমায়ূন আহমেদ এই আলোর নাম দিয়েছিলেন ‘কন্যা সুন্দর আলো’ । শাহবাগ ঘুরে ছবির হাটের বিখ্যাত ভাজাপোড়া খেতে খেতে দেখছিলাম তার গালে কন্যা সুন্দর রোদের আসা যাওয়া । মনে হচ্ছিল , এই মেয়েটার দিকে এভাবে তাকিয়ে তাকিয়েই সারাটা জীবন কাটিয়ে দেওয়া অসম্ভব কোন কাজ না ।

সেই  বিকালের ‘কন্যা সুন্দর আলোয়’ আমরা খুব কম সময়ই ছিলাম একে অপরের সাথে ।নেফারতিতি কে চলে যেতে হয়েছিল কুইক । তবে এর পরে আমাদের ঘোরাঘুরি হয়েছে অসংখ্য । অধিকাংশ দিনেই দুপুরের পরে ও তার ক্লাস শেষ করে আমার ক্যাম্পাসে আসত বা আমি আসতাম নিরপেক্ষ ভেন্যু শাহবাগে  ।দুপুর গড়িয়ে বিকেল হত । কন্যা সুন্দর আলো মিলিয়ে একসময় আসত কন্যা সুন্দর অন্ধকার । আমাদের আড্ডা আর শেষ হত না । বুয়েট-পলাশী-ফুলার রোড-টিএসসি-চারুকলা-ছবির হাট-পাবলিক লাইব্রেরি-রমনা পার্ক এর প্রতিটি বর্গইঞ্চি জায়গা আমাদের ভীষন পরিচিত হয়ে উঠেছিল ।আমি ভার্সিটির হলেই থাকতাম ।তাই কিছুটা ফ্রিডম ছিল । তবে নেফারতিতি থাকত ফ্যামিলির সাথেই ।তাই সন্ধ্যার আগেই তাকে বাসায় চলে যেতে হত –যদিও মাঝে মাঝেই তার ব্যাত্যায় ঘটত ।বোধহয়  কন্যা সুন্দর আলোয় একসাথে হাত ধরাধরি করে রিক্সায় ঘোরার আনন্দের তুলনায় বাসায় বকুনি খাওয়ার রিস্ক খুব সামান্যই ।

প্রথম দেখার ওই ঘটনার পরে আমাদের বিচ্ছেদ ছিল প্রায় মাসখানেকের । নেফারতিতির এই সময়ে অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন হয় । ও যখন হসপিটালের বেডে ,আমার মত রসকষহীন ছেলেও কিভাবে যেন তখন কাহলিল জিবরানের ‘দ্য পেইন’ কবিতাটি নিজের মত করে অনুবাদ করে ফেলেছিলাম । অপারেশনের আগের রাতে ওই কবিতা পেয়ে ও অনেক খুশি হয়েছিল । সেই ছিল আমার প্রথম কোন একটা সাহিত্যকর্ম । পরবর্তীকালে আর কখনোই এইরকম রোমান্টিক কিছু ক্রিয়েট করতে পারিনি । ওর জন্মদিনে বা অন্যান্য বিশেষ দিন গুলাতে অনেক সময়েই নিজের স্কিল এর সাহায্যে কিছু একটা করে ওকে গিফট করেছি । (যেমন-যেমন ওর ছবি নিয়ে স্লাইড বানানো , সি প্রোগ্রামিং এর সাহায্যে আই লাভ ইউ বা অন্য কোন কিছু আউটপুট বের করা ,অটোক্যাডের সাহায্যে ওর নাম বা অন্য কিছু ডিজাইন করা কিংবা এইচটিএমএল দিয়ে ওর নামের ওয়েবপেজ ডিজাইন করা) । কিন্তু আর কখনোই সাহিত্যিক কিছু তৈরি করা হয়ে ওঠেনি ।

আমাদের প্রথম দেখা হয়েছিল ইন্টারনেটে ,ফেসবুকের মাধ্যমে । খুব বেশি নাটকীয় কোন প্রেম কাহিনী ছিল না আমাদের । নরমালি বর্তমান সময়ের আরো হাজারটা রিলেশনশিপের মত করেই আমাদের টা এগিয়েছে । প্রথমে অল্প অল্প চ্যাট । তারপরে বেশি বেশি চ্যাট ,তারপরে ফোনে আলাপ ,সবশেষে রিয়েল লাইফে দেখা ।
আমাদের পরিচয়ের প্রথম কয়েক মাস আমরা ফ্রেন্ড ই ছিলাম । ফ্রেন্ড শিপ ছাড়া কোন ধরনের রোমান্টিক রিলেশনে যাওয়ার চিন্তা তেমন স্ট্রংলি কখনো ভাবি নি ।রাজনীতি,সমাজ,ধর্ম,সাহিত্য,মিউজিক-হাজারো বিষয় নিয়ে আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা গল্প করতাম । আমার টিভি দেখার স্কোপ ছিল না । ও বাসায় বসে ভাল ভাল টিভি প্রোগ্রাম গুলো দেখে (যেমন আমির খানের সত্যমেভ জয়তে কিংবা ডিসকভারি বা হিস্ট্রি চ্যানেলের প্রোগ্রামগুলো) আমাকে জানাত এবং আমার সাথে আলোচনা করত । ওর সাথে আলোচনা করে অনেক কিছু উপলব্ধি করলাম । পৃথিবিতে মানুষ ২ প্রকার-ছেলে আর মেয়ে । আমি ছোটবেলা থেকেই আমার পৃথিবী দেখেছি বা এনালাইসিস করেছি ছেলের চোখ দিয়ে ,ছেলের মানসিকতা অনুযায়ী । কিন্তু এটা অবস্যই পূর্নাংগ বিশ্লেষন না ,যতক্ষন না পর্যন্ত আমি সেই একই জিনিস একজন মেয়ের চোখ দিয়ে দেখছি । ছেলে আর মেয়ে-২ জনের মতামত মিলেই গড়ে উঠতে পারে যে কোন বিষয়ের সঠিক এনালাইসিস ।

পরিচয়ের কয়েক মাস পরে নেফারতিতি এক রাতে স্বপ্ন দেখল , আমরা দুই জন চিড়িয়াখানায় ঘুরতে গেছি ।বাঘের খাচার সামনে দাঁড়িয়ে আমরা রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখছিলাম । হঠাৎ সেখানে বাঘ খাচার শিক এর ফাকে তার হাত বাড়িয়ে দিয়ে কিভাবে যেন আমার নাগাল পেয়ে যায় , এবং আমাকে টেনে ভিতরে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে ।নেফারতিতি প্রানপন চেষ্টায় আমাকে ধরে রাখছিল এবং চিৎকার করছিল । ওর চিৎকারে ওর ফ্যামিলি মেম্বারদের ঘুম ভেঙ্গে যায় এবং তারা ওকে ডেকে তোলে ।ওর চিৎকারের মাঝে  ‘সাদিক,সাদিক’ শব্দটা ওর ফ্যামিলি মেম্বার রা ধরে ফেলে ,যদিও সেটা নিয়ে তেমন কন সমস্যা হয়নি । তবে এই স্বপ্নের কথা আমি শোনার পরে বেশ অবাক হয়েছিলাম । একটা মানুষ আমাকে নিয়ে এত চিন্তা করে যে তার স্বপ্নের ভেতরেও আমি হাজির হচ্ছি !

এর কিছুদিন পরেই এক বিকালে আমার পাগলীটা হঠাৎ করে বেদম পাগলামি শুরু করল । আমাকে প্রপোজ করল । আমি সময় চাইলাম । ও নাছোড়বান্দা ,এখনই কিছু একটা বলে দিতে হবে । আমিও হ্যা না কিছু বলছিলাম না । ঘন্টাখানেক এইভাবে চলার পরে ও বলল,দোস্ত,আজ পয়লা এপ্রিল ,তোকে এপ্রিল ফুলের মদন বানালাম । ছোটখাটো একটা ছ্যাকা খেয়েছিলাম সেদিন । তবে কিছুদিন পরে আমিও একই রকম ভাবে ওর সাথে আরেকটা নাটক করছিলাম প্রপোজের । অবশ্য আমি বেশিক্ষন নাটক চালাতে পারিনি ।খুব দ্রুত আমি স্বীকার করলাম,দোস্ত ,ফান করলাম তোর সাথে । বেশ কিছুদিন এভাবেই আমাদের লুকোচুরি চলছিল । একদিন থাকতে না পেরে আমি ই লুকোচুরির অবসান ঘটাই । সকল ফান বাদ দিয়ে সিরিয়াস হই ।রেসপন্স ও পাই নেফারতিতির কাছ থেকে । ফেসবুকে রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস আপডেট করে নিজেদেরকে সবার মাঝে স্বীকৃতি দেই ।

২০১২ সালের মাঝামাঝি এই যে হাটিহাটি পা পা করে দুই জোড়া পা এর একসাথে পথ চলা শুরু হল ,গত আড়াই বছর হাজার হাজার কিলোমিটার ট্রাভেল করেও এখনো ক্লান্ত হইনি আমরা ।কোন দিন হবো ও না।  প্রথম দিকে আমরা অনেক ঝগড়া করতাম । কারনে –অকারনে ,তুচ্ছ বিষয় নিয়ে । যতই দিন গেল আমরা একে অপরকে বুঝলাম আরো বেশি করে । ঝগড়ার পরিমান ও আস্তে আস্তে কমে গেল । তবে এই ঝগড়াঝাটির মেকানিজন বুঝতে আমাদের লেগে গেছে দীর্ঘ সময় । এর মাঝে কিছু ছোটখাটো এক্সিডেন্ট ও হয়েছে ।একটা ঘটনা শেয়ার করতে চাই ।

একাডেমিকালি , নেফারতিতি ছিল আমার এক বছরের জুনিয়র । আমার ভার্সিটির সেশন জ্যামের জন্য আমি পিছিয়ে যাচ্ছিলাম ,ও এগিয়ে যাচ্ছিল । লেখাপড়া ছাড়াও অন্য কিছু করার তাড়না অনুভব করছিলাম । জয়েন করলাম একটি অনলাইন নিউজপেপারে । পরবর্তীতে নেফারতিতিকেও সেখানে আনলাম । অনলাইন নিউজপেপারের অফিসেই  আমাদের খিটিমিটি লেগে যেত প্রায়ই ।অফিসের সবার চোখেই অল্প স্বল্প ব্যাপারটা ধরা পড়ল । নিউজপেপারের সবার সাথেই ততদিনে আমাদের ভাল খাতির হয়ে গেছে । সবাই আমাদের খুব স্নেহ করেন (আমরাই ছিলাম বয়সে সবচেয়ে জুনিয়র) । সবাই আমাদের সমস্যা সল্ভ করতে আন্তরিকতা দেখালেন । সবচেয়ে বেশি আন্তরিক ছিলেন ,ধরি তার নাম তপন ,আমাদের একজন বস । ব্যক্তি জীবনে তিনি একটি সম্পর্কে আছেন বলেই জানতাম । তার উপর বয়সে তিনি ছিলেন আমাদের চেয়ে অনেক বড় । আমাদের সাথে তার ধর্ম ও ছিল আলাদা । ধৈর্য ধরে তিনি আমাদের কথা শুনলেন আলাদাভাবে । আমাদের ঝগড়া বন্ধ করতে বললেন ।আমরা সরল বিশ্বাসে তাকে একজন উপকারী সাহায্যকারী বন্ধু কিংবা ‘মুরব্বী’ বলেই ভেবেছিলাম ।

আমাদের সাথে নিয়ে তিনি একসাথে এবং আলাদা আলাদা সেশন করলেন । তাকে বিশ্বাস করে আমাদের সকল কথা বলেছিলাম । তার সাথে এতই আন্তরিক হয়ে গিয়েছিলাম , আমার মনে আছে ,কথা বলার এক পর্যায়ে আমি তার কাছে কেদেও দিয়েছিলাম ।নেফারতিতির ক্ষেত্রেও একই রকম ঘটনা ঘটেছিল । আর তপন ভাই এই আন্তরকতাকে কি বুঝেছিলেন তা তিনিই জানেন ।

তপন ভাই আমাদেরকে অনেক কথা বললেন । বাস্তবতা সম্পর্কে চিন্তা করতে বললেন ।ইনডাইরেক্টলি আমাদের উপদেশ  দিলেন আলাদা হয়ে যেতে ।একজনের কাছে অন্যজন সম্পর্কে সত্যমিথ্যা মিশিয়ে অনেক কথা বলে অন্যের সম্পর্কে নেগেটিভ ধারনা তৈরি করার চেষ্টা করলেন । খুব বেশি গুরুত্ব দেইনি তার কথায় আমরা কেউই । নিজেদের মত ছিলাম আমরা । মাঝে মাঝেই ঝগড়া হচ্ছিল । আবার মিলে যাচ্ছিলাম ।

এ সময় নেফারতিতির বাসায় অজ্ঞাত কেউ একজন ফোন করে নেফারতিতির মার সাথে যোগাযোগ করে এবং আমার সম্পর্কে অনেক আজেবাজে কথা বলে । নেফারতিতি কে যেকোনভাবেই হোক সাদিকের খপ্পর থেকে উদ্ধার করা উচিত,না হলে ওর সামনে অনেক বিপদ-এই কথা বলল । নেফারতিতির মা’র সাথে আমার পরিচয় খুব সামান্যই ,কিন্তু উনি এই সময়ে অনেক হেল্প করেছেন ।উনি ওই লোকটার কোন কথাই শোনেনি ,তাকে ডিজকারেজ করেছেন ।

কয়েকদিন পরে পুরো ব্যাপারটা ক্লিয়ার হয় আমাদের কাছে । খেয়াল করলাম তপন সাহেব তার ফেসবুক একাউন্ট থেকে নেফারতিতি কে নিয়ে একের পর এক কবিতা ,স্ট্যাটাস,গল্প লিখে যাচ্ছে । এমনকি আগামী বইমেলায় তাকে নিয়ে বই পাবলিশ করার ঘোষনাও দিয়েছে । নেফারতিতির আম্মুর কাছ থেকে নাম না জানা সেই লোকের ফোন নাম্বার এনে মিলিয়ে দেখা হল ,এটা তপন সাহেবের ই নাম্বার ।এমনকি একবার ওই অনলাইন নিউজপেপারের টিএন্ডটি থেকেও ফোন দেওয়া হয়েছিল নেফারতিতির আম্মুকে । কেচো খুড়তে গিয়ে দেখতে পেলাম অজগর । তপন সাহেব তার ক্লোজ ফ্রেন্ড দের কে জানিয়েছেন নেফারতিতি আর সে এখন একটা রিলেশনশিপে আছে ।তারা খুব শিঘ্রই বিয়ে করতে যাচ্ছে ।দুজনের আলাদা ধর্ম নিয়েও কি করা যায় সেই চিন্তাভাবনাও করে ফেলেছে ।

এই লোকগুলোকে আমি এবং নেফারতিতি দুই জনেই অনেক বিশ্বাস করে ফেলেছিলাম । এমন কিছু হতে পারে কখনো চিন্তাও করিনি । ইভেন তপন ভাইএর ফেসবুকের কবিতাগুলার অর্থও আমি কয়েকদিন পরে বুঝেছিলাম । সব কিছু জানা-বোঝার পরে আমি অনলাইন নিউজপেপারের অন্য সবাইকে বিষয়টা জানালাম । অবশ্য খুব সামান্য একজন রিপর্টারের কথায় নিউজপেপারের সম্পাদকের কিছুই হওয়ার কথা না ! নেফারতিতির কথা কেউ শুনল না ।আমাদেরকে মিথ্যাবাদি বানিয়ে বহিষ্কার করা হল ওখান থেকে । কিছু টাকা পয়সাও মার গেল । আর কয়েকটা দিন আমাদের ওপর ,বিশেষ করে নেফারতিতির ওপর প্রচন্ড মানসিক চাপ গেল । সবকিছুই ও দৃড়তার সাথে ফেস করেছে রানী নেফারতিতির মত করেই ।

এখন আমরা অনেক সুখে আছি ।ওই ঘটনা থেকে নিজেদেরকে আরো ভালভাবে বুঝতেছি ।নিজেদের ভালবাসা আরো গভীর হয়েছে । তবে ওই কয়েকদিনে যা অভিজ্ঞতা লাভ করলাম,তার ফলে মানুষের প্রতি বিশ্বাস অনেক কমে গেছে ।ভবিষ্যৎ জীবনে চলার পথে অনেক সতর্ক ভাবে পা ফেলতে পারব ।

ভালবাসা দিবসে মৌঢির পাঠকদের জানাই শুভেচ্ছা ।আমাদের জন্য দোয়া করবেন ।আমি যেন আমার নেফারতিতিকে নিয়ে আমাদের ছোট্ট রাজত্বে সারাজীবন রাজত্ব চালিয়ে যেতে পারি সুখে শান্তিতে ।  পাঠকদের বলতে চাই ,নিজেদের মধ্যে ঝগড়া হলে নিজেরাই মিটিয়ে ফেলুন । থার্ড পার্সন এর সাহায্য না চাওয়াই ভাল । কখনো যদি এমন কারো সাহায্য চাইতেই হয় , তার সম্পর্কে আগে ভালভাবে ভেবে নিবেন । ভুল ব্যক্তিকে বেছে নিলে আমার মত বিপদে পড়ার সম্ভাবনা থাকবে ।

সাদিক/বুয়েট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!