পঞ্চগড়ে পূর্ব দ্বন্দ্বের জেরে মারামারিঃ পুত্রকে বাঁচাতে গিয়ে পিতার মৃত্যু

নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নে গত ১৫ দিন আগের একটি ক্রিকেট খেলা নিয়ে বিবদমান দুটি গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরে বৃহস্পতিবার টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে মারামারি হয় এতে টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ফরিদুল ইসলাম নিহত হয়।

নিহত ফরিদুল জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের রামগঞ্জ বিলাসী মেলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওই এলাকার জোয়াত আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, টেপ্রীগঞ্জ বঙ্গমাতা স্কুলে গত ১৫ দিন আগে ক্রিকেট খেলা নিয়ে গোলাম রব্বানীর সাথে কামালের কথা কাটাকাটি হয়েছিল। স্থানীয় ভাবে এর মিমাংসাও হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কামাল স্থানীয় শিক্ষক স্বত্ববানের নিকট প্রাইভেট পড়ছিল, তা জানতে পেরে গোলাম রব্বানী শিক্ষকের বাসায় গিয়ে কামালকে মারতে চেষ্টা করলে শিক্ষক তাদের মারামারি নিরসন করে দেয়।

পরে দুপুর প্রায় ১২ টার দিকে গোলাম রব্বানী ও তার পিতা ফরিদুল ইসলাম টেপ্রীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে অবস্থিত ভূমি অফিসে খাজনা দিতে আসে। তাদের আসার খবর শুনে কামালের নেতৃত্বে ১০/১৫ জনের একটি গ্রুপ ভূমি অফিসে গোলাম রব্বানীকে মারপিট করতে শুরু করে। ছেলেকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসায় গোলাম রব্বানীর পিতা ফরিদুল ইসলামকে এলোপাথারীভাবে আঘাত করে। এতে ফরিদুল জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাকে দ্রুত দেবীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।

দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. অর্জুন সাহা জানান, ‘রোগীর বর্ণনা শুনে মারামারির স্বাভাবিক যে চিকিৎসা দেওয়া হয় তা দেয়া হয়েছিল। ফরিদুল ইসলামের বাহ্যিক কোনো আঘাতের চিহৃ ছিল না। এজন্য আমরা রোগীকে ইসিজি ও এক্সরে করার জন্য বলেছিলাম। চিকিৎসা শুরুর আধা ঘন্টার মধ্যে রোগীর মৃত্যু হয়। তবে ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাচ্ছে না।’

টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সরকার জানান, ‘খাজনা দিতে ভূমি অফিসে বাবা ছেলে আসলে পূর্বের ঝগড়া বিবাদের জের ধরে কামাল হোসেনসহ ২৫/৩০ জনের একদল যুবক ফরিদুলের ছেলেকে মারপিট শুরু করে। এ সময় তার বাবা মারপিট ঠেকাতে গেলে তাকেও বেধড়ক মারপিট করে। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ভর্তির আধাঘন্টা পর ফরিদুল মারা যায়।

দেবীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ রবিউল হাসান সরকার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পুলিশ দেবীগঞ্জ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করেছে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন শেষে ময়না তদন্তের জন্য পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাতেই একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাওকে আটক করা সম্ভব হয় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!