নাসিরপুরে সেদিন অল্পের জন্যে প্রাণে বেঁচেছিলেন পুলিশ সুপার শাহ জালাল

 

 

বিশেষ প্রিতিনিধি  ।  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

২৯ মার্চ মঙ্গলবার ভোর রাতে মৌলভীবাজার শহরের বড়হাটের সন্দিগ্ধ জঙ্গি আস্তানাটি পুলিশ ঘিরে ফেলে। এরপর বাড়ির কেয়ারটেকারের নিকট উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাসিরপুরের সন্দিগ্ধ আরও একটি জঙ্গি আস্তানার সম্পর্কে তথ্য পায় পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালালের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন পুলিশ সদস্য এবং কেয়ারটেকারসহ প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরের নাসিরপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। ভোরের দিকে যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছেন পুলিশ সুপার তখন সঙ্গীয় ফোর্স কিছুটা পিছনে পড়ে যায়।

ইতোমধ্যে বড়হাটের ঘেরাও হওয়া জঙ্গিদের নিকট থেকে মোবাইলে খবর পেয়ে নাসিরপুরের জঙ্গিরা পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তাই তাদের পলায়ন ঠেকাতে সঙ্গীয় ফোর্সের জন্য অপেক্ষা না করে শুধুমাত্র বডিগার্ডকে নিয়ে পুলিশ সুপার জঙ্গি আস্তানার বাউন্ডারিতে ঢুকে পড়েন। তাঁকে দেখা মাত্র পলায়ন উদ্যত জঙ্গিরা বিদ্যুৎ বেগে ঘরের মধ্যে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।

পুলিশ সুপার তখন ওয়ারলেস সেটের মাধ্যমে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সদেরকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ী ঘেরাও করার নির্দেশ দেন এবং বাড়ীটি রেকি করতে থাকেন। হঠাৎ একজন জঙ্গি জানালা খুলে একটি গ্রেনেড হাতে জানালায় এসে দাঁড়ায় এবং পুলিশ সুপার শাহ জালালের অবস্থান লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছুঁড়ে মারে।

পুলিশ সুপারের বডিগার্ড আগে থেকে বিষয়টি লক্ষ্য করে উচ্চস্বরে চিৎকার দিয়ে সবেগে ধাক্কা দিয়ে তাঁকে দেয়ালের আড়ালে নিয়ে যায়। নিয়ে যেতে না যেতেই বিকট শব্দে গ্রেনেডটি বিস্ফোরিত হয়। দেয়ালের কারণে স্প্লিন্টার তাঁদের গায়ে লাগেনি। সেকেন্ডের ব্যবধানে প্রাণে বেঁচে যান পুলিশ সুপার ও তাঁর বডি গার্ড।

পরপরই সেখানে আরো ৭/৮ টি গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। অল্প সময়ের মধ্যেই অন্যান্য অফিসার ও ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাড়ীটি ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে আরো কয়েকশ অফিসার ও ফোর্স এবং সোয়াট বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে জঙ্গি আস্তানাটির নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। এই জঙ্গি আস্তানায় অবস্থানরত ০৭ জন সুইসাইডাল ভেস্ট পরে গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে আত্মহত্যা করে।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল বলেন, সেদিন অল্পের জন্য জীবন রক্ষা পেয়েছি। এ জন্য মহান আল্লাহর দরবারে অশেষ শুকরিয়া আদায় করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!