বাংলা প্রথম দিনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শরীয়তপুরের ব্যবসায়ীরা।

সৈয়দ মেহেদী হাসা, শরীয়তপুর প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

আর হাতে ১ দিন সময় বাকি আছে। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখকে উদযাপন করবে বাঙালি জাতি। বৈশাখকে ঘিরে থাকবে নানা সাংস্কৃতিক রীতিনীতি ও অনুষ্ঠান। আর এসব অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির কাজ চলছেও অবিরাম।

তবে পহেলা বৈশাখকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠান থাকলেও ব্যবসায়ীদের কাছে এর আলাদা একটি তাৎপর্য রয়েছে। কারণ নববর্ষের প্রথম দিনে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় আয়োজন করে হালখাতা অনুষ্ঠানের।

এদিনে ব্যবসায়ীরা বিগত বছরের দেনা-পাওনার হিসাব সমন্বয় করে নতুন খাতা খুলেন। পুরনো সব দেনা পরিশোধ করার জন্য ক্রেতাদের কাছে আমন্ত্রণপত্রও পাঠান। হালখাতার দিনে ক্রেতাদের মিষ্টি মুখ করান ব্যবসায়ীরা।

আর তাই পহেলা বৈশাখে হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন শরীয়তপুরের ছোট বড় বাজারের ব্যবসায়ীরা।

ববুধবার শরীয়তপুরের প্রায় সকল উপজেলায়  দেখা গেছে, পহেলা বৈশাখে হালখাতা অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির কোনো অংশে পিছিয়ে নেই ব্যবসায়ীরা। তবে মনে অস্থির ভাব নিয়ে কাজ করছেন।

এরই মধ্যে সব ক্রেতা ও অতিথিদের কাছে পোঁছে দেওয়া হয়েছে আমন্ত্রণপত্র। চলছে নিজ নিজ দোকানের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। তাই ব্যবসায়ীরা সব পণ্য নামিয়ে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করছেন দোকান। এ দিক দিয়ে  এগিয়ে আছে স্বর্ণ কারের দোকানদাররা

এছাড়া অনেক ব্যবসায়ীকে দেখা গেছে, হালখাতা উপলক্ষে বিভিন্ন রঙ দিয়ে দোকানে সাজসজ্জাও করছেন।

এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দোকান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি তারা এখনও পুরাতন খাতার সব লেনদেনের হিসাবও করছেন। কেন না বছরের প্রথম দিনে তারা নতুন খাতা দিয়ে নতুন করে ব্যবসা শুরু করবেন। তাই পহেলা বৈশাখ আসা পর্যন্ত তেমন একটা কেনাবেচা তারা এখন করছেন না। হালখাতার অনুষ্ঠানটি যেন সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ করতে পারেন সে দিকেই এখন তাদের নজর।

লাল মলাটের খাতা দিয়েই কেনো হালখাতা করা হয়, এমন প্রশ্নের জবাবে ডামুড্যা বাজারের কালাম স্টোরর মালিক আবু কালাম বেপারী বলেন, লাল রঙটিকে ব্যবসার জন্য শুভ মনে করা হয়ে থাকে।

পালং এর ব্যাবসায়ী মেসাস হাবিব ট্রের্ডাস এর পরিচালক মো. নুরুজ্জামান  বলেন, হালখাতার দিনে আসা অতিথিদের জন্য মিষ্টি ও উপহার সামগ্রীর অর্ডার করতে যাবো। আমাদের দোকানে হালখাতার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। লাল মলাটের খাতাও কেনা হয়ে গেছে।

অবশ্য অনেক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, হালখাতা প্রথাটি আগে এমন ছিল না। যখন জমিদারি প্রথা ছিল তখন প্রজাদের খাজনা দেওয়ার হিসাবে ‘পুণ্যাহ’ প্রচলিত ছিল। পহেলা বৈশাখের দিন প্রজারা নিজেদের সাধ্যমত খাজনা জমিদার বাড়িতে গিয়ে পরিশোধ করতেন। জমিদারও এ দিনে প্রজাদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। কিন্তু এখন জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ায় ‘পুণ্যাহ’ বিলুপ্ত হয়েছে। তবে ব্যবসায়ী সম্প্রদায় নববর্ষে হালখাতার আয়োজন করে আজও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!