বিভক্তিতে বিভোর ঘাটাইলের আ’লীগ

 

 

এম.এস.এস.সৌরভ, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামীলীগ বিভক্তিতে বিভোর। স্থানীয় সাংসদ আমানুর রহমান খান (রানা), উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান (সামু), উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আরিফ হোসেন, সাবেক যুগ্ন-আহবায়ক শহিদুল ইসলাম খান (হেস্টিং) সহ অসংখ্য নেতাকর্মীরা হচ্ছে এক গ্রুপ। অপর পক্ষে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম (লেবু), পৌরমেয়র শহিদুজ্জান খান (শহিদ), যুগ্ন-আহ্বায়ক আঃ রহিম মিয়া, যুগ্ন-আহ্বায়ক ইঞ্জিঃ মাসুদুর রহমান আজাদ সহ অসংখ্য নেতাকর্মীরা এক গ্রুপ। ঘাটাইলের সাধারন মানুষ এদের কে রানা গ্রুপ এবং লেবু গ্রুপ নামেই চিনে।

একদিকে শহিদুল ইসলাম লেবু কে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। অপর দিকে উপজেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান (সামু) কে আহ্বায়ক করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়। এই দুই গ্রুপের শক্ত অবস্থানের ফলে ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামীলীগ সুবিধাজনক অবস্থানে নেই।
সুত্রমতে, ২০১২সালে তৎকালীন সাংসদ ডাঃ মতিউর রহমান ইন্তিকাল করেন। পরে উপনির্বাচনে নৌকার মনোনীত প্রার্থী হন শহিদুল ইসলাম লেবু। সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক মরহুম শামসুর রহমান খানের ভাতিজা আমানুর রহমান খান (রানা)। সেই উপনির্বাচনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন আমানুর রহমান খান রানা। তারপর তিনি একক আদিপত্য বিস্তার করেন। তারপর দশম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনীত হয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্তিতায় নির্বাচিত হন।
হঠাৎ করেই বীরমুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় নাম আসে সাংসদ আমানুর রহমান খানের। তারপর থেকে আত্মগোপনে ২২মাস থাকার পর আদালতে আত্মসমর্পন করেন তিনি। তারপর থেকেই তিনি কারাগারে আছেন।
তার অনুপস্থিতিতে একক অধিপত্য বিস্তার করেন শহিদুল ইসলাম লেবু। এদিকে শহিদুল ইসলাম লেবুর সমর্থকরা ইউনিয়ন পর্যায়ে কমিটি গঠন করে। অপর দিকে আমানুর রহমান খান রানার অনুষারীরাও ইউনিয়ন ভিত্তিক কমিটি গঠন করে। দীর্ঘ ১২বছর পর শহিদুল ইসলাম লেবুর  নেত্রিত্বে একাংশ সম্মেলন করার প্রস্তুতি গ্রহন করে তবে পর পর দুইবার কেন্দ্রীয় নির্দেশে সম্মেলন স্থগিত করা হয়।
এদিকে সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা কারাগারে থাকায় তার সমর্থকরা নিস্তেজ হয়ে পড়েছে। এই সুযোগে সবকিছুর নিয়ন্ত্রন চলেগেছে শহিদুল ইসলাম লেবুর দখলে। এই গ্রুপিংয়ের ফলে হামলা মামলার শিকার হচ্ছেন নিজ দলের নেতাকর্মীরাই। এমতবস্থায় রানা সমর্থক অনেক নেতাকর্মী শহিদুল ইসলাম লেবুর গ্রুপে যোগ দিয়েছেন। সম্প্রতি জাতীয়পার্টি থেকে সদ্য দলে আসা আব্দুল্লাহ তুহীন ও তারপক্ষে ভিড়িয়েছেন শহিদুল ইসলাম লেবু অনেক নেতাকর্মী। এখন তিনভাগে বিভক্ত হওয়ার আশংকায় পড়েছে ঘাটাইলের আওয়ামীলীগ। আগামী নির্বাচনের আগে এসব গ্রুপিং সংকট সমাধান না হলে বিএনপির সামনে দারাতে পারবে না আওয়ামীলীগ।
ঘাটাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য এলাকায় এলাকায় গনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক সাংসদ ডাঃ মতিউর রহমানের ছেলে তানভীর রহমান। তার পক্ষেই অবস্থান নিচ্ছে উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম লেবু। অপরদিকে মনোনয়নের জন্য উচ্চ মহলের সাথে দৌড়ঝাপে ব্যস্ত সদ্য দলে আসা আব্দুল্লাহ তুহীন। আর বর্তমান সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খানের সমর্থকরা একবুক আশা নিয়ে অধির আগ্রহে বসে আছেন যে তিনি আবার ঘাটাইলে ফিরে আসবেন এবং আগামী নির্বাচনে তিনিই মনোনয়ন পাবেন। এই তিন গ্রুপ ভেঙ্গে এক গ্রুপের জন্য কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ কামনা করেন ঘাটাইলের সাধারন কর্মী সমর্থকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!