বিমানবন্দর রেলস্টেশন: টাকায় কি না হয়!

 

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

আকাশ পথে দেশে প্রবেশের প্রধান বিমানবন্দর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এ বিমানবন্দর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার দেশী বিদেশী যাতায়াত করেন। তাদের অনেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় রেলপথে যাতায়াতের জন্য বিমানবন্দর রেলস্টেশন ব্যবহার করেন। কিন্ত রেলস্টেশন ও আশপাশ এলাকার পরিবেশ দেখে বাংলাদেশ সর্ম্পকে শুধু বিদেশীদের মধ্যেই বিরূপ প্রভাব পড়েনি। দেশী বিদেশী বিমানযাত্রীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যেও নেতিবাচক প্রভাব পড়চ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের অবহেলা এবং উদাসীনতার কারণে বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রেলস্টেশনটি একন একটি বস্তিতে পরিণত হয়েছে। রেলস্টেশনের বাথরুম, টয়লেট, বিশ্রামাগার যেমন নোংরা ও ময়লায় ভর্ত্তি, তেমনি বাইরের পরিবেশও খারাপ। রেলস্টেশনের পাশেই রয়েছে ময়লা আবর্জনার স্তপ। বাথরুমগুলো ব্যবহারের অনুপোযোগি, ময়লা আর দুর্গন্ধে দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম। শুধু তাই নয়, রেলস্টেশনের পাশে যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য রাথা পার্কিং এর জায়গাও বেদখল হয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, যাত্রীদের কারপার্কিং এর স্থলে রেন্টেকার, ট্যক্সি ক্যাব এবং ভাসমান দোকান বসানো হয়েছে। প্রতিটি দোকান থেকে দৈনিক ১৬শ টাকা আদায় করা হয়। একেইভাবে পার্কিংএর জায়গা অলিখিতভাবে লিজ দেয়া হযেছে রেন্টেকার ও ট্যাক্সি চালকদের কাছে। স্টেশন মাস্টার, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিআই, জিআরপি পুলিশের ইনচার্জ টাকার বিনিময়ে রেলস্টেশনের উভয় পাশে ৩ শতাধিক ভাসমান দোকানদারদের কাছে অলিখিতভাবে এ ইজারা দিয়েছেন।

স্থানীযরা জানান, লাইনম্যান আকতার, করিম, মল্লিক, ইব্রাহিম, সেলিম, মনির ভাসমান দোকান থেকে প্রতিদিনই চাঁদা নেয়। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সিআই মুজিবুর রহমানের নামে প্রতি দোকান থেকে ৩শত টাকা, স্টেশন মাসটার মরন বাবুর নামে ৩শত টাকা, জিআরপি এর বিমানবন্দর রেলস্টেশনের ইনচার্জ এস আই আকবরের নামে ৩শত টাকা করে ৯শত টাকা দৈনিক লাইনম্যানদের মাধ্যমে আদায় করে।

এছাড়া প্রত্যোক লাইনম্যানকে ১৫০ টাকা করে দিতে হয় দোকানদারদের। এভাবে ট্যাক্সি ক্যাব, ও রেন্টকারের চালকদের কাছ থেকেও দৈনিক ৩শত টাকা করে আদায় করে। ট্যাক্সি ক্যাব, রেন্টেকার আর ভাসমান দোকানের কারণে সাধারণ যাত্রীরা তাদের গাড়ি পার্কিং করতে পারেন না। এসব দোকান পাটের কারণে পথচারী ও যাত্রীদের চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। ওই এলাকার ফুটপাতেও বসানো হয়েছে ৫ শতাধিক দোকান। এসব দোকান থেকে বিমানবন্দর গোলচত্তর ফাঁড়ি পুলিশ দৈনিক ৪শক টাকা করে আদায় করেন। ভাসমান দোকানের কারণে ফুটপাত দিয়ে পথচারীদের চলাচলের উপায় নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দোকানী জানান, সিআই মুজিবর রহমানের টাকা আদায় করেন, আকতার আর করিম।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে সিআই মুজিবর রহমান বলেন, আমার নামে কেউ চাঁদা তোলে না। আকতার এবং করিম এখন টাকা তোলে না। অন্য কারো নামে তোলতে পারে।

অবৈধ দোকান পাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে সিআই মুজিবুর রহমান বলেন, উচ্ছেদ করার পরেও এরা আবার দোকান বসিয়েছে । আমরা আবার তাদের উচ্ছেদ করব। তিনি স্বীকার করেন, ওই এলাকার নিরাপত্তা প্রদান এবং দোকানপাট বসতে না দেয়ার দায়িত্ব তাদের।

সরেজমিনে দেখা গেছে , প্রায় ১০ থেকে ১২ টি হোটেল রেঁস্তোরা রয়েছে। দুপুরের পর থেকে দোকান পাট ও ভাসমান খাবারের দোকানে পুরো এলাকা সয়লাব হয়ে যায়। বিমানবন্দর রেলস্টেশনের পূর্বপাশে এবং পশ্চিম পাশের রেলওয়ের পুরো খালি জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। এছাড়া হাজী ক্যাম্পের দিকে যাতাযাতে রাস্তার ওপরে, রেল লাইনের দুইপাশে ফলের দোকানসহ বিভিন্ন ধরনের শতাধিক দোকান বসানো হয়েছে।

দোকানদারেরা জানান, স্টেশন মাস্টার মরন চন্দ্র বাবুকে দৈনিক ৪শত টাকা, রেলওয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং জিআরপি কর্মকর্তাকে দৈনিক ৫শত টাকা করে দেয়া হয়। আর এ টাকার বিনিময়েই রেললাইনের উভয় পাশে দোকান বসানোর সুযোগ দেয়া হয়। তবে এস আই আকবর এবং মরণ চন্দ্র বাবু এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সূত্র: ইনকিলাব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!