বিশ্বখ্যাত ২০১ গম্বুজ মসজিদ পরিদর্শন করলেন চীনের দু’কন্যা

 

মোঃ সেলিম হোসেন, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে নির্মাণাধীন বিশ্বখ্যাত ২০১গম্বুজ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের সাথে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মসজিদটি পরিদর্শন করলের দুই চীনকন্যা ইউনিয়ং জা ও জো ওয়াং। তাঁরা গতকাল দুপুরে হেলিকপ্টার যোগে মসজিদটির ঐতিহাসিক স্থাপনা বাদল হেলিপ্যাড হয়ে পুরো মসজিদটি ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন। চীনের সিরামিক সিটির ফ্যাশন আর্টিস্ট বোর্ডার কম্পানির পরিচালক ইউনিয়ং জা বলেন, এতো সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর ঐতিহাসিক মসজিদ জীবনে আর কোথাও দেখিনি।

এ সময় তাঁদের সাথে উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনূছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডুসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষ মসজিদটি পরিদর্শন করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্ট এর উদ্যোগে মসজিদের পাশেই ৪৫১ ফুট/১৩৮ মিটার ৫৭ তলা উচ্চ বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মিনারটি হবে বিশ্বের সবচাইতে উঁচু ইটের তৈরি মিনার। প্রায় ১৫বিঘা জমির উপর নির্মাণাধীন এ কমপ্লেক্সে আরো থাকবে অত্যাধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। মিহরাবের ২পাশে থাকবে লাশ রাখার জন্য হিমাগার। পূর্ণ শীতাতাপনিয়ন্ত্রিত হলেও মসজিদে ফ্যান লাগানো হবে সহস্রাধিক। মোট গম্বুজের সংখ্যা হবে ২০১টি। মসজিদের ছাদের মাঝখানে থাকবে ৮১ফুট উচ্চতার ১টি বড় গম্বুজ এবং চারদিকে থাকবে ১৭ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। মূল মসজিদের চার কোনায় ১০১ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট চারটি মিনার থাকবে। পাশাপশি আরও ৪টি মিনার থাকবে ৮১ফুট করে উচ্চতা বিশিষ্ট।

১৪৪ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ফুট প্রস্থের দ্বিতল বিশিষ্ট মসজিদটিতে একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। মসজিদে দেয়ালের টাইলসে অংকিত থাকবে পূর্ণ পবিত্র কোরআন। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে মসজিদের দেয়ালে কোরআন পড়তে পারবেন। আর মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে ৫০ মন পিতল। আজান প্রচারের জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে উচুঁ মিনারটি। উচ্চতার হিসেবে মিনারটি হবে প্রায় ৫৭ তলার সমপরিমাণ অর্থাৎ ৪৫১ ফুট।

মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে আলাদা আলাদা ৫তলা বিশিষ্ট ভবন। সেখানে থাকবে দুঃস্থ মহিলাদের জন্য বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা। মসজিদের উত্তর পশ্চিম পাশে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে দেশি-বিদেশি মেহমান থাকা-খাওয়ার সু-ব্যবস্থার জন্য। পশ্চিমে ঝিনাই নদী থেকে মসজিদ পর্যন্ত সিঁড়ি করা হবে এবং নদীর উপরে একটি সেতু নির্মাণ করা হবে। মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে। কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। প্রায় ৪৫০ শতাংশ জায়গায় নির্মাণাধীন মসজিদের কাজ ইতোমধ্যেই অধিকাংশ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ২০১৭ সালের শেষের দিকে পবিত্র কাবা শরিফের ইমামের উপস্থিতি ও ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!