ভারতীয় সেনাবাহিনীতে বাংলাদেশি!

 

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

দীর্ঘ ৩০ বছর ভারতীয় সেনাবাহিনীতে দায়িত্ব পালন করে অবসরে গেছেন গোয়াহাটির বাসিন্দা মোহাম্মদ আজমল হক। কিন্তু আসাম পুলিশের দাবি, পরিচয় গোপন করে আজমল হক সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। আদতে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তার বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগে পুলিশ মামলাও করেছে। আগামী ১৩ অক্টোবর যার শুনানি হওয়ার কথা।

কিন্তু ছায়াগাঁও’এর বাসিন্দা আজমল হক বলছেন, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন তথ্য। গত বছর জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার হিসেবে অবসরে যাওয়ার সময়ও তার ভেরিফিকেশন হয়েছে। চাকরি জীবনের ৩০ বছরেও এমন অভিযোগ ওঠেনি। তবে এখন কেন?

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি’কে তিনি বলেন, ‘পুলিশের এমন অভিযোগের পর আমার মন ভেঙ্গে গেছে। জীবনের ৩০টি বছর কি তাহলে অপমানিত হওয়ার জন্য দেশের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম?’

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পেলে নিন্দার ঝড় ওঠে। পুলিশের এমন কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছেন অনেকেই। এমনকি এই বিস্ফোরক তথ্যে নড়েচড়ে বসেছে খোদ আসাম সরকারও। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার কথা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

তবে পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে তার উত্তর মেলেনি। আজমল হকের দাবি, ‘সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হলে পুলিশের তদন্ত অত্যাবশ্যক বিষয়। এছাড়া চাকুরি জীবনেও সবার মতোই তার একাধিকবার পুলিশি তদন্ত হয়েছে। তাহলে জীবনের শেষ দিকে এসে কেনো এমন কলঙ্ক মাথায় নিতে হচ্ছে?’

তার প্রশ্ন, ‘যদি বাংলাদেশিই হয়ে থাকি তবে কেনো গত ৩০ বছরে তথ্যটি সামনে আসেনি?’ অভিযোগ তুললেও আজমল হকের প্রশ্নের জবাব এখনও দেয়নি আসামের পুলিশ প্রশাসন।

আসাম রাজ্যে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশের অভিযোগটি দীর্ঘদিনের। সংবেদনশীলও বটে… ২০০১ সালে রাজ্যটির অন্তত ৬টি অঞ্চলে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। এক দশকে যা বেড়ে ৯টিতে দাঁড়ায়।

গত বছর রাজ্যের ক্ষমতা গ্রহণের পর অবৈধ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের ঘোষণা দেয় বিজেপি। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, অবৈধ নাগরিক খোঁজার নামে তাদেরই নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

আজমল হক জানান, ২০১২ সালে তার স্ত্রী মমতাজ বেগমকেও একই ধরনের অভিযোগের মুখোমুখি হতে হয়। ওই সময় সব ধরনের বৈধ কাগজ-পত্র দেখিয়ে সে যাত্রা রক্ষা পান। সেবার আদালত মমতাজ বেগমকে বৈধ ভারতীয় নাগরিক হিসেবে রায় দেয়।

এমন অবস্থায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের পরামর্শ দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!