মাদক সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে পায়ে হেঁটে তেঁতুলিয়ার পথে কনক॥

মো. রাশেদ খান মেনন (রাসেল), টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

মানুষকে মাদক সম্পর্কে সচেতন করতে, পায়ে হেঁটে মাদককে না বলে, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. আরিফুর রহমান কনক (৪৫)। পায়ে হেটে টাঙ্গাইল ত্যাগ করার সময় ৩০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে কথা হয় মো. আরিফুর রহমান কনকের সাথে।

কনক নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার শাজা মালঞ্চী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবু বক্কর সিদ্দিকীর ছেলে। তিনি এক মেয়ের বাবা। তার মেয়ে নুসরাত জাহান (১১) ক্লাশ চতুর্থ শ্রেণীতে লেখা পড়া করে।
গত ১২ অক্টোবর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া বাংলাবান্দা জিরো পয়েন্ট থেকে তিনি হাটা শুরু করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. আরিফুর রহমান কনক বলেন প্রতিদিন ৩৫- থেকে ৪০ কিলোমিটার হাটি। ভোর ৬ টা থেকে শুরু করে মাগরিবের নামাজের আগ পর্যন্ত। প্রতি ১০ কিলোমিটার পর পর ১৫-২০ মিনিট রেস্ট নেই। আগামী ১৯ শে নভেম্বরের মধ্যে তেঁতুলিয়া পৌছাবো ইনশাল্লাহ। বরাতে যেখানে হাটা বন্ধ হয় ওই এলাকায় পরিচিত কারও বাসা না পেলে নিজ খরচে হোটেল ভাড়া করে রাত্রী যাপন করি।

তিনি আরো বলেন, দুষ্ট বন্ধুদের আড্ডায় পড়ে ১৯ বছর মাদক সেবন করেছি। মাদক সেবনের কারণে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও জীবনের দেশের জন্য এমনকি নিজের জন্য ভাল কিছু করতে পারিনি। জীবন থেকে হারিয়েছি মূল্যবান সময়, ধন-সম্পদ, পিতা-মাতা, আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবদের ভালোবাসা। পিতা মাতা মারা যাওয়ার কিছুদিনপর গত ১৬ জানুয়ারি আমার দ্বিতীয় সন্তান মারা যায় তারপর থেকে আমি মাদক সেবন একেবারে বন্ধ করে দিয়েছি। যাকে সামনে পাই তাকেই মাদকের কুফল সম্পর্কে পরামর্শ দেই। আমার হাটার পথে যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সামনে পরে সেখানেও শিক্ষার্থীদের মাদকের কুফল সম্পর্কে জানাই। আশা করছি আগামী ১৯ শে নভেম্বরের মধ্যে তেঁতুলিয়া পৌছাবো। আগামী ২১ নভেম্বর আবার বাবার দ্বিতীয় মৃত্যু বার্ষিকী।
মনের প্রফুল্লতার জন্য ও সমাজের মানুষকে মাদক থেকে দূরে সরিয়ে আনার জন্য পায়ে হেঁটে মাদককে না বলে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। প্রায় ৯শ কিলোমিটারের রাস্তা পার হওয়ার সময় যদি ৯ শ মানুষকে মাদকে কুফল সম্পর্কে বোঝাতে পারি, আর যদি একজন মানুষও মাদক থেকে দূরে সরে আসে সেটাই হবে আমার বড় পাওয়া। মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে সকলকে যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে, তবেই আমাদেও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুরক্ষিত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!