মুক্তিযোদ্ধা তপন চক্রবর্তীর নাম রাজাকারের তালিকায়

অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

নয় নম্বর সেক্টর কমান্ডার মেজর আবদুল জলিলের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন  অ্যাডভোকেট তপন কুমার চক্রবর্তী। তার বাবা সুধীর কুমার চক্রবর্তীকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছিল পাকিস্তানি বাহিনী।

কিন্তু এই মুক্তিযোদ্ধা ও তার মাকে ‘একাত্তরের রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও স্বাধীনতাবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। রোববার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় স্বাধীনতাবিরোধীদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে তপন চক্রবর্তী ও তার মা উষা রানী চক্রবর্তীর নাম রয়েছে।

সরকারি গেজেটভুক্ত, নিয়মিত সম্মানী পাওয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের স্ত্রীর নাম স্বাধীনতাবিরোধীদের তালিকায় রাখায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বরিশালের মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বলছেন, একটি মহল শত্রুতা করে এই পরিবারের সদস্যদের নাম তালিকায় দিয়েছে।

এর মধ্য দিয়ে বিজয় দিবসের প্রাক্কালে ‘শুধু মুক্তিযোদ্ধাকে নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান’ করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তপন চক্রবর্তীর মেয়ে বাসদ নেতা ডা. মনীষা চক্রবর্তী।

ডা. মনীষা গেল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বাসদের হয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিনি বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন। ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষ হিসাবে বরিশালে বাসদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেই রাজনৈতিক কারণে এই তালিকায় তার বাবা ও দাদীর নাম রাখা হয়েছে বলে মনে করেন মনীষা।

তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় যাকে মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিয়েছে, তাকেই আবার রাজাকার আখ্যা দিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে- এটি লজ্জাজনক ও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, “বরিশালে নির্যাতিত, অসহায় মানুষের কথা বলছে বাসদ। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে বাসদের নেতা-কর্মীরা। তাই রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে প্রতিপক্ষরা প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে মিলে এমন কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে।”

দুপুরে ফেইসবুক পোস্টে মনীষা লেখেন, “মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজ করার পুরস্কার পেলাম আজ। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগকে। সদ্য প্রকাশিত রাজাকারদের গেজেটে আমার বাবা এবং ঠাকুমার নাম প্রকাশিত হয়েছে।

“শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য আমার রাজনীতি করার খেসারত দিতে হচ্ছে আমার মুক্তিযোদ্ধা বাবাকে। ধন্যবাদ আওয়ামী লীগ সরকারকে’’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!