ঢাবি মেধাতালিকায় ভ্যান চালকের মেয়ে তানিয়া

অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

অভাবকে জয় করে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েও উচ্চশিক্ষা নিয়ে সংশয় তৈরি হওয়া সেই শিক্ষার্থী তানিয়া এবার মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায়। আবারো প্রমাণিত হলো অদম্য ইচ্ছা আর মনের শক্তির কাছে সব কিছুই যেন হার মেনে চলে। নিজের চেষ্টা আর কঠোর অধ্যবসায়ে তার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে। এর জলন্ত সাক্ষী ঝিনাইদহেন তানিয়া।

জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গ ইউনিটে ব্যবসায়ীক শিক্ষা বিভাগে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধাতালিকায় ৮৫৬ সিরিয়ালে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন তিনি। সংশ্লিস্টরা জানান, ঝিনাইদহের কাঞ্চননগর এলাকার শিক্ষার্থী তানিয়া সুলতানা এসএসসি ও এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়ে এলাকায় আলোড়ন তৈরি করে। সে ওই এলাকার মৃত কামাল হোসেনের মেয়ে। অত্যন্ত অভাব আর টানাটানির সংসার।

তানিয়ার বাবার মৃত্যুর পর অভাবের সংসারে তানিয়ার লেখাপড়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। সমাজের অনেকেই এগিয়ে আসেন। তাকে সহযোগিতার জন্য দানশীল অনেকেই এগিয়ে আসেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমেরিকা প্রবাসী শৈলকুপার এক শিক্ষানুরাগী তানিয়ার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। তিনি জানান ছাত্রীর অদম্য মনোবাসনা আর স্পৃহা তাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

এসব নানান বিষয়ে তানিয়া সুলতানা জানান, অভাবি পরিবারের হলেও তার ভ্যানচালক বাবার ইচ্ছে ছিল যেকোনো ভাবেই মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবে। গত ৩ বছর আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার বাবা মারা যান। আজ সে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়েছে, বিভিন্ন মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তবে বাবা কামাল হোসেন দেখে যেতে পারলো না মেয়ের সেই স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছে। কিন্তু তার মায়ের সার্বিক সহযোগিতা তাকে সাহস জাগিয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় খুশি স্থানীয়রাও। এলাকার অনেকেই জানান, মেয়েটি এমন অভাবের সংসারে বাস করেও লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ায় তারা খুশি। এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ জানান, শুধু টাকা-পয়সা, বাড়ি-গাড়ি থাকলেই যে লেখাপাড়া করা যায় এমন ধারণা ভেঙে দিয়েছে অদম্য তানিয়া। একদিন তানিয়া দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। আমরা তার সাফল্য কামনা করি।

ঝিনাইদহের কাঞ্চননগর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে তানিয়া কৃতিত্বের সঙ্গে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। তার বাবা কামাল হোসেন ভ্যানচালক ছিলেন। মা আছিয়া বেগম এখনও অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ দম্পতির একমাত্র সন্তান তানিয়া সুলতানা। কিন্তু তানিয়ার ইচ্ছার ব্যাপারে তার মা বার বার কেবল উৎসাহ দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!