শ্রীমঙ্গলে উদ্ধার হলেন সরিষাবাড়ির ‘নিখোঁজ’ মেয়র

 

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি পৌরসভার মেয়র ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রুকুনুজ্জামানকে নিখোঁজের দু’দিন পর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৮নং কালিঘাট ইউনিয়ন থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল বলেন, বুধবার দুপুর ১টার দিকে কালিঘাট ইউনিয়ন অফিসের সামনে একটি মাইক্রোবাস থেকে মেয়রকে ফেলে দিয়ে চলে যায় অপহরণকারীরা।

তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন অফিসের পাহারাদার মেয়রকে অফিসে নিয়ে রেখে চেয়ারম্যানকে জানান। চেয়ারম্যান আমাকে জানালে তাৎক্ষণিক মেয়রকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।’

ওসি বলেন, ‘তিনি (মেয়র) বলছেন যে তাকে খাবারের সঙ্গে কিছু খাওয়ানো হয়েছে। তাই তিনি এখন অর্ধ-চেতন অবস্থায় আছেন।’

এদিকে কালিঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রানেশ গোয়ালা বলেন, ‘আমরা মেয়রকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উদ্ধার করে ইউনিয়ন অফিসের ভেতরে নিয়ে আসি। তাকে জিজ্ঞাসা করি যে তার সঙ্গে আর কেউ ছিল কি না। তখন মেয়র বলেন আমার চোখ বাঁধা ছিল। গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়ার সময় আমার চোখ খুলে দেওয়া হয়।’

ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘উদ্ধার করা অবস্থায় তাকে অনেকটা এভনরমাল (অস্বাভাবিক) অবস্থায় পাওয়া যায়।’

মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল বিকাল পৌনে ৫টায় নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, মেয়র রুকুনুজ্জামান এখন শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘মেয়র কিভাবে অপহৃত হয়েছেন এর সঠিক কোনো তথ্য জানাচ্ছেন না। এছাড়া তিনি একেক সময় একেক কথা বলছেন। আমরা তাকে উত্তরা থানায় হস্তান্তর করব।’

এর আগে জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌর মেয়র মোহাম্মদ রুকনুজ্জামান রুকন ঢাকার উত্তরার বাড়ি থেকে নিখোঁজ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। নিখোঁজের আগের দিন রবিবার রাত ৯ টা ১৩ মিনিটে তার ফেসবুকে দেয়া একটি স্ট্যাটাসে বলা হয়েছে, ‘নতুন প্রজন্মের কাছে আমার আহবান যে আমাকে হত্যা করা হলেও তোমাদের সিক্ত ভালোবাসা যেন অটুট থাকে এবং আমার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা তোমরা ধরে রাখবা’।

দল পরিবর্তন করে পৌরসভার নির্বাচনে অংশ গ্রহণ, পৌর সভার এক কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা, দুই স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ এবং ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বকে সামনে রেখে পুলিশ ও র‌্যাব নিখোঁজের ঘটনাটি তদন্ত করছে। গত সোমবার সকালে উত্তরার ৭ নম্বর সেকশনের পার্কে প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে পৌর মেয়র রুকন নিখোঁজ হন। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেকশনের ১৪ নম্বর রোডের ৬০ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন। দিনভর কোনো খোঁজ না পেয়ে মেয়রের ভাই সাইফুল ইসলাম টুকন সোমবার সন্ধ্যায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (নং ১৬১১) করেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী উপজেলা চত্ত্বরের পাশে পৌর মেয়রের বাড়ি। তার প্রথম স্ত্রী কামরুন নাহার হ্যাপী সরিষাবাড়ী সাতপোয়া শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। ওই ঘরে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
ছয় মাস আগে মেয়র রুকুন তার বড় ভাইয়ের শ্যালিকা শাহানা ইয়াসমিন মৌসুমীকে ঢাকায় বিয়ে করেন। মৌসুমীর বাবা শাহীন গ্রুপের মালিক শাহীন। সরিষাবাড়ীতে  রুকুনের ‘পিয়াজা ইতালিয়া’ নামে একটি তৈরি পোশাক বিক্রির দোকান রয়েছে। ঢাকায় রুকনের বায়িং হাউজের পাশাপাশি তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে রুকন ঢাকার উত্তরায় থাকেন। পৌরসভার কাজে প্রতি সপ্তাহে তিনি নিজ গাড়িতে সরিষাবাড়ী যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!