সত্য-অর্ধসত্য, বিশ্বাস ও গণমাধ্যম

 

 

‘এখন আর কোনো সংবাদ গোপন থাকে না’- কথাটা প্রায়ই শোনা যায়। মানে আগে, কিছু সংবাদ গোপন থেকে যেত। ব্যাখ্যা করে বললে, আগে কিছু সংবাদ গণমাধ্যমের দৃষ্টির অন্তরালে থেকে যেত। যা দেশের মানুষের জানার সুযোগ হতো না। আর কিছু সংবাদ গণমাধ্যম জানলেও তা প্রকাশ করা যেতো না। প্রকাশ করতে দেয়া হতো না। গোপন থেকে যেত।

গণমাধ্যমের পরিধি অনেক বিস্তৃত হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে কিছু ঘটলে, তা কোনো না কোনোভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যমের পাশাপাশি বিচরণ করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। অল্প কয়েক বছরের মধ্যে অত্যন্ত শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

গণমাধ্যম কোনো একটি সংবাদ প্রকাশ না করলেও, তা প্রকাশিত হয়ে যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মূলত এই বিবেচনাতেই বলা হয় ‘এখন আর কোনো সংবাদ গোপন থাকে না’। পাঠকের জানা, তারপরও উদাহরণ হিসেবে বলছি-

সাবেক এমপি ডা. ইকবালের ভাতিজা গুলশানে গাড়ি চাপা দিয়ে আহত করল ফুটপাতে শুয়ে থাকা তিনজনকে। রক্তাক্ত তিনজন গরিব মানুষকে রেখে, পুলিশ ব্যস্ত হয়ে পড়ল ভাতিজাকে নিয়ে। মোটরসাইকেলের পেছনে তুলে পুলিশ ডা. ইকবালের ভাতিজাকে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দিল। ডা. ইকবালের ভাতিজার বয়স ১৮ বছরের নিচে। তার ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না।

গণমাধ্যম সংবাদটি জানল, কিন্তু প্রকাশ করল না। ছবিসহ সেই সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফলে কয়েকদিন পরে গণমাধ্যম সেই সংবাদ প্রকাশ করল। অন্যভাবে বলা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের চাপে প্রকাশ করতে বাধ্য হলো।

বনানীর ধর্ষণ ঘটনাসহ সাম্প্রতিককালের অনেক ঘটনার উদাহরণ দেয়া যায়, যা গণমাধ্যম প্রথমে প্রকাশ করেনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদটি ছড়িয়ে পড়েছে। গণমাধ্যম সমালোচনায় পড়েছে। তারপর গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে।

এখানে বলে রাখা দরকার যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই ‘চাকু’ ডাক্তারের হাতেও আছে, আছে সন্ত্রাসীর হাতেও। ডাক্তাররূপে কেউ চাকু দিয়ে অপারেশন করে মানুষ -সমাজকে সুস্থ করায় ভূমিকা রাখছেন। কেউ ‘চাকু’ দিয়ে মানুষ রক্তাক্ত করে সমাজ দূষিত করছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবাই স্বাধীন। এখানে দেখার বা সম্পাদনার কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে, ভালোর পাশাপাশি খারাপের নজীর অনেক। আর যেহেতু সম্পাদনার ব্যবস্থা নেই, ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঠিক গণমাধ্যমের জায়গা নিতে পারবে না।

কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গণমাধ্যমের জন্যে চ্যালেঞ্জ অবশ্যই।

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে একটি বাস খাদে পড়ে গেল। রাস্তায় দায়িত্ব পালন করছিলেন দাউদকান্দি থানার পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ। বাসভর্তি ছাত্রী। খালের পানি ময়লা-দুর্গন্ধ, পচা। মানুষসহ বাস ডুবে যাচ্ছে সেই পানিতে। ৪০/৫০ জন যাত্রীর মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত। সেই পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ। একে একে বাসের জানালার গ্লাসগুলো ভেঙে দিলেন। যাত্রীরা বেরিয়ে এলেন।

ডুব দিয়ে সেই গ্লাস ভাঙা জানালা দিয়ে বাসের ভেতরে প্রবেশ করলেন পারভেজ। বের করে আনলেন শিশু-নারীসহ বেশ কয়েকজনকে। নিজের জীবনের সামান্যতম চিন্তা করলে এমন কাজ কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। পারভেজ নিজের জীবনের চিন্তা করেননি।

নিজের জীবন তুচ্ছ করে মানুষের জীবন রক্ষা করার এক অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন। পুলিশের অনেক বড় কর্তারা যখন পুলিশের ইমেজ ক্ষতি করছেন, একজন কনস্টেবল পারভেজ তখন সেই ধ্বংসাত্মক ইমেজকে অনেকখানি মেরামত করছেন।

এই সংবাদটি গণমাধ্যমে খুব একটা গুরুত্ব পায়নি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে মানুষের অজানাও থাকেনি। এরপর নিশ্চয়ই সংবাদটি গণমাধ্যমে স্থান পাবে। সারা দেশের মানুষ আরও ভালোভাবে বিষয়টি জানবেন।

এই সুযোগে বলে রাখি, একজন পারভেজকে উৎসাহিত করার জন্যে, আরও পারভেজ তৈরির জন্যে বড় পুরস্কার ঘোষণা করা দরকার। এখন পর্যন্ত ঘোষিত ১০/১৫ হাজার টাকার পুরস্কার নয়। ৫০ লাখ বা কোটি টাকার পুরস্কার তার প্রাপ্য। রাষ্ট্রের উচিত তার বাকি জীবনটা নিশ্চিত করে আরও বড় দায়িত্ব দেয়া। একজন পারভেজকে দেখেই সমাজে আরও অনেক পারভেজ তৈরি হয়। সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে হয় রাষ্ট্রের।

০২. কোনো সংবাদ গোপন থাকে না, তার কিছুটা হয়তো বোঝা গেল। এবার আসি গণমাধ্যমের অন্য রকম সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে। আরও আগের উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়। তবে সাম্প্রতিক উদাহরণ হলে পাঠকের জন্যে মিলিয়ে নেয়া সহজ হবে। ফরহাদ মজহার অপহৃত হলেন।

বাংলাদেশের মানুষ যেহেতু দূষণীয় মাত্রায় দুই ভাগে বিভক্ত, ফলে বিষয়টি নিয়ে নির্দয় কূ-তর্ক এবং রসিকতা করতে দেখা গেল এক পক্ষকে। আরেক পক্ষ ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের দাবি জানালেন। অপহরণের জন্যে দায়ী করলেন সরকারকে।

তৃতীয় আরেকটি বিদগ্ধ পক্ষ বা ব্যক্তি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, যারা সরকারের সমালোচনা করেন, বর্তমান সরকারকে পছন্দ করেন না তারা অপহরণের জন্যে সরকারকে দায়ী করছেন। আর যারা সরকারের পক্ষে তারা বলছেন ফরহাদ মজহার নিজেই অপহরণ নাটক করছেন।

বিদগ্ধজনের কী ভয়ঙ্কর সরল বিশ্লেষণ!

একজন মানুষ অপহৃত হলেন। তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। তার বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে, ব্যবস্থা নেবে রাষ্ট্র-সরকার। যেহেতু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, সেহেতু তাকে উদ্ধারের দাবি জানালে, তা হবে সরকার বিরোধিতা? সরকারকে অপছন্দ করা? আর সরকারের পক্ষে থাকলেই, অপহরণের পক্ষে অবস্থান নিতে হবে?

আপনি বিদগ্ধজন, এত সরল ব্যাখ্যায় সমাধান দিলেন!

ফিরে আসি গণমাধ্যম প্রসঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কূ-তর্ক, রসিকতা চলতে থাকল। তথাকথিত প্রগতিশীলদের আসল কূৎসিত চরিত্র আর একবার প্রকাশিত হলো। সবচেয়ে ভয়ঙ্করভাবে প্রকাশিত হলো কিছু গণমাধ্যমের স্বরূপ।

বিশেষ করে কিছু অনলাইন সংবাদপত্র প্রায় সরাসরি ‘অপহরণ নাটক’ হিসেবে প্রচার করতে শুরু করল। শুধু নাম সর্বস্ব অনলাইন সংবাদপত্র নয়, দু’একটি প্রথমসারির অনলাইন সংবাদপত্রকেও এই ধারায় নিজেদের সম্পৃক্ত করতে দেখা গেল। একজন মানুষ ‘অপহরণ’র বিষয়টিকে প্রধান না করে, তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ল ফরহাদ মজহার কত খারাপ তা প্রমাণে।

ফরহাদ মজহার বারবার তার রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করেছেন, হিজবুত তাহরির আধ্যাত্মিক নেতা ছিলেন, হেফাজতের বুদ্ধিদাতা ইত্যাদি বিষয়গুলোকে সামনে আনতে শুরু করলেন। অবশ্যই এসব বিষয় সামনে আনা অপরাধ নয়। তাই বলে অপহরণের সঙ্গে মিলিয়ে সামনে আনতে হবে?

যেহেতু তিনি খারাপ মানুষ, সেহেতু নিজেকে নিয়ে ‘অপহরণ নাটক’ তিনি নিজেই করতে পারেন, তা বোঝানোর চেষ্টা বিরতিহীনভাবে করে গেল কিছু অনলাইন সংবাদপত্র। সন্ধ্যার পর তাকে যখন উদ্ধার করা হলো, পুলিশের ডিআইজি যখন বললেন যে, এটা একটা পরিকল্পিত ভ্রমণ, তখন এসব অনলাইন সংবাদপত্র আরও জোরালোভাবে নাটক হিসেবে প্রচার করতে শুরু করল।

কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া অনলাইনে ও স্যাটেলাইট চ্যানেল এমন প্রতিযোগিতা সারা দিন-রাত ধরে করে গেল। দায়-দায়িত্ব এবং সম্পাদনাহীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কূ-প্রচারণা ও মূলধারার গণমাধ্যমের একটি অংশের প্রচারণার মধ্যে প্রায় কোনো পার্থক্য দেখা গেল না।

কিন্তু অপহরণের আসল ঘটনা নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেই মানুষকে অনুধাবন করে নিতে খুব সমস্যা হচ্ছিল না। পরের দিন সকালবেলা মূলধারার কোনো কোনো গণমাধ্যম থেকে বিশেষ করে প্রথম আলো’র প্রতিবেদন থেকে মানুষ পরিষ্কার করে বিষয়টি বুঝে গেলেন।

ফরহাদ মজহারের কাজ, লেখা, কথা দেশ- সমাজের জন্যে ক্ষতিকর বা উস্কানিমূলক, তা মনে করতেই পারেন কিছু বা অনেক মানুষ। তার চিন্তা- জ্ঞানের ব্যবহার সমাজকে পিছিয়ে দেয়, এমন ভাবনাও অস্বাভাবিক নয়। এর জন্যে তাকে জেলে ঢোকাবেন, ফাঁসি দেবেন, না লেখার প্রতিবাদ লেখা দিয়ে কথার প্রতিবাদ কথা দিয়ে করবেন?

প্রথমত লেখার প্রতিবাদ লেখা দিয়ে, কথার প্রতিবাদ কথা দিয়ে করাটাই প্রত্যাশিত। তা না হলে মনে হতে পারে, তার লেখা- কথার জবাব দেওয়ার সক্ষমতা নেই অন্যদের। ফরহাদ মজহারের লেখা যদি দেশ বিরোধী হয়, ব্যবস্থা নেওয়ার আইন রাষ্ট্রে আছে।

যখন তিনি উস্কানিমূলক কথা বলেছেন, সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। গণমাধ্যম ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবি জানাতে পারে। তার উস্কানিমূলক কথা- লেখাও সামনে আনতে পারে। কিন্তু সেই সব লেখা- কথা দিয়ে অপহরণকে জাস্টিফাই করতে পারে না গণমাধ্যম। শুনতে খারাপ শোনালেও, কিছু গণমাধ্যম এমন কাজ করেছে।

আর একটি বিষয় বিবেচনায় রাখা দরকার, রাষ্ট্রের শক্তি- ক্ষমতা এত কম নয় যে, একজন ফরহাদ মজহারের লেখা-কথায় তা ধসে পড়বে। বুদ্ধি- চিন্তার মোকাবিলা বুদ্ধি- চিন্তা দিয়ে করার সক্ষমতা অর্জন করা দরকার। সব কিছুকে পুলিশ- জেল দিয়ে মোকাবিলা করতে চাওয়া সুস্থতার লক্ষণ নয়।

এই অসুস্থতার ধারায় সাধারণ মানুষের একটা অংশ হয়ত সম্পৃক্ত হতে পারেন, তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে। একই আচরণ গণমাধ্যম করতে পারে না।

এমন আচরন করে গণমাধ্যমের প্রাপ্তিটা কী হলো? সাধারণ জনমানুষের আস্থা গণমাধ্যমের উপর থেকে আরও একটু কমে গেল। আপনি পছন্দ করেন বা না করেন, সাধারণ পাঠকের আস্থা প্রথম আলো’র প্রতি আরেকটু বাড়ল। কিন্তু সামগ্রিকভাবে ক্ষতিটা হলো বাংলাদেশের গণমাধ্যমের।

এরপর রামপাল ইস্যুতেও গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা বা বিশ্বাসযোগ্যতা আরেকবার প্রশ্নবিদ্ধ হলো। রাতের বেলা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে বলা হলো, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উপর থেকে ইউনেস্কো তাদের আপত্তি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। গণমাধ্যম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি হিসেবে এটাকে সংবাদ শিরোনাম করল। তখন পর্যন্ত ইউনেস্কোর ওয়েবসাইটে এমন কোনো সংবাদ দেখা গেল না।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন সংবাদ কোথায় পেল, সংবাদ মাধ্যম সেই প্রশ্ন করল না। পরের দিনই জানা গেল, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সম্পূর্ণ অসত্য না হলেও, অর্ধেকের বেশি অসত্য। রামপাল বিষয়ে ইউনেস্কোর যে আপত্তি ছিল, তার সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১৮ সালের মিটিংয়ে বিষয়টি আবার তোলা হবে।

আপত্তি সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নিয়েছে, তা মোটেই সত্যি সংবাদ নয়। অথচ একটি দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এমন সংবাদ প্রচার করল! গণমাধ্যম নিজস্ব অনুসন্ধান না করে সেই সংবাদ প্রকাশ করে, কিছুটা হলেও প্রশ্নের মুখে পড়ল।

অন্য আরও কিছু ইস্যুতে ইতিপূর্বেও গণমাধ্যম এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল। তা এক্ষেত্রে স্মরণে রাখা হয়নি।

এই সংবাদটিকে নিয়েও দু’একটি অনলাইন সংবাদপত্র অর্ধসত্য বিশ্লেষণ পর্যন্ত করে ফেলেছে। রামপাল বিরোধী আন্দোলনকারীরাও বিভ্রান্ত হয়েছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অর্ধসত্য সংবাদ থেকে। এই ঘটনা থেকে রামপাল বিরোধী আন্দোলনকারীদের শিক্ষা নেওয়া দরকার যে, ইউনেস্কো কি বলল তা এত গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই। জাতিসংঘ- ইউনেস্কো সাধারণত জনমানুষের পক্ষে অবস্থান নেয় না।

সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্যে ইউনেস্কো আইইউসিএন’কে সম্পৃক্ত করতে বলেছে। আইইউসিএন বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থ দেখা প্রতিষ্ঠান। সারা পৃথিবীতে তার বহু প্রমাণ আছে। বাংলাদেশের লাউয়া ছড়ার ক্ষতির পেছনেও আইইউসিএন’র ভূমিকা আছে।

সুতরাং রামপাল বিষয়ে তাদের রিপোর্ট জনমানুষের বিপক্ষে, সরকারের পক্ষে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। সুতরাং রামপালের পাশাপাশি আইইউসিএন রিরোধী আন্দোলনও জোরদার করা দরকার। গণমাধ্যমের ভূমিকা এক্ষেত্রে রামপালের বিরুদ্ধে সুন্দরবন বাঁচানোর পক্ষে খুব জোরালো থাকবে, তা বলা যায় না।

০৩. দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণমাধ্যম জনমানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছিল। এখন তা বড়ভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্ন করা দেখে সাধারণ মানুষ মুচকি হাসেন। অসত্য বিশ্বাস করানোর সাংবাদিকতা দেখেও মানুষ মুচকি হাসেন। বারবার বলছি, গণমাধ্যমের একটি অংশের কথা।

আসলে এর প্রভাব সমগ্র গণমাধ্যমের উপরই পড়ছে। সত্য তুলে ধরা গণমাধ্যমের দায়িত্ব, সরকারকে খুশি করা গণমাধ্যমের দায়িত্ব হতে পারে না। সরকারকে খুশি করতে গিয়ে যেসব গণমাধ্যম, গণমাধ্যমকর্মী অসত্য বা অর্ধসত্য প্রচার-প্রকাশ করছেন, তা আর যাই হোক, সাংবাদিকতা হতে পারে না।

গোলাম মোর্তোজা : সম্পাদক, সাপ্তাহিক।
s.mortoza@gmail. Com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!