সবজি যেন গরীবের মরণ ফাঁদ

রিক্সা চালক মোকছেদ মিয়া স্ত্রী সন্তানসহ ছয় সদস্যের পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার মেরাদিয়া ভুইয়া পাড়ায়। দৈনিক ৪শ থেকে ৫শ টাকা রিক্সা চালিয়ে আয় করেন। একমাত্র পানি ছাড়া সবই তাকে কিনে খেতে হয়। মোকছেদ মিয়ার প্রতিদিন ৩ কেজি চাল কিনতে হয়। বর্তমান খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম ৩৮ থেকে ৪২ টাকা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গায়ে খেটে চাল কিনতে পারলেও কাঁচা সবজি যেন মরণ ফাঁদে পরিনত হচ্ছে। হুহু করে বেড়েই চলছে সবজির দাম। সম্প্রতি সবজি কিনতে ব্যায় হচ্ছে বেশী। সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জ এর রিক্সা চালক মোকছেদ মিয়ার সাথে রামপুরায় কথা হয় আজ রোববার বিকেলে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশ তথা উত্তরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ও বর্তমানে বৃষ্টির কারনে বেড়েই চলছে সবজির দাম। লাগামহীন হয়ে পড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম। সেই সাথে কাঁচা মরিচের গায়ে যেন আগুন লেগেছে। সপ্তাহ খানেক আগে কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১৬০ টাকা কেজি। যা বর্তমানে প্রতি কেজি কাচা মরিচ ২০০শ থেকে ২২০শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি সবজির দাম দ্বিগুন হারে বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে গেছে। ফলে সবজি এখন সাধারণ মানুষের মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে।

রামপুরা খিলগাও এর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ১৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২২০ টাকা হয়েছে। বেগুন ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, কঁচু ৪৫ টাকা, পেয়াজ ৪৮ টাকা, ঝিংগা ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, কাকরোল ৭০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, প্রতি আটি লাল শাক, পুই শাক, কলমি শাঁক ৩০ টাকা ও কচুর লতি ৪০ টাকা ও লাউ আকার ভেদে ৪০-৮০ টাকা প্রতি পিস দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।টমেটো ১২০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ১৪০ টাকা। পেঁপে ৩০ টাকা, কচুরমুখী ৪০ টাকা, শসা ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু ২০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৮০-১০০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০-৬০ টাকা ধরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। রসুন দেশী বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। আদা বর্তমান ১৪০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

রামপুরার বনশ্রীতে সবজি কিনতে আসা খোকন মিয়া জানান, আগাম শাকসবজি বাজারে উঠলেও দাম আকাশছোঁয়া। তাই বর্তমানে সাধারণ মানুষ বাজার করতে গিয়ে অল্প কিছু কিনেই বাড়ি ফিরছে। এতে করে সংসার চালাতে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ বিপদে পড়বে।

খুচরা তরকারী বিক্রেতা …… জানান, উচ্চ মূল্যে কাঁচা তরকারী কিনেছেন তাই তাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন, পাইকারী বাজারে দাম বৃদ্ধি হওয়ায় খুচরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এই সময়ে সবজির যে দাম থাকার কথা এর চেয়ে তুলনামূলক বেশি বলে অভিযোগ করেন মো: রবিউল ইসলাম।

তিনি বলেন, বাজারে কথা আর কি বলবো। প্রতিদিনই জিনিস পত্রের দাম বাড়ছে। আমাদের মতো মানুষদের এখন বাজার করা কঠিন হয়ে পড়ছে। চালসহ প্রায় সকল জিনিসের দাম বেশি।

-মাহবুব এইচ শাহীন/প্রকাশক ও সম্পাদক/কাগজ২৪

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!