হার্টের রিংয়ের মূল্য সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা

হেল্থ ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

কার্ডিয়াক বা হার্টের রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় করোনারি স্টেন্ট বা রিংয়ের মূল্য সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে জাতীয় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।

এখন পর্যন্ত অধিদফতরের কাছে দাম প্রস্তাবকারী চারটি কোম্পানি হলো- কার্ডিয়াক কেয়ার, ভাসটেক লিমিটেড, মেডিগ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড ও ওরিয়েন্ট এক্সপোর্ট কোম্পানি লিমিটেড। তাদের প্রস্তাবে নন মেডিকেটেড স্টেন্টের সর্বনিম্ন মূল্য ২৫ হাজার টাকা ও মেডিকেটেড স্টেন্টের মূল্য দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা।

ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মে. জে. মোস্তাফিজুর রহমান মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) অধিদফতরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আরও যে ২১টি কোম্পনি ৪৭ ধরনের স্টেন্ট আনে, তারা এখনও কোনো মূল্য প্রস্তাব করেনি।

তিনি বলেন, ‘আগামী দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে স্টেন্টের দাম নিয়ে আসা হবে। দাম নির্ধারণের পর সকল আমদানিকারক ও বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত দামে তা বিক্রি করতে বাধ্য থাকবে’।

‘পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে একটি বেয়ার মেটাল স্টেন্টের দাম ৭ হাজার ২৬০ রুপি, বাংলাদেশি টাকায় যা ৮ হাজার ৯২৯ টাকা। অন্যদিকে ড্রাগ ইলিউটিং স্টেন্টের দাম ভারতে ২৯ হাজার ৬০০ রুপি, বাংলাদেশি টাকায় যা ৩৬ হাজার ৪০৮ টাকা। তবে দুই দেশের মধ্যে পার্থক্য হলো, ভারতে ৬টি প্রতিষ্ঠান স্টেন্ট উৎপাদন ও বাজারজাত করে আর বাংলাদেশ পুরোটাই আমদানি নির্ভর।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এখন থেকে চূড়ান্ত দাম নির্ধারণের পূর্ব পর্যন্ত সকল সরকারি হাসপাতালে প্রস্তাবিত এ দামে স্টেন্ট বিক্রি করা হবে। তবে স্টেন্ট কেনার সময় অবশ্যই ক্রেতাকে দেখতে হবে, স্টেন্টের প্যাকেটের গায়ে পণ্যের মূল্য এবং উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ রয়েছে কি-না। যদি এগুলো না থাকে, তাহলে ওই স্টেন্ট কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে বার্ষিক ১৮ হাজার করোনারি স্টেন্টের প্রয়োজন পড়ে। অন্যদিকে ভারতের বার্ষিক চাহিদা ১৩ লাখ।

সংবাদ সম্মেলনে অধিদফতরের পরিচালক মো. রুহুল আমিন, নায়ার সুলতানা, ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক সাবরিনা সুলতানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে করোনারি স্টেন্ট বা হার্টের রিংয়ের খুচরা মূল্য নির্ধারণে গত ১১ এপ্রিল মতবিনিময় সভায় সব পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।

ওই সভায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মে. জে. মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের স্বাস্থ্য পরিচালক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি  ডা. ইকবাল আর্সনাল ছাড়াও প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি ক্যাথল্যাবের প্রধান,কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি, বেশ কয়েকজন স্বনামধন্য ইন্টানভেনশন কার্ডিওলজিস্ট, আমদানিকারক সমিতির সভাপতি এবং এনবিআর ও কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

অভিযোগ রয়েছে, দেশের কয়েকটি হাসপাতালে ১৮ হাজার টাকার হার্টের রিং দেড় লাখ টাকা থেকে শুরু করে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে। কিছু অসাধু চিকিৎসকদের কমিশন বাণিজ্যের কারণেই রোগীদের কাছ থেকে এ বাড়তি মূল্য নেওয়া হচ্ছে। ফলে রিংয়ের মূল দামের চেয়ে ১০ গুণেরও বেশি দিতে হচ্ছে গ্রাহককে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!