সেলিনা জাহান প্রিয়ার কবিতা- হে মুগ্ধবালক

হে মুগ্ধবালক

————–  সেলিনা জাহান প্রিয়া

হে মুগ্ধবালক !
তোমাকে দেখার জন্য আমি হেঁটেছি তেপান্তর
ঘুরেছি আমি রক্ত রাঙ্গা শিমুল পলাশের বন।
আমি পথে পথে দেখেছি নাম না জানা তৃণলতা
দেখেছি সেথায় তাদের এক মধুর ভালবাসা
তাদেরও আছে সুখ দুঃখ কষ্ট কন্না হাসির খেলা
ভাষা আছে তাদের,সেই ভাষায় সুভাস ছড়ায়
বাতাসে খুজে পাই সুখে আর দুঃখে মিস্টি আবেশে।
পলাশ শিমুলের রক্তে লাল ধরণীর ধূলিকণাও যে,
চিৎকার করে কেঁদে উঠে পলাশ শিমুলের ভাষাতে।
এক একটি পত্র পল্লবে এক একটি ধুম্র ইতিহাস রচিত
কখনও জলে কখনও স্থলে কখনও বা শ্যামল বনে
আমার মনের ভাষাতে তারাও আজ পথ চেয়ে আছে ,
আমার আঙ্গুলের ডগায় ডগায় যে মেহেদী রং আছে
প্রতি লৌহকনিকায় নীলাভ শিরায় তোমার অপেক্ষায় !!
জীবনের রং অপেক্ষার আঁখি জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় সময়
অবিশ্রুত ভালোবাসার ঝরনার কল্লোল অভিমানে দেখি
বিষাদীয় সঙ্গীতের সূর গুন গুন করে আপন আঙিনায়
কোমল পল্লবে বেহেলার সুরে জেগে ওঠো তুমি হৃদয়ে
চোখ মেলো ঘুমপূরীরা আমায় ডাকে রাজপুত্র আসবে বলে !
ললাটে ছোঁয়াই তপ্ত অধর,পরম আদরে, স্বপ্ন দেখি ঘুমে
বন্দী রাজকন্যা, দৈত্যি দানো, সাত সমুদ্র তেরো নদী
মন্ত্রমুগ্ধ মোহনিতায় অবাক চেয়ে রই পলকহীন মুগ্ধশ্রোতা!
অদল বদল রৌপ্য ঘুমকাঠি জাগিয়ে তুলে আমায়
এই আমি তোমায় খুজে খুজে রক্ত রাঙ্গা শিমুল পলাশের বনে
উতল ভালোবাসায় গাঁথি মালা অমরাবতী শ্রান্তিহীন পথে
অনিদ্র নীলকন্ঠী বালিকার মৌন মনিহার যেন তাসের খেলাঘর ।
দীঘল শীতার্ত রাত্রী অলস দুপুর অথবা ঝুম বর্ষন সন্ধ্যা
ফের ঘুমিয়ে পড়ি পলাশ শিমুলের বনে ——— !
হে মুগ্ধবালক ! –
কি করে বুঝাই তোমাকে এ যে মোহমায়ামাক
ক্ষণকাল ছুয়ে এক ঘোর! বিস্মৃতির অতল কারাগারে
তবুও ব্যথিত সেই কবি কত মান আর অভিমানে
কত ভালোবাসার গানে ঝগড়া বিবাদ রাগ অনুরাগ
সেই দুটো মন জানে স্মৃতির ক্যালেন্ডারে ওড়ে ভালোবাসার গল্প !

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!