ইতিহাসের এই দিনে: ২৯ এপ্রিল

অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

আজ ২৯ এপ্রিল, ২০১৭, শনিবার। ১৬ বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ। গ্রেগরীয়ান বর্ষপঞ্জী অনুসারে বছরের ১১৯তম (অধিবর্ষে ১২০তম) দিন। একনজরে দেখে নিন ইতিহাসের এই দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যু দিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।

ঘটনাবলি

১৬৮২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে পিটার দ্যা গ্রেইট মাত্র দশ বছর বয়সে রাশিয়ার সম্রাট পদে অধিষ্ঠিত হন।

১৭৪৭ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ফ্রান্সের ৯০ হাজার সেনা হল্যান্ডে হামলা শুরু করে। এ সময় হল্যান্ড বৃটেন ও অস্ট্রিয়ার পক্ষ থেকে সামরিক সাহায্য পাওয়া সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত যুদ্ধে ফ্রান্সই বিজয়ী হয়।

১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জালিওয়ান ওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ প্রদত্ত ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ করেন।

১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক আরবী বর্ণমালায় তুর্কী ভাষা লেখার ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি বাদ দিয়ে ল্যাটিন হরফে তুর্কী ভাষা লেখার নির্দেশ দেন।

১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে দিল্লির লালকেল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়।

১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে ইতালিতে জার্মান বাহিনী মিত্রশক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে।

১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে তিব্বত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে পঞ্চশীল চুক্তি সম্পাদিত হয়।

১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলে আঘাত হানা BOB 01 প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ১,৩৮,০০০ লোকের প্রাণহানি, ও বিপুল সম্পত্তির ক্ষতি হয়।

১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে বৃটেন চীনের কাছে হংকংকে ফিরিয়ে দেয়।

২০০৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সি.বি. এস ইরাকের আবু গারিব কারাগারের বন্দীদের ওপর মার্কিন সেনাদের নৃশংস ও পাশবিক নির্যাতনের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ফিল্ম প্রচার করে।

জন্ম

১৮৩৭ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলে জর্জ আর্নেস্ত জ্যঁ-মেরী বৌল্যাঙ্গার, তিনি ছিলেন ফরাসি ফরাসি জেনারেল, রাজনীতিবিদ ও যুদ্ধমন্ত্রী।

১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন অঁরি পোয়াঁকারে, তিনি ছিলেন ফরাসি গণিতবিদ, তাত্ত্বিক পদার্থবিদ ও দার্শনিক।

১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন হ্যারল্ড ক্লেটন ইউরি, তিনি ছিলেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী আমেরিকান রসায়নবিদ।

১৯০৭ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ফ্রেড যিনেমান, তিনি ছিলেন অস্ট্রিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান পরিচালক ও প্রযোজক।

১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন জাঁ রচেফরট, তিনি ছিলেন ফরাসি অভিনেতা ও পরিচালক।

১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন উইলি হিউ নেলসন, তিনি ছিলেন আমেরিকান গায়ক, গীতিকার, গিটারবাদক, প্রযোজক ও অভিনেতা।

১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আলেহানদ্রা পিসারনিক, তিনি আর্জেন্টিনার কবি।

১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ডেভিড ইকে, তিনি সাবেক ইংরেজ ফুটবল খেলোয়াড় ও লেখক।

১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন জেরি সেইনফেল্ড, তিনি আমেরিকান কৌতুকাভিনেতা, অভিনেতা ও প্রযোজক।

১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আঙ্গুন, তিনি ইন্দোনেশীয় ফরাসি গায়ক, গীতিকার ও প্রযোজক।

১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন আশীষ নেহরা, তিনি ভারতীয় ক্রিকেটার।

১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন সেমিহ সেন্টুরক, তিনি তুর্কি ফুটবলার।

১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন সারা এরানি, তিনি ইতালীয় টেনিস খেলোয়াড়।

১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন ডমাগোজ ভিদা, তিনি ক্রোয়েশীয় ফুটবলার।

মৃত্যু

১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন মিখিয়েল ডি রুয়টের, তিনি ছিলেন ডাচ অ্যাডমিরাল।

১৭৭১ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন ফ্রান্সিসকো বারটলোমেও রাস্ট্রেলি, তিনি ছিলেন ফরাসি বংশোদ্ভূত ইতালীয় স্থপতি।

১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন কনস্টান্টটাইন পি. কাভাফয়, তিনি ছিলেন গ্রিক কবি।

১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন উইলহেম রিটের ভন লেব, তিনি ছিলেন জার্মান ফিল্ড মার্শাল।

১৯৮০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন স্যার আলফ্রেড যোসেফ হিচকক, তিনি ছিলেন ইংরেজ চলচ্চিত্র নির্দেশক ও প্রযোজক ছিলেন।

২০০৫ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন লিওনিদ খাচিয়ান, তিনি ছিলেন মার্কিন বংশোদ্ভূত রুশ গণিতবিদ ও কম্পিউটার বিজ্ঞানী।

২০০৬ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন জন কেনেথ গলব্রেইথ, তিনি ছিলেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ।

২০১৪ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন বব হস্কিন্স, তিনি ছিলেন ইংরেজ অভিনেতা।

২৯ এপ্রিল ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস

আজ (শনিবার) সেই ভয়াল ২৯ এপ্রিল। ১৯৯১ সালের এই দিনে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত এবং এক কোটি মানুষ তাদের সর্বস্ব হারায়।

নিহতের সংখ্যা বিচারে স্মরণকালের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে ৯১-এর এই ঘূর্ণিঝড় একটি। ৯১ এর এই ভয়াল ঘটনা এখনও দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়ায় উপকূলবাসীকে। ঘটনার এত বছর পরও স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পারছেন না সেই দুঃসহ দিনটি।

ঘূর্ণিঝড়ের পরদিন লাশের স্তূপ জমে গিয়েছিল। শুধু মানুষ নয়, গরু-ছাগল-মহিষ আর মানুষের মৃতদেহে একাকার হয়ে গিয়েছিল সেদিন। ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই মানুষ ও পশু মাটি চাপা দেওয়া হয়েছিল সেদিন।

পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়টি ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে। এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে ৬ মিটার (২০ ফুট ) উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয় এবং এতে প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এদের বেশিরভাগই নিহত হয় চট্টগ্রাম জেলার উপকূল ও দ্বীপসমূহে। সন্দ্বীপ, মহেশখালী, হাতীয়া দ্বীপে নিহতের সংখ্যা সর্বাধিক। এরমধ্যে শুধু সন্দ্বীপে মারা যায় প্রায় ২৩ হাজার লোক।

ধারণা করা হয়, এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে প্রায় ১ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলালের ক্ষতি হয়। সাগর ও নদীর উপকূল প্লাবিত হয়। কর্ণফুলি নদীর তীরে কংক্রিটের বাঁধ থাকলেও এটি জলোচ্ছ্বাসে ধ্বংস হয়। চট্টগ্রাম বন্দরের ১০০ টন ওজনের একটি ক্রেন ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে স্থানচ্যুত হয় এবং আঘাতের কারণে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। বন্দরে নোঙর করা বিভিন্ন ছোট বড় জাহাজ, লঞ্চ ও অন্যান্য জলযান নিখোঁজ ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার মধ্যে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অনেক যানও ছিল। এছাড়াও প্রায় ১০ লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ২৯ এপ্রিল রাতে এটি চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী অঞ্চলে ২৫০ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে, যা ক্যাটাগরি ৪ ঘূর্ণিঝড়ের সমতুল্য। স্থলভাগে আক্রমণের পর এর গতিবেগ ধীরে ধীরে হ্রাস পায় এবং ৩০ এপ্রিল এটি বিলুপ্ত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!