শাহিন মামুন এর কবিতা-বীরত্বে গাঁথা বাঙালির ইতিহাস

 

 

বীরত্বে গাঁথা বাঙালির ইতিহাস
শাহিন মামুন

আমি বাঙালি ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর
পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙ্গা ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের দামে
পাকিস্তানের পিন্ডি থেকে কেনা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মের সন্তান।
আমি মানুষ! আমি একজন বাঙালি!
আমি নই কারো হুকুমের গোলাম কিংবা কৃতদাস।
তাই যেমনে বলবে, তেমনি চলার মতো
মানুষ নই আমি এই বাংলার।
কারণ, আমি বাঙালি! আমি তো বীরের জাতির সন্তান।
আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মের
এক বিপ্লবী চেতনার,
আমি নই কারো হুকুমের গোলাম কিংবা কৃতদাস।
আমি দেখিনি ১৯৭১’ কে
তাই দেখিনি ৭১’ এর ঐ দিনগুলির
পাকিস্তানের মিলিটারী বাহিনীর ভয়ানক নির্যাতন
আর আগুনের বিভীষিকার মহা তান্ডবের উৎসব।
তবে জেনেছি যতটুকু বইয়ের পাতার মাঝে
আর শুনেছি ৭১’ এর প্রত্যক্ষ দর্শীদের মুখে
যারা এখনো বর্তমান,
তাতেই বুঝে নিয়েছি ৭১’ এর ঐ দিনগুলি ছিলো
কতোটা ভয়ানক আর বিভীষিকাময়।

চারদিকে বোমা আর গুলির আওয়াজ
রাজপথ রক্তে রক্তাক্ত লাশের পর লাশ
আর পাকিস্তানী মিলিটারী ক্যাম্পের ভিতর
ধর্ষিতা মা-বোনের চিৎকার-আর্তনাদে ভার।
শুনেছি শকুন-চিল ওরা নাকি মাংস আর রক্তের গন্ধ পায়
প্রায় ১৮ মাইল দূর পথ থেকে,
আর পাকিস্তানী শাসক শ্রেণি বাঙালি যে বিদ্রোহী
অকুতোভয় বীর, নয় কারো হুকুমের গোলাম কিংবা কৃতদাস
তার গন্ধ পেয়েছিলো ১২০০ মাইল দূরের পিন্ডিতে বসে।
ইতিহাস সাক্ষী! সাক্ষী এই পৃথিবী!
বাঙালি বীরের জাতি! বাঙালির রক্ত সদা বিদ্রোহীর!
বাঙালি সত্যের কাছে সদা আপোসহীন
কখনো শত্রুর সাথে সন্ধী করে মাথা নোয়াবার নয়।
এসেছে যতোবার আঘাত আর যতো অত্যাচার
বাঙালির ভাষা, বাঙালির বাঙালিত্ত্ব
আর বাঙালির প্রাণের অস্তিত্ত্বের মাঝে
করেছে বাঙালি জাতি পাল্টা আঘাত ততোবারই শত্রুকে।
হয়েছে বুলেটের গুলিতে বাংলা আর বাঙালির
দেহখানি পুড়ে ছাড়খার শত শত বার
তবুও বাঙালি জাতি হয়নি কখনো কারও হুকুমের গোলাম-কৃতদাস।
তাই বাংলা আর বাঙালি জাতি হতে পারেনি
কখনো কোনদিনও কারও আপন পৃথিবীর ইতিহাসে
পর্তুগীজ-ডাচ, ফরাসী-মোঘল, ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তানীর।
কারণ, বাঙালি সত্যের সাথে আপোসহীন
এক বিদ্রোহী-বীরের জাতি।

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!