জনাব তারেক রহমান’র ৩ শব্দের ছোট্ট উচ্চারণ “TAKE BACK BANGLADESH” গণতন্ত্রবাদ, সম-অধিকার, মহান স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতা।

আজ থেকে ২৫ মাস পূর্বে ২০২৩ সালের ২৮’শে জুলাই, শুক্রবার মধ্য বিকেলে, বাংলাদেশের চরম দুঃসময়ে ঢাকার নয়াপল্টনস্থ বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে স্থাপিত মঞ্চে সুদুর লন্ডন থেকে এক ঐতিহাসিক অডিও ভাষণ দিয়েছিলেন, প্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমান।
কয়েক মিনিটের ভাষণে মাত্র ৩ শব্দের ছোট্ট উচ্চারণ এতটাই অর্থবহ হয়ে ওঠে যে, যা আজও নীতি-আদর্শের ও শান্তির বারতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে গ্রহণীয় রাজনৈতিক নির্দেশিকা। আর এই ভাষণই ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। বাংলাদেশের দুঃসময়ে এই ভাষণ হয়ে ওঠে সবার নিকট আলোকবর্তিকা।
তখন ভোট, ভাত ও অধিকার আদায়ের আন্দোলনের কারণে বাংলাদেশ রক্তাক্ত। ২০০৯ সালের পর থেকে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের হাতে কয়েক হাজার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী মানুষকে হত্যা করা হয়। বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭১টি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এসব মামলা আসামির সংখ্যা ৪০ লাখের ওপরে। বিএনপির মামলার তথ্য ও সংরক্ষণ শাখা এ হিসাব দিয়ে জানিয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে গত ২৫ জুলাই পর্যন্ত এসব মামলা হয়েছে।
ইতিহাস থেকে একটি উদাহরণ আনতে চাই, আজ থেকে ১৬২ বছর পূর্বে ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বর আমেরিকার চরম দুঃসময়ে পেনসিলভেনিয়ার গেটিসবার্গে ভাষণ দিয়েছিলেন আব্রাহাম লিংকন। তিনি জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, Government by the people, for the people, of the people—স্কুলে পৌরনীতি বইয়ে গণতন্ত্রের এই সংজ্ঞাটা পড়েছিলাম, সবার মনে আছে নিশ্চয়ই।
ঠিক তেমনি বাংলাদেশের আলোকবর্তিকা জনাব তারেক রহমান তাঁর ৩ শব্দের ছোট্ট উচ্চারণ “TAKE BACK BANGLADESH” গণতন্ত্রবাদ, সম-অধিকার, মহান স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষার্থে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই সাহসী উচ্চারণ করেছিলেন পল্টন ভাষণে। আমি এই তিন শব্দের বক্তব্যকে বলব স্বাধীন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠতম ভাষণের একটি।
জনাব তারেক রহমান, যে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি ও চলমান সংগ্রামের ইতিহাসে অন্যতম চিরস্মরণীয় কীর্তি। সেদিন মেহনতী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের বিশাল জনসমাবেশে বক্তৃতা করেন জনাব তারেক রহমান। এই বক্তৃতার পর বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপস্থিত জনতা। এমনকি হাততালি দিতেও ভুলে যান তারা। জনাব তারেক রহমান, বক্তৃতার শুরুতে স্মরণ করেন পূর্ব-পুরুষদের, যারা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও সবার মাঝে সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গোড়াপত্তন করেন। মাঝে তার কণ্ঠে ফুটে ওঠে ঐ ফ্যাসিস্ট লুটেরাদের অত্যাচারের করুণ আর্তনাদ। আর বক্তৃতা শেষ করেন গণতন্ত্রবাদ, সম-অধিকার, মহান স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষার্থে ঐতিহাসিক শব্দের মাধ্যমে, তিনি বলেন- ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ যা কখনোই হারিয়ে যাবে না।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই শুভক্ষণে বলব, আমরা এদেশ ও জাতীর জন্য কি বলছি, কি করছি তার সামান্যই কিংবা কোনো কিছুই হয়ত কেউ মনে রাখবে না, তবে শহীদ ও বীর যোদ্ধারা যা করেছিলেন এই পবিত্র ভূমি কখনোই তা ভুলে যাবে না।
আমরা যারা এখন বেঁচে আছি তাদের বরং সেই অসমাপ্ত কাজে নিজেদেরকে উৎসর্গ করতে হবে, যেগুলো বাস্তবায়নের জন্য আমাদের পূর্ব পুরুষরা ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ২৪’র জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে লড়াই করেছেন, সেসব বীরযোদ্ধা ও মুক্তিকামী মজলুম মেহনতী শ্রমিক-ছাত্র-জনতার এমন মহান দ্বায়িত্ব অর্পণ করেছেন।
আমাদেরকে প্রিয় মাতৃভূমির, মহান কাজে উৎসর্গ হতে হবে, যে উদ্দেশ্যে তাঁরা তাদের আত্মত্যাগের শেষ বিন্দু পর্যন্ত দিয়েছেন ঐ হানাদার ও ফ্যাসিস্টদের থেকে মুক্তি পেতে, আসুন আমরা সেই সব মহিমান্বিত শহীদ’দের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত উৎসাহ নিই। যেন আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে পারি যে, এসব শহীদদের মৃত্যু বৃথা না যায়, যারা আহত, পঙ্গু অবস্থায় আছেন তাদের যে ত্যাগ ও দেশপ্রেম তা বৃথা না যায়। এই জাতি আবারো মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে নতুন ভাবে গড়ে উঠবে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার, জনগণের ভাতের অধিকার , জনগণের ভোটাধিকার যেন আর কখনোই বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে না যায়, এবং তা সর্বদা সমুন্নত থাকবে।
বাংলাদেশের অখণ্ডতা বজায় রাখা, গণতন্ত্রের মৌলিক কাঠামো প্রদান, প্রিয় মাতৃভূমির উন্নয়ন, সমাজের নিম্নস্তর থেকে উচ্চস্তর, সর্বক্ষেত্রে সমতার ভিত্তি স্থাপনে, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরাধিকার জনাব, তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১দফা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আদর্শ হয়ে উঠবে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের কাছে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করে শেষ করছি।
লেখকঃ লায়ন ফরিদ আহমেদ
রাজনীতিবিদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!