প্রিয়া সাহাঃ একটি প্রবল ঝড় তোলা মহিলা

প্রিয়া সাহাঃ একটি প্রবল ঝড় তোলা মহিলা
রণেশ মৈত্র (সাংবাদিকতায় একুশে পদক প্রাপ্ত)
সভাপতি মন্ডলীর সদস্য, ন্যাপ

সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলির জন্যে মহা আনন্দের ব্যাপার হলেও ১৯৭১ এ মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে রক্তস্রোতে পবিত্র হয়ে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ধর্মনিরপেক্ষতাকে অন্যতম রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে বাংলাদেশের বাহাত্তরের সংবিধান সর্ববাদী সম্মতভাবে গৃহীত হলেও শতাব্দীর পর শতাব্দী ব্যাপী বিরাজমান সাম্প্রদায়িকতা নামক দৃষ্টগ্রহটি কিছুতেই যেন বাঙালির পিছু ছাড়ছে না। তাই বলতেই হয় ঐ দুষ্টগ্রহটি বেশ প্রবলই বটে আজও বাংলার মাটিতে।

এ প্রসঙ্গে অতীতে অনেকবার কলম ধরেছি। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তীক্ষ্ন ভাষায় বক্তৃতা করে সেই ১৯৫২ সাল থেকে মাঠ কাঁপিয়েছি। লেখনীর তীক্ষ্নতা আর নৈতিক দৃঢ়তাকে সম্বল করে দীর্ঘ বক্তৃতা করে একদিকে যেমন মাঠ কাঁপিয়েছি-তেমনি আবার সুনিশ্চিত ও দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে অস্ত্র সজ্জিত দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে বিশাল জনসভা ও উচ্চরিত শ্লোগানে রাজপথ প্রকম্পিত করে মিছিল বের করে ঐ দাঙ্গাবাজ অন্তরালে বাস্তবে প্রতিরোধও করেছিল একাধিকবার। এবং তা পাকিস্তান আমলে যখন রাষ্ট্রটিই ছিল ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক দ্বিজাতিতত্বে বিশ্বাসী।

আমি কি একাই একাজ করতে সমর্থ হয়েছিল? তা কি আদৌ সম্ভব ছিল সেদিন? না, এক নই, বহুজন অর্থাৎ হাজার হাজার মানুষকে একত্রিত করে তাঁদেরকে নিয়ে।

এই যে হাজার হাজার মানুষকে সে দিনগুলিতে সমবেত করতে পেরেছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিশ্বাসে তাঁরা কারা? দ্বিধাহীন ভাবে বলছি, ঐ মিছিলগুলির কি সংগঠক কি অংশগ্রহণকারী তাঁদের অন্তত: ৯৫ ভাগই ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ভূক্ত যাঁরা সাম্প্রদায়িকতাকে সাম্প্রদায়িক মানসিকতাকে ঘৃণা করতেন চরমভাবে প্রতিরোধ করতেও এগিয়ে আসতেন সক্রিয়ভাবে। এখন প্রশ্ন জাগে ( যা এতদিন প্রকাশ্যে বলি নি) তখনকার ঐ হাজার হাজার মুসলিমরা তবে কি কোনভাবে কম মুসলমান ছিলেন? বা তাঁরা কি তবে কাফের ছিলেন? কিম্বা তাঁরা জামায়াতী ভাষায় “ভারতের বা হিন্দুদের দালাল” ছিলেন?

প্রশ্নগুলি আজকের বাস্তবতায় বড্ড বেশী প্রাসঙ্গিক।
শেষবার যখন সাম্প্রদায়িকতা প্রসঙ্গে লিখেছিলাম বেশ কয়েক বছর আগে, তখন ভেবেছিলাম অত:পর এ বিষয়ে আর লিখবো না ধারণা ছিল লিখতে হবেও না।

কিন্তু বিধি বাম। তাই কাগজ কলম হাতে তুলে নিতেই হলো সম্পূর্ণ নতুন এক প্রেক্ষিতে।
একজন অসাম্প্রদায়িক মহিলার, নাম প্রিয়া সাহা, কোনদিনই তাঁর সাথে পরিচয় ঘটে নি ঘটবার সম্ভাবনাও নেই-তিনি দেখি ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমূহের ও সংবাদপত্র সমূহের মাধ্যমে রীতিমত দেশটাকে কাঁপিয়ে তুলেছেন। বাধ্য হয়ে আমাকেও একটি পোষ্ট দিতে হলো এবং নিজেই তা শেয়ার করে দেশ-বিদেশে ছড়িয়েও দিলাম।

কিন্তু ফেসবুকের পোষ্ট এর চাইতে সংবাদপত্রের নিবন্ধের মূল্য শক্তি অনেক বেশী। তাই পত্রিকায় প্রকাশের বা অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশের লক্ষ্যে এই নিবন্ধটি লিখতে বসেছি। প্রিয় পাঠক-পাঠিকারা যাঁরা নিবন্ধটি পড়বেন তাঁরা যদি পক্ষে হোক বা বিপক্ষে হোক নিজ নিজ মন্তব্য লিখ পাঠান তবে খুবই উপকৃত হবো কারণ ভুলভ্রান্তির ঊর্ধে তো আমরা কেউই নই। ভুল কিছু ধরিয়ে দিলে উপকৃতই হবো-সংবিধানের সুযোগও পাব।

প্রিয়া সাহা একটি সংগঠনের নেত্রী বলে জানি। মানবাধিকার সংগঠনের মত সংগঠন সেটি। তবে তারা তাঁদের প্রধান দায়িত্ব হিসেবে বেছে নিয়েছেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুয নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো। বোধ করি সেই সংগঠনের সিদ্ধান্ত বা নিজ উদ্যোগ মোতাবেক তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাত করে বাংলাদেশে ব্যাপক হারে সংখ্যালঘু নির্য্যাতন এবং তার অশুভ পরিণতিতে কোটি কোটি হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টানের ব্যাপক হারে দেশত্যাগের বিষয় ট্রাম্পকে অবহিত করে এ বিষয়ে তাঁর সহানুভূতি ও বাংলাদেশ সরকার যাতে বিষয়টি অবহেলা না করে সংখ্যালঘু নির্য্যাতন বন্ধ করে তাঁদের দেশত্যাগ বন্ধের ব্যাপারে সক্রিয় হন সে ব্যাপারে প্রয়েঅজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
কথাটি প্রকাশ হওয়া মাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সমূহে প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে সে কী আলোড়নই না উঠেছে যেন এক প্রবল ঝড় বইতে শুরু করেছে।

দেখে বিস্মিত হচ্ছি, শুনে অবাক হচ্ছি যে প্রিয়া সাহা নামক ঐ মহিলা মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে দেশে সাম্প্রদায়িক নির্য্যাতনের কথা তুলে ধরায় তিনি নাকি “রাষ্ট্র দ্রোহিতামূলক অপরাধ করেছেন। বাংলাদেশকে আমরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রায় সিকি শতাব্দী জুড়ে অবিশ্রান্ত আন্দোলন ও সবশেষে নয় মাস ব্যাপী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ নারী-পুরুষ-শিশুর আত্মদানের বিনিময়ে অর্জন করেছি। রক্তের দামে কেনা এই রাষ্ট্রটি কি এতই ঠুনকো যে একজন মহিলা এক বিদেশী রাষ্ট্র প্রধানের কাছে দেশের সাম্প্রদায়িক নির্য্যাতন সংক্রান্ত তথ্যাদি তুলে ধরলো অমনি রাষ্ট্রটি ভেঙে পড়লো? যাঁরা ঝুড় তুলেছেন তাঁরা প্রকারন্তরে রাষ্ট্রটিকে ঠুনকো বলেই চিহ্নিত করতে চাইছেন। এ অপচেষ্টা ব্যর্থ হবে সন্দে নেই।

ব্যর্থ কিছুটা ইতোমধ্যেই তাঁরা হয়েছেন। প্রিয়া সাহাকে তাঁরা, যাঁরা তাঁর বিরুদ্ধে ঝড় তুলেছেন-যা তিনি আদৌ ছিলেন না। এ রকম আরও বহু ব্যর্থতা আসবে। তবে কিছুটা সময় অবশ্য নিতে পারে।
প্রিয়া সাহার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে যাওয়াকে আমি অবশ্য আদৌ সমর্থন করি না-যেমন কোনদিন বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের কাছে বিরোধী দলে থাকাকালে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা যখন ধর্ণা দিতে যান প্রতিদ্বন্দ্বীকে শায়েস্তা করার আবদার নিয়ে। প্রিয়া সাহা যে তথ্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে দিয়েছেন তাও সামান্য অতিরঞ্জন বলে আমার কাছে মনে হয় তবে তা মারাত্মক কিছু নয়।

আসলে সরকারের কাছেই তো তথ্য রয়েছে কি ভাবে কতজন ধর্মীয় সংখ্যা লঘু দেশান্তরিত হয়েছেন-missing population এ পরিণত হয়েছে-তা সরকারী দুটি কাগজ ঘাঁটলেই জানা যাবে। সরকার কি তথ্যগুলি প্রকাশ করবেন?

এক. ১৯৫৪সালের নির্বাচনে কত জন ধর্মীয় সংখ্যালঘুর নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল? আর
দুই. ১৯৭৩ এর ভোটার তালিকায় তাদের সংখ্যা কত ছিল?
তিন. ২০১৮র ডিসেম্বরের নির্বাচনের ভোটার তালিকায়ই বা কতজন ভোটার নির্দিষ্ট ছিলেন হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ হিসেবে?
এছাড়া জানা যেতে পারে ১৯৫১ থেকে শুরু করে এ যাবত যতগুলি আদম শুমারী হয়েছে তা থেকেও তো তথ্য পাওয়া যাবে। সরকার এই সকল তথ্যও প্রকাশ করবেন কি?

ফেসবুকে সম্প্রতি দু’পক্ষ থেকেই ঝড় তোলা হয়েছে। দেশত্যাগের কথা শুনে যারা তাকে মিথ্যা প্রচারণা বলে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তোলেন তাঁদের পক্ষ থেকে যেমন প্রথমে ঝড় তোলা হয়েছে তেমনই আবার তথ্য প্রমান সহ অন্যরাও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাল্টা ঝড় তুলে প্রকৃত সত্য উদঘাটনে তৎপর হয়েছেন। এমনই একটি তথ্য নীচে তুলে দিচ্ছি।

জনৈক সুমি খানের দেওয়া পোষ্ট থেকে জানা গেলঃ
“মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টা ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার কথোপকথন ভিডিও তে শুনলাম, ন্যূনতম ইংরেজী জ্ঞান নিয়ে যা বুঝলাম তাতে করে মনে হলো প্রিয়া সাহার বক্তব্যকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করা ছিল উদ্দেশ্যমূলক।

কয়েক মিনিটে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা ও অবস্থান নিয়ে প্রিয়া সাহার বক্তব্যকে যাঁরা রাষ্ট্রদ্রোহিতা মনে করছেন আর তাঁর বক্তব্যের প্রিক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে যাঁরা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করার খায়েশ রাখছেন, তাঁরা বুঝিয়ে দিচ্ছেন সংখ্যালঘুদের জন্য কতটা বিপদজনক ও নিরাপত্তাহীন পরিবেশ আজ বাংলাদেশে বিরাজমান।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে বিভিন্ন দেশের সংখ্যালঘুদের একজন একটি ভোট হিসেবে প্রিয়া সাহাও কথা বলার সুযোগ পান। তিনি তাঁর দেশের, এমন কি সংখ্যালঘু নিপীড়নে বিগত বা বর্তমান কোন সরকারের বিপক্ষে কিছুই বলেন নি। তিনি সময়কাল ধরেও বলেন নি। ৩৭ মিলিয়ন মানুষ উঠে যাওয়ার কথা এবং বাংলাদেশে বসবাসরত ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা নিশ্চিত সমেত নিজ দেশে বসবাস করতে চেয়েছেন, বিচারহীনতার কথা ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেছেন।

আমরা প্রায়শই দেখেছি, দেখি, মার্কিনী বা বিদেশীদের কাছে দেশের বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ ও নালিশ রেখে গেছেন খালেদা জিয়া সহ আরও অনেকে, এমন কি লিখিতভাবেও অনেককে অনেক কথা জানাতে দেখেছি। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে সে সব নিয়ে কোন তদন্ত/মামলা হয়েছে কি?

প্রিয়া সাহা ভিটে মাটি ছাড়া হয়েছেন আরও অসংখ্যের মত। ৩৭ মিলিয়ন সংখ্যলঘু উঠে গেছে, গেছেই তো। স্বীকার করতে লজ্জা লাগলে চলবে কেন। বিশদ তথ্যের দিকে তাকানো যাক।

বাংলাদেশে ১৯৪১ সালে হিন্দু জনসংখ্যা ছিল শতকরা ২৮ ভাগ। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অভ্যহিত পরে তা শতকরা ২২ ভাগে এসে দাঁড়ায়। এরপর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত অত্যাচার এবং নিপীড়নের ধারাবাহিকতায় দেশটিতে ক্রমশ হিন্দুদের সংখ্যা কমতে থাকে। ১৯৬১ সালে ১৮.৫ ভাগ, ১৯৭৮ সালে কমে দাঁড়ায় ১৩.৫%, ১৯৮১ সালে ১২.১%, ১৯৯১ সালে ১০% এ এসে দাঁড়ায়। সাম্প্রতিক সময়গুলো হিন্দুদের হার কমে ৮ ভাগের নীচে নেমে এসেছে বলে অনুমিত হয়। ২০১১ সালে পরিচালিত জরীপ বলছে, ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সালের মধ্যে প্রায় ১০ লাখ হিন্দু বাংলাদেশ ত্যাগ করেছে।
১৯৬৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পাঁচ দশকে ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬১২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। আর প্রতিদিন দেশ ছাড়ছেন গড়ে ৬৩২ জন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারাকাতের “বাংলাদেশে কৃষি ভূমি জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি শীর্ষক এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণা টিতে উল্লেখিত করা হয়েছে, এই নিরুদ্দেশ প্রক্রিয়ার প্রবণতা বজায় থাকলে আগামী দুতিন দশক পরে এদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কোন মানুষ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। অর্থনীতিবিদ আপবুল বারাকাত বলেন, হিন্দুদের প্রায় ২৬ লাখ একর জমি জবরদখলে রয়েছে। অর্পিত সম্পত্তি আইনের জেরে প্রতিদিন গড়ে ৬৩০ জন হিন্দু বাংলাদেশ ছাড়ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আর্ন্তজাতিক কমিশনের ২০১৭ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল বাংলাদেশে অবৈধ ভূমি অঘিগ্রহনের বিষয়টি সাধারণভঅবে ভূমি দখল হিসেবে পরিচিত। এসব ক্ষেত্রে মালিকানা জনিত ব্যাপক বিরোধের কথা বলা হয়। বিশেষ করে হিন্দু ও খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীরা এর শিকার হন।

এই তথ্যগুলির পরে আর তেমন একটা কথা থাকার কথা নয়। সহজ কথায়, কোর্ট, কাচারী, অফিস-আদালত, ব্যবসা বাণিজ্য, কৃষক, শ্রমিক, কামার-কুমারদের অতীত ও বর্তমান সংখ্যার দিকে তাকালে এই দেশত্যাগের ভয়াবহতা চোখে পড়তে বাধ্য। লক্ষ লক্ষ একর দেবোত্তর সম্পত্তিই বা গেল কোথায়।

রাষ্ট্রদ্রোহিতা অপরাধ। সর্বাপেক্ষা মারাত্ম অপরাধ যার শাস্তি মৃত্যুদ- হলেও তাতে আপত্তি করার কিছু নেই। কিন্তু সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণ করতে হবে যে অভিযুক্ত কৃত অপরাধটি রাষ্ট্রদ্রোহিতা।

জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখি, আমরা সশস্ত্র যুদ্ধ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আনলাম। এটা নিশ্চয়ই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রপাষ্ট্রদ্রোহিতা অপরাধ। কিন্তু আইউব সরকারের, ইয়াহিয়া সরকারের জিয়া সরকারের এরশাদ সরকারের বা খালেদার সরকারের বা বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সমালেচনা বা নিন্দা করার অধিকার সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়েছে। এখানে প্রিয়া সাহা তাও করেন নি। বিদেশে সরকারী কোন গোপন তথ্যও প্রচার করেন নি। সাম্প্রদায়িক সহিংসতার অপরাধের খবর প্রতিদিনই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হচ্ছে।

সরকার আর সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলি প্রিয়া সাহা তথা ধর্মীয় হয়ে সরকার যদি যারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অহরহ ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিন তবেই প্রিয়া সাহা বা কাউকে যেন দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে আর বলতে না হয় তা নিশ্চিত করা জরুরী প্রয়োজন।

২০০১ সাল ও তার পরবর্তী সকল সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে মামলা দায়েল করে অপরাধীদের শাস্তিও নিশ্চিত করুন।


• প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!