আজ পবিত্র আরাফা দিবস

আজ বুধবার পবিত্র হজ। “লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়ালমুল্ক।” অর্থাৎ—‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।” এই ধ্বনিতে আজ মুখরিত হবে আরাফাতের ময়দান।

তালবিয়া পাঠ করে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজের উপস্থিতি জানান দিয়ে পাপমুক্তির আকুল বাসনায় লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান (হাজি) আজ মিনা থেকে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাঁরা আরাফাতের ময়দানে থাকবেন। কেউ পাহাড়ের কাছে, কেউ সুবিধাজনক জায়গায় বসে ইবাদত করবেন। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ, রহমত প্রাপ্তি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহতায়ালার কাছে প্রার্থনা জানাবেন হাজিরা। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের এক অনুপম দৃশ্যের অবতারণা হয় আরাফাতের ময়দানে। প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর আগে এ আরাফাত ময়দানেই রাসূল (সা.) লক্ষাধিক সাহাবির সামনে ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। হাজিরা আজ আরাফাতের বিশাল প্রান্তরে অবস্থান করে মসজিদে নামিরাহ থেকে হজের খুতবা দেবেন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল শাইখ। এখানে তারা এক আজানে জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন।

বুধবার সন্ধ্যায় মুজদালিফার উদ্দেশ্যে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করবেন হাজিরা। মুজদালিফায় পৌঁছে আবারও এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাতযাপন করবেন। সেখান থেকে তারা মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। বৃহস্পতিবার সকালে ফজরের নামাজ শেষে আবার ফিরে আসবেন মিনায়। এদিন জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডনের মধ্য দিয়ে ইহরাম ত্যাগের মাধ্যমে হজের মূল কার্যক্রম শেষ করবেন। এরপর পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতা শেষ করবেন।

হজ শব্দের আভিধানিক অর্থ “ইচ্ছা করা”। ইসলাম ধর্মের পাঁচ স্তম্ভের একটি হচ্ছে হজ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশ থেকে এবার প্রায় ২৫ লাখ মুসল্লি হজ পালন করছেন। বাংলাদেশ থেকে গেছেন এক লাখ ছয় হাজারের বেশি হাজি।

মঙ্গলবারই শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিক। সোমবার সন্ধ্যার পর মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন মুসল্লিরা। মঙ্গলবার দিনভর মিনার তাঁবুতে ইবাদতে মগ্ন থাকেন হাজিরা।

এদিকে হাজিদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ। তিনি হজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের এই নির্দেশ প্রদান করেন।

আরাফাত, মিনা ও মুজদালিফায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় এক লাখ বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী ও সহস্রাধিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নকর্মী। আর হাজিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে ২৫টি হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!