একজন বাহাজ উদ্দিন স্যারঃ অনুপ্রেরণার এক জীবন্ত ইতিহাস
এম এস ইসলাম আকাশ, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
একটি নাম,একটি জীবন্ত কিংবদন্তী। মধুপুর শহীদ স্মৃতিকে আজকের দেশ সেরা শহীদ স্মৃতিতে পরিনত করার পিছনে যাদের অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে তাদের মধ্যে অন্যতম আমাদের পরম শিক্ষাগুরু মানুষ গড়ার মহান কারিগর জনাব, বাহাজ উদ্দীন ফকির স্যার। এই ৩৮ বছরের চাকরিজীবনে এক দিনও তিনি প্রাপ্য ছুটি কাটাননি। কাল বুধবার এ স্কুলে শেষ কার্য দিবস এই শিক্ষকের। মধুপুর উপজেলার গোপদ গ্রামের এক কৃষক পরিবারে ১৯৫৭ সালে বাহাজ উদ্দিন ফকিরের জন্ম। টানাটানির সংসার, তাই ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠেই গৃহশিক্ষকের কাজ শুরু করেন। ১৯৭৩ সালে মধুপুর রানি ভবানি হাই স্কুল থেকে এসএসসি, মধুপুর কলেজ থেকে এইচএসসি এবং ধনবাড়ী কলেজ থেকে স্নাতক (বিএ) পাস করেন। ১৯৭৯ সালের ১ জুন মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন বাহাজ উদ্দিন। ৩৮ বছরের চাকরিজীবনে হাসি-কান্নার অনেক ঘটনা ঘটে গেছে বাহাজ উদ্দিন স্যারের জীবনে। কিন্তু এসব ঘটনা তাঁকে স্কুলে সময়মতো হাজির হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি। আমাদের জানা অনেক ঘটনার একটি এখানে উল্লেখ করছি।এতেই তার কর্মনিষ্ঠাতার স্বরুপ সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। সেটি হলো ২০০৩ সালের ২৭ জুন তাঁর বাবা আবদুল হামিদ ফকির মারা যান। সেদিন ছিল শুক্রবার। দাফন সম্পন্ন করে পরদিন স্কুলে সময়মতো হাজির হয়ে পড়েন। এ ছাড়াও আরো অনেক ঘটনা আছে সেগুলো উল্লেখ আরেকদিক করব। আমরা যারা তার সরাসরি ছাত্র ছিলাম তারা জানি তার কি অসাধারন অনুপ্রেরনার শক্তি ছিল।তার অমায়িক হাসি যে কোন ছাত্রকেই তার কাজটি সঠিকভাবে হাসিলের মহার্ঘ অস্ত্র। তিনি যদিও ইংরেজীর শিক্ষক ছিলেন তথাপি আমার মত মাঝারি মাপের ছাত্রদেরকে বাংলায় দিয়েছিলেন হাতখুলে লেখার মত অসীম অনুপ্রেরণা। আজ আমি যে টুকটাক লেখালেখি করি সেটা উনারই অনুপ্রেরণার ফসল। আজকের এই দিনে স্যারের প্রতি জানাই সশ্রদ্ধ সালাম।মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে প্রার্থনা করি উনি আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন হাজার বছর।সবার মাঝে হয়ে থাকুন অনুপ্রেরনার এক মহান আদর্শ হয়ে।
- কাগজটুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

