সারাদেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা

অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে থাকছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় টহল ও তল্লাশি চালাচ্ছেন সেনা, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ভোটের মাঠের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় সাত লাখ সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন।

নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকালে নিজ নিজ এলাকায় সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন তারা। কেন্দ্রে সহিংসতা ও অনিয়ম হলে কঠোর হাতে তা দমনে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। শনিবার বিকেলে নির্বাচনের সর্বশেষ প্রস্তুতি জানাতে নির্বাচন কমিশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি পুলিশকে এ নির্দেশ দেন।

ভোটের দিন বিএনপি-জামায়াত জোট সারাদেশে নাশকতা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ যদি কোনো বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চায়, তবে তাকে কঠোরহস্তে দমন করা হবে। ভোটাররা যাতে নিরাপদে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আবার নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেভাবেই ডিএমপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, জামায়াত প্রভাবাধীন এলাকায় বাড়তি নজর রাখা হচ্ছে। এছাড়া সংখ্যালঘুরা যাতে নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সেই লক্ষ্যে কাজ করছে প্রশাসন। সীমান্তের যেসব এলাকায় অতীতে জামায়াত-শিবির তাণ্ডব তৈরি করেছিল সেখানে পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবির বাড়তি টহল রয়েছে। সেখানে সেনাবাহিনীও সতর্ক দৃষ্টি রাখছে।

গোয়েন্দারা বলছেন, দেশের কোনো এলাকায় অতর্কিতভাবে সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। কেউ আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করতে পারে। এমনকি ভুয়া ব্যালট পেপার ও ভুয়া বুথ তৈরি করে ভিডিও বানিয়ে গুজব সৃষ্টি করতে পারে কেউ কেউ। সে ব্যাপারে একাধিক সংস্থা তাদের অনলাইন প্যাট্রল জোরদার করেছে। এছাড়া জঙ্গিরা যাতে কোনো ধরনের তৎপরতা চালাতে না পারে, সে ব্যাপারে তীক্ষষ্ট নজর রাখা হচ্ছে।

নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে রাজধানী কার্যত ফাঁকা হয়ে গেছে। অনেকেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে গ্রামে গেছেন। ফাঁকা ঢাকায় শনিবারও নিরবচ্ছিন্নভাবে টহল দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চেকপোস্টের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সাদা পোশাকে নজর রাখছেন গোয়েন্দারা। পাড়া-মহল্লায় পুলিশ টহল দিয়ে দোকানপাট গভীর রাত পর্যন্ত খোলা না রাখার অনুরোধ করছেন।

এবারের নির্বাচনে সেনাবাহিনীর ৫০ হাজার, পুলিশের দেড় লক্ষাধিক, র‌্যাবের ১০ হাজার ও এক হাজার ১২৭ প্লাটুন বিজিবি সদস্যসহ বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় সাত লাখ সদস্য মাঠে রয়েছেন। যে কোনো নৈরাজ্য ঠেকাতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সোয়াট ও বোমা ডিসপোজাল ইউনিটকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। নিরাপত্তার প্রয়োজনে হেলিকপ্টার ব্যবহার করবে র‌্যাব।

একাধিক জেলার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এরই মধ্যে নির্বাচনকালীন সময়ে যার যার দায়িত্ব সম্পর্কে সকল পুলিশ সদস্যকে ব্রিফ করা হয়েছে। যারা সহিংসতা ঘটাতে পারে তাদের তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। রাজধানীর মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি) গঠন করা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থার পৃথক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। খোলা হয়েছে জয়েন্ট কন্ট্রোল রুম। কোনো ঘটনা ঘটলে কন্ট্রোল রুম থেকেও মাঠ পর্যায়ে যাবে নির্দেশনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!