পঞ্চাশ দিন পর দুর্ভোগ না মিটলে চার রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে সাজা ভোগের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ সামনে এলেন। জাতির উদ্দেশ্যে বক্তৃতাও দিলেন। কিন্তু জনতার কৌতূহল আর প্রশ্নগুলির জবাব পাশ কাটিয়েই ভোটের আগে ‘কল্পতরু’ হয়ে ওঠার চেষ্টা করলেন নরেন্দ্র মোদী। আর তা করতে গিয়ে আগাম ধার নিলেন আর এক মাস পরে হওয়া অরুণ জেটলির বাজেট।

কাল ৫০ দিনের মেয়াদ শেষ হলেও ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার বিধিনিষেধ অব্যাহত। আজ মোদীর বক্তৃতা জুড়ে কৌতূহল ছিল, ৫০ দিনে অর্থনীতির লাভ কী হল? কালো টাকা কত এল? দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদ, জাল টাকা- এসব কী ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেতে চলেছে? আর সবথেকে বড় প্রশ্ন, এই ৫০ দিনের দুর্ভোগ মেটার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট ভাবে কী বলছেন? নতুন বছরে পা দেওয়ার আগে এর একটিরও জবাব আজ এল না নরেন্দ্র মোদীর কাছ থেকে। বরং অরুণ জেটলির বাজেট আগাম ঘোষণা করে তিনি ভোটের আগে নিজের ক্ষয় হতে থাকা ‘গরিব দরদী’ ভাবমূর্তিতে নতুন করে শান দিতে চাইলেন। পুরনো কিছু প্রকল্পকেই ঘষেমেজে রাজনৈতিক মোড়কে কাছে টানতে চাইলেন গরিব, নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তকে। নোট-বাতিলে রুষ্ট দলের বৈশ্য ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে চাইলেন।

সামনের সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণার আগেই লখনউতে সভা করতে যাচ্ছেন মোদী। নোট-বাতিলের সিদ্ধান্ত যে ব্যুমেরাং হতে পারে, তা ধরে নিয়েই তিনি আসল প্রশ্ন ছেড়ে ঘোষণার মোড়কে মন জয় করতে চাইলেন। যার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় শহর ও গ্রামে ঘর বানানোর জন্য ঋণের সুদে বাড়তি ছাড়, কৃষি ঋণের সুদে বাড়তি ছাড়, ৩ মাসে ৩ কোটি কৃষক ক্রেডিট কার্ডেই কেনা-বেচার বন্দোবস্ত করতে রুপে কার্ডে পরিণত করা, রোজগার বাড়াতে সরকার গ্যারান্টার হয়ে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য ক্রেডিট গ্যারান্টির পরিমাণ ১ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ কোটি টাকা করা, মুদ্রা যোজনার ফায়দা দ্বিগুণ করা, গর্ভবতী মহিলার জন্য ৬ হাজার টাকা ৬৫০ জেলায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা, বয়স্কদের জন্য দশ বছরে সাড়ে সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত ৮ শতাংশ সুদ সুনিশ্চিত করে মন জয়ের আপ্রাণ চেষ্টা করলেন মোদী।

উৎসঃ আনন্দবাজার।