আজও কেন কেউ উঠতে পারেননি মহাদেবের কৈলাশে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

শিবের বাসস্থান কৈলাশে। পুরাণের গল্পের মাধ্যমে সকলের এই তথ্য জানা। কিন্তু বাস্তবে কৈলাশ পর্বত নিয়ে রয়ে গেছে অনেক প্রশ্ন। মাউন্ট এভারেস্টে মানুষের পা পড়লেও কেন কৈলাশ নিয়ে এত রহস্য? কৈলাশকে কেন অলৌকিক স্থান বলে মনে করা হয়?

শোনা যায় বরফে ঢাকা এই কৈলাস পর্বত ছিল আদিযোগী শিব ও তাঁর সঙ্গী শক্তির বাসস্থান। কে এই আদিযোগী শিব? যোগী সংস্কৃতিতে শিবকে ভগবান বলে না, একজন যোগী হিসেবেই মানা হয়। যোগসাধনার আরম্ভ করেছিলেন আদিযোগী শিব। যোগীরা মনে করেন প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে আদিযোগী শিব হিমালয়ের উপর উদ্দাম নৃত্য নেচে নিজেকে যোগী হিসেবে পরিপূর্ণ রূপ দিয়েছিলেন। দীর্ঘ তপস্যা ও যোগ সাধনা করে নিজেকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ করেছিলনে এবং পার্থিব আকাঙ্খা থেকে মুক্ত করেছিলেন।

হিন্দু নদ, শতদ্রু নদ, ব্রহ্মপুত্র নদ, কর্নালি নদী বেষ্টিত এই কৈলাশকে হিন্দুরা সবথেকে পবিত্র পর্বত বলে মনে করেন। এই পর্বতের আর একটি রহস্যময় দিক হল এই পর্বতটি দেখলে মনে হয় যেন বিশাল এক পিরামিড। রাশিয়ার বিজ্ঞানী কৈলাশ সম্পর্কে বলেছিলেন যে এটি আসলে কোনও পর্বত নয়। কোনও মানুষের তৈরি বিশাল পিরামিড। কিন্তু এত বড় পিরামিড তৈরি করবেন এমন মানুষ কী পৃথিবীতে কোনও দিন ছিলেন? এই নিয়েও প্রশ্ন থেকে গিয়েছে মানুষের মধ্যে।

কৈলাশে পর্বতে গেলে নাকি দ্রুত গতিতে বয়স বাড়ে। বিগত কয়েক বছরে কেউ কৈলাশে পৌঁছতে পারেননি। বর্তমানে জীবিতদের মধ্যে পৌঁছেছিলেন শুধু তিব্বতের সাধু মিলারেপা। উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টে যারা চড়েছেন, তারা পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছেন কৈলাশে উঠতে। তিনিই জানিয়েছেন কীভাবে যেন চোখের নিমেশে বয়স বেড়ে যায়। দু’সপ্তাহে যে বয়স বাড়ে, তা যেন ১২ ঘন্টাতেই কৈলাশের উপর বেড়ে যায়। কী করে এমন সম্ভব তার হদিস এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। শোনা যায় যে কৈলাশ নাকি নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে প্রায়। সেজন্যই কৈলাশের শৃঙ্গে বহু মানুষ পৌঁছতে ব্যর্থ হয়েছেন।

মানস সরোবর (গড লেক) এবং রাক্ষস তাল সরোবর (এভিল লেক) ঘিরে রয়েছে কৈলাশকে। কৈলাশের পাশে এই জোড়া সরোবর থাকারও একটি কারণ আছে। প্রত্যেকের মধ্যেই ভালো এবং খারাপ রয়েছে। অশুভ বা শয়তান বলে কিছু হয় না। এসবই মানুষের মধ্যে বিরাজ করে। হিন্দু যোগস্বাস্ত্রে কৈলাশের পাশে এই সরোবর দুটিকে এভাবেই ব্যাখ্যা করা হয়।

কৈলাশ যখন বরফ পড়ে তখন তা ‘ওম’ চিহ্নের আকার নেয় বলে শোনা যায়। এর পিছনে তা এখনও অজানা। ‘ওম’ ধ্বনিকে হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈনদের সবথেকে পবিত্র ধ্বনি বলে মনে করা হয়। শুধু ওম নয়, স্বস্তিকা চিহ্নেরও অস্তিত্ব পাওয়া যায় এই কৈলাশে। রোজ সন্ধ্যায় যখন সূর্য অস্ত যায় তখন কৈলাশের উপর একটি ছায়া পড়ে। এই ছায়া ‘স্বস্তিকা’ চিহ্নের আকার নেয়। মনে করা হয় সূর্য দেবতা কৈলাশকে এই চিহ্নের মাধ্যমে সম্মাান জানাচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!