রাজধানীর হোল্ডিং ট্যাক্স ১০ গুণ পর্যন্ত বেড়েছে

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন রাজধানীর বাসিন্দাদের বাড়ির হোল্ডিং ট্যাক্স  ক্ষেত্র বিশেষে ১০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়েছে। নগরীর বাসিন্দারা উপায় খুঁজতে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসগুলোতে ধরনা দিচ্ছেন। বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, ট্যাক্স বাড়ানোর হার অস্বাভাবিক ও সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে এ ট্যাক্স বাড়ানো হয়েছে। এতে ঘরভাড়া বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে। তারা অবিলম্বে ট্যাক্স কমানোর দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা দক্ষিণের উত্তর বাসাবোর এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করে জানান, ২০১০ সালে তাদের বাসার সর্বশেষ ট্যাক্স ধার্য করা হয়েছিল ১৮ হাজার টাকা। কিন্তু এবার ট্যাক্স ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ৭২০ টাকা। অর্থাৎ সাত বছরে তার ট্যাক্স বেড়েছে সাড়ে ৪২ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ট্যাক্স ধার্য করার আগে শুধু আমাদের বাড়ির চারপাশে একবার মাফজোখ করেছিল সিটি করপোরেশনের লোক। আমাদের কাছেও কিছু জিজ্ঞেস করেনি। ঘরে বসে এটা তৈরি করেছে। একবারে এত টাকা বাড়িয়ে আমাদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। বিষয়টি মেয়রের দেখা উচিত।

শান্তিনগরের এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগে আমাদের হোল্ডিং ট্যাক্স ছিল ১০ হাজার টাকা। এবার ধার্য করা হয়েছে ৯৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রায় ১০ গুণ বাড়ানো হয়েছে ট্যাক্স। তিনি বলেন, এক দিকে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির দাম বাড়ছে। সামনে আরো বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। চাল-ডাল থেকে সবকিছুর দামই বাড়তি হয়ে গেছে। তার ওপর এভাবে ট্যাক্স বাড়ানোর কারণে এখন আমাদেরও ভাড়াটিয়াদের ভাড়া বাড়িয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া উপায় নেই।

জানা যায়, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নাগরিকদের হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়াতে বছর খানেক আগে তৎপরতা শুরু করে। তখন সিটি করপোরেশনের মাঠ পর্যায়ে কাজ করা উপকর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে। এর মধ্যে গত ২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উপকর কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জমাদ্দার সার্কুলার রোডের (ভূতের গলি) এক বাসা থেকে ঘুষ নেয়ার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কাছে হাতেনাতে ধরাও পড়েন। তা ছাড়া গত বছরের ৮ আগস্ট ট্যাক্স বাড়ানোর বৈধতা নিয়ে দুই সিটির দুইজন বাসিন্দা আদালতে রিটও করেন।

এতে আদালত ট্যাক্স বাড়ানোর প্রক্রিয়া স্থগিত রাখেন। এর এক বছর পর সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট আদালতের এক আদেশে এ স্থগিতাদেশ উঠে যায়। এরপর নতুন করে তৎপরতা শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। উত্তর সিটি করপোরেশন তাদের দুইটি অঞ্চলের কাজ আগেই শেষ করেছে। এখন তারা নতুন করে বাকি তিনটি অঞ্চলে ট্যাক্স নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে। একইভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন তাদের দুইটি অঞ্চলের ট্যাক্স নির্ধারণের কার্যক্রম শেষ করলেও নাগরিকদের কাছে চিঠি পাঠানো বন্ধ ছিল। স্থগিতাদেশ উঠে যাওয়ার পর এখন তারা বাসিন্দাদের কাছে চিঠি পাঠানো শুরু করেছে। আর এ চিঠি হাতে পেয়ে মাথায় হাত পড়েছে নাগরিকদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!