শরীয়তপুরে ১শ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ৭৯ জন

অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

শরীয়তপুরে মাত্র ১শ টাকায় পুলিশ কনেস্টবল পদে নিয়োগ পেয়েছে দরিদ্র পরিবারের ৭৯ জন ছেলে-মেয়ে। শারীরিক, লিখিত ও ভাইভা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পর রোববার (৩০ জুন) বিকাল ৫টায় নিয়োগপ্রাপ্ত ৭৯ জনের নাম ঘোষণা করেন নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন।

এ সময় নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান ও গাজিপুরের সহকারী পুলিশ সুপার মামুন উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া পুলিশ বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৪ জুন শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্সে প্রায় ১ হাজার চাকরী প্রার্থী শারীরিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে শারীরিক পরীক্ষায় ৩৮২ জন উত্তীর্ণ হয়ে ২৫ জুন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১১৬ জনের মধ্যে ২৯ জুন ভাইভা পরীক্ষায় চুরান্তভাবে ৭৯ জন উত্তীর্ণ হয়। পরে পুলিশ সুপার কনেস্টবল পদে এই ৭৯ জনের নাম ঘোষণা করেন। এদের অধিকাংশই দিনমজুর, রিক্সা ভ্যান চালক ও খেটে খাওয়া পরিবারের সন্তান।

মাত্র ১শ টাকায় দরিদ্র পরিবারের ৭৯ জন কনেস্টবল পদে চাকরী পেয়ে অনেকেই খুশিতে কেঁদে ফেলেন।

সবার সাথে শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়নের শৌলা গ্রামের দরিদ্র ভ্যান চালক নুরুল আমিন মুন্সীর ছেলে নূর মোহাম্মদের নিয়োগ হয়েছে পুলিশ কনস্টেবল পদে। চাকরী পেয়ে খুশিতে কান্না ধরে রাখতে পারলেন না ন‚র মোহাম্মদ।

নূর মোহাম্মদ বলেন,আমি একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান। আমার ভাবা একজন সামান্য ভ্যান চালক। আমি কখনো ভাবিনি আমার চাকরী হবে। অনেকে অনেক ধরনের কথা বলছে। টাকা ছাড়া চাকরী হবে এ কথাও বলছে।

আমি আল্লাহর ওপর ভরসা করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করি। আজ আমার চাকরী হয়েছে। ১শ টাকা ছাড়া আমার কোন টাকা লাগে নাই। এজন্য আজকে আমি খুশি ও আনন্দিত। বিনা টাকায় চাকরী দেওয়ার জন্য আমি পুলিশ সুপার স্যারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

নূর মোহাম্মদের মতো আরো অনেকেই টাকা ছাড়া চাকরী পাওয়ার গল্প শোনান। যারা সবাই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে। চাকরী পেতে কোন টাকা না লাগায় তারা সকলেরই পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন বলেন, আজ যারা এখানে চাকরী পেয়েছে তারা সকলেই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এই দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বিনা টাকায় চাকরী দিতে পেরে আমি গর্বিত। কারণ যাদের টাকা পয়সা আছে, তারা অনেক ভাবে আরাম আয়েশ করতে পারে। দামি জামা প্যান্ট জুতা পড়তে পারে।

ভালো খাবার খেতে পারে, ঘুরতে পারে। কিন্তু যারা দরিদ্র পরিবারের সন্তান তাদের ইচ্ছা থাকলেও ভালো দামি একটা শার্ট কিনতে পারে না, ইচ্ছে করলেই দাবি খামার খেতে পারে না। তাই আমি এই দরিদ্র ছেলে-মেয়েদের চাকরী দিতে পেরে গর্ববোধ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!