সুন্দরী সুমির প্রেমে সাহাবুদ্দিন নাগরীর সর্বনাশ

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমস কর্মকর্তা শাহাবুদ্দীন নাগরীর সঙ্গে নূরানী আক্তার সুমির পরিচয় বছরখানেক আগে। এই সুমিকে প্রথম দেখাতেই প্রেমে মজে যান শাহাবুদ্দীন নাগরী। সম্পর্ক ধরে রাখতে নাগরী অবৈধ উপায়ে অর্জন করা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করেন সুমির জন্য।

সর্বশেষ ১৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গাড়ি কিনে দিয়েছেন। তাদের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, শাহাবুদ্দীন দিনের অনেক সময়ই সুমির বাসায় কাটাতেন।

ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম হত্যা মামলায় পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে, স্বামী বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরই ফোনে নাগরীকে বাসায় ডেকে নিতেন সুমি। সন্ধ্যায় স্বামী ফেরার আগ পর্যন্ত দুজনে বাসার মধ্যে সময় কাটাতেন। এক বছর ধরে চলছিল এই পরকীয়া। এতে ফ্ল্যাটের দারোয়ানরা সন্দেহ করলেও তাদের চুপ থাকার জন্য বকশিশ দিতেন নাগরী।

ইতিমধ্যে এ মামলায় শাহাবুদ্দীন নাগরী, তার প্রেমিকা সুমি ও গাড়িচালক সেলিমকে গ্রেফতার করে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, শাহাবুদ্দীন নাগরী পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুললেও নূরানী আক্তার সুমি এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কখন, কীভাবে, কার মাধ্যমে নাগরীর সঙ্গে তার পরিচয় এবং প্রণয় গড়ে ওঠে তা পুলিশকে জানিয়েছেন।

তারা আরও জানায়, মূলত স্বামী নূরুল ইসলামের ব্যস্ততার সুযোগেই সুমির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ পান নাগরী। বিষয়টি সম্প্রতি জানতে পারেন ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম। এ নিয়ে সুমির সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডাও হয়। তবে নাগরীর সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে সুমি যুক্তি দেখান, নাগরী খুব প্রভাবশালী কাস্টমস কর্মকর্তা। তিনি রিটায়ার্ড করলেও অনেক টাকার মালিক হবেন। স্বামীর ব্যবসায়িক উন্নতিতে নাগরী অনেক সহযোগিতা করতে পারবেন। স্ত্রীর এ ধরনের আগ্রহে নূরুল ইসলামের চুপসে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।

জিজ্ঞাসাবাদে সুমির সঙ্গে পরকীয়া এবং তার স্বামীকে হত্যার বিষয় স্বীকার করছেন না নাগরী। তবে পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের দারোয়ান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও চালক সোহাগের মাধ্যমে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে প্রতিদিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ফ্ল্যাটেই চলত সুমি-নাগরীর পরকীয়া। এমনকি সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার যেদিন নূরুল ইসলাম হত্যা হয় সেদিনও নাগরী ওই বাসায় ছিলেন ঘণ্টা চারেক। বিকাল সোয়া ৩টায় ঢুকে বের হয়ে যান সন্ধ্যা সোয়া ৭টায়। তার পরই ওই বাসার খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয় নূরুল ইসলামের লাশ।

হত্যাকাণ্ডের দিন কী জন্য ওই বাসায় গিয়েছিলেন— পুলিশের এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাবুদ্দীন নাগরীর জবাব ছিল, ‘আমি ওই বাসায় গিয়ে দেখি নূরুল ইসলামের বেডরুম ভিতর থেকে তালাবদ্ধ। তিনি দরজা লাগিয়ে ভিতরে একাই ছিলেন। আমি আর সুমি পাশের রুমে বসে গল্প করছিলাম।’

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার এলিফ্যান্ট রোডের ১৭০/১৭১ ডোম-ইনো অ্যাপার্টমেন্টে নিজ বাসার বেডরুমে ব্যবসায়ী নূরুল ইসলামের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পরদিন ১৪ এপ্রিল নিউমার্কেট থানায় নিহতের বোন শাহানা রহমান কাজল একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় নূরানী আক্তার সুমি, শাহাবুদ্দীন নাগরী, চালক সেলিম ও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রথম দিনই ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর নিকুঞ্জে শাহাবুদ্দীনের বাসা নজরদারিতে রাখেন। বাসায় তার অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর সোমবার সকালে সেখান থেকে আটক করা হয় শাহাবুদ্দীন নাগরীকে। গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকা মহানগর হাকিম ওয়ায়েজ কুরুনী খান পাঁচ দিন মঞ্জুর করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!