পঞ্চগড়ে মৃত্যুর পর মুক্তিযোদ্ধার রাষ্ট্রীয় মর্যাদা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে চিঠি

নাজমুস সাকিব মুন, পঞ্চগড় প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

দিনাজপুরের পর এবার পঞ্চগড়ে ছেলের চাকরি না হওয়ায় আরেক মুক্তিযোদ্ধা বাবা ক্ষোভে মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা না দিতে জেলা প্রশাসক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবর এই চিঠি প্রেরণ করেন আটোয়ারী উপজেলার কাটালী মীরপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন। ওই চিঠির অনুলিপি মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরেও পাঠিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে তিনি বলেন, সম্প্রতি আটোয়ারী উপজেলার ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে নিয়োগ দেয়া হয়। আমার সন্তান দপ্তরি কাম নৈশ প্রহরী পদে আবেদন করেন এবং মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়। আমার সন্তান সুযোগ্য ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটায় প্রার্থী হওয়ায় তার চাকরি নিশ্চিত ছিলো। কিন্তু তাকে চাকরি না দেওয়ায় আমি অত্যন্ত হতাশ।

ওই নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধার কোটা না মেনে নিয়োগ কমিটি সাদেকুল ইসলাম নামে অন্য এক প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদান করে। পরে এই অনিয়মের অভিযোগে নিয়োগ কমিটির সভাপতি আটোয়ারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে সহকারি জজ আদালতে (আটোয়ারী) একটি মামলা করেন মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় একটি প্রভাবশালী মহল মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে বাদী সাহিবুল ইসলাম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা কোটা না মানায় মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা হয়েছে দাবি করে ওই নিয়োগে অনিয়মের বিচার না হলে ওই মুক্তিযোদ্ধা মৃত্যুর পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দিতে নিষেধ করেন।

এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সলিমউদ্দিন জানান, আমি একজন দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা। আমার ছেলে যোগ্য প্রার্থী হওয়া স্বত্ত্বেও ঘুষ দিতে পারিনি বলে ওরা চাকরি দেয়নি। আমার ছেলে আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তারপরও তার চাকরি হলো না। যারা টাকা দিয়েছে তাদের চাকরি হয়েছে। আমি এর প্রতিবাদে মামলা করেছি বলে বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি ধামকি দেওয়া হচ্ছে। এমন অনিয়ম যদি দেখতেই হবে তবে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম কেন? এসব ঘটনার বিচার না হলে মৃত্যুর পর আমি এমন দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের দ্বারা আমি রাষ্ট্রীয় সম্মান চাই না।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!