আতিয়া মহলে ৩০ ঘণ্টা আটকে থাকার পর উদ্ধার হয়ে যা জানালেন বিশ্বজিত কুমার

অনলাইন ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়িতে জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলে’ ৪র্থ দিনের মতো আজ সোমবারও অভিযান চলছে। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।

পরে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত থেমে থেমে গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এরপর থেকে ৯টা পর্যন্ত কোনো গুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। তবে সাড়ে ১১টার পর থেকে আবারও থেমে থেমে গুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে।

এর আগে রোববার বিকেলে ওই ভবনের কাছে পাঠানবাড়ি মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল আহসান জানান, ‘অপারেশন টোয়াইলাইটে’ দুই জঙ্গি নিহত হয়েছে।

এদিকে আতিয়া মহলে প্রায় ৩০ ঘণ্টা আটকে থাকার পর উদ্ধার পাওয়া বিশ্বজিত কুমার দে বিবিসি বাংলার কাছে বর্ণনা করেছেন তাঁর অভিজ্ঞতা। তিনি বলছেন, আতিয়া মহলের দুই তলার একটা ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি থাকতেন। শুক্রবার ভোরের দিকে প্রচণ্ড শব্দ তাদের ঘুম ভাঙ্গে।

এরপর একবার বাইরে বের হয়ে এলে চারদিকে ধোয়া দেখে ভয়ে আবার ঘরে ফিরে যান। কী হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছিলেন না তারা।

মি. দে বলছিলেন এই সময় হ্যান্ড মাইকে পুলিশের কথা শুনতে পান। তিনি বলছিলেন “আমাদের নীচতলায় থাকা জঙ্গিদের আত্মসমর্পন করার আহ্বান জানাচ্ছিলেন, এরপর আমরা বাসার দরজা-জানলা বন্ধ করে প্রায় ৩০ ঘণ্টা বসে ছিলাম”।

“ভয়ে আতঙ্কে গেছে প্রতিটা ঘণ্টা। এরপর শনিবার সকালে শুনলাম আর্মি আসছে” বলছিলেন তিনি।

আতিয়া ভবনের দুই তলা থেকে পাঁচ তলা পর্যন্ত প্রায় ২৮ টি পরিবারকে উদ্ধারের কাজ শুরু হয় শনিবার সকালে। কিন্তু নীচ তলায় সন্দেহভাজন জঙ্গিদের অবস্থান থাকায় সহজ পথে সিড়ি বেয়ে তাদের বের করা নিরাপদ ছিল না। তাহলে কিভাবে বের হলেন এতগুলো মানুষ?

মি. দে বলছিলেন মই তৈরি করে আতিয়া ভবনের পাশে থাকা আরেকটি ভবনের সাথে যুক্ত করা হয়। তারপর এই মই দিয়ে এক এক করে সবাইকে পাশের ভবনের সরিয়ে ফেলা হয়।

প্রতিটি তলায় ছয়টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তিনি বলছিলেন নীচ তলায় একটি ফ্ল্যাটে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা রয়েছেন বলে তাদের ধারণা। তাদের পাশের ফ্ল্যাটের মানুষদের গ্রিল ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলা হয় বলে জানাচ্ছিলেন তিনি।

“সব জিনিস-পত্র বাসায় ফেলে কোন মতে বেঁচে আসছি” বলছিলেন তিনি। নীচ তলায় সন্দেহভাজন জঙ্গিরা ডিসেম্বরের/জানুয়ারির দিকে বাসাটি ভাড়া নেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তবে সেখানে কারা থাকেন তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত কোন তথ্য তাঁর জানা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!