বৈধতা পাচ্ছে উবারসহ অন্যরা

অনলাইনডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

ঢাকায় স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) নির্ভর ট্যাক্সি পরিবহনসেবাকে বৈধতা দিতে রাইডশেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে সরকার। রাইডশেয়ারিং সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যক্তিগত মোটরযান মালিকের ব্যবহারের পর অতিরিক্ত সময় ভাড়ার বিনিময়ে যাত্রী বহনের সুযোগ পাওয়া যাবে। এই নীতিমালার মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ির মালিকেরা নিয়মের মধ্যে থেকে এ ধরনের সেবায় নিয়োজিত হতে পারবেন।

বর্তমানে ঢাকায় চলছে একাধিক স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন (অ্যাপ) ভিত্তিক পরিবহনসেবা। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা শহরে যাত্রা শুরু করেছিল বিশ্বের অন্যতম বড় অন-ডিমান্ড রাইডশেয়ারিং কোম্পানি উবার। সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের দৌরাত্ম্যের কারণে ঢাকায় খুব দ্রুত এই সেবা জনপ্রিয় হয়েছে। এ ধরনের সেবার আওতায় উবারের নিজস্ব কোনো ট্যাক্সিক্যাব থাকে না। অ্যাপল স্টোর বা গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘উবার’ নামের অ্যাপ নামাতে হয়। এরপর ই-মেইল ঠিকানা ও ফোন নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হয় চালক ও যাত্রীকে। তারপরই তাঁরা এর সেবা নিতে পারেন। উবারের পর ‘পাঠাও’ নামের আরেক প্রতিষ্ঠান মোটরসাইকেলে একই ধরনের সেবা চালু করেছে।

তবে সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকেরা এ নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। তবে জনপ্রিয়তার কারণে শেষ পর্যন্ত সরকার নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেয়। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ব্যক্তিগত মোটরযান ভাড়ায় চালানোর জন্য দেশে কোনো আইন বা বিধিবিধানও নেই। সেই ক্ষেত্রে মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩–এর ৫৩ ধারার ক্ষমতাবলে পরীক্ষামূলকভাবে রাইডশেয়ারিং সার্ভিস চালুর জন্য এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।

নীতিমালা অনুযায়ী রাইডশেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশনে ‘এসওএস’ সুবিধা থাকবে। কোনো জরুরি মুহূর্তে এসওএস বোতাম স্পর্শের সঙ্গে সঙ্গে রাইডশেয়ারিং অ্যাপ্লিকেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওই ফোন নম্বরে চালকের তথ্য ও যাত্রীর অবস্থান করার তথ্য পাঠাবে। মোটরযান চালককে রাইডশেয়ারিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের প্রশিক্ষণ থাকতে হবে।

এসএমএস, ই–মেইল বা অন্য কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে যাত্রীদের ভ্রমণ শেষ হওয়ার পর যাত্রী যাতে ভ্রমণ শুরু ও শেষ করার স্থান, ভ্রমণের মোট সময় ও দূরত্ব এবং মোট ভাড়ার পরিমাণের বিবরণ পেতে পারেন, তা অ্যাপ্লিকেশনে অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। রাইডশেয়ারিং সার্ভিসে সেবাদানকারী কোনো মোটরযানের মালিকানা সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান দাবি করতে পারবে না। এ ছাড়া সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ব্যক্তির কোনো ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করতে পারবে না।

রাইডশেয়ারিং সার্ভিস পরিচালনার জন্য মোটরযান মালিককেও রাইডশেয়ারিং মোটরযান অন্তর্ভুক্তির বা এনলিস্টমেন্ট সনদ নিতে হবে। প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানকে টিআইএন নম্বরধারী পাবলিক অথবা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হতে হবে। কমপক্ষে ২০০ মোটরযান ছাড়া কোনো প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান রাইডশেয়ারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। তবে হালনাগাদ রুট পারমিট থাকা সাপেক্ষে অটোরিকশা ও ট্যাক্সিক্যাবসহ ভাড়ায় চালিত হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করা সব ধরনের যাত্রীবাহী মোটরযানের এ সার্ভিসে যুক্ত হতে কোনো ধরনের এনলিস্টমেন্ট সনদ দরকার হবে না। এ সার্ভিসের কোনো মোটরযানে যাতে প্রথম যাত্রী আরোহণের পর দ্বিতীয় যেকোনো যাত্রী অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে মোটরযানটি ট্র্যাকিং করে অবস্থান জেনে নিতে পারেন, সে ধরনের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!