দিনাজপুরে গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কের ভেলকি বাজি

দিনাজপুর প্রতিনিধি  । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম
দিনাজপুরে গ্রামীণ ফোন কোম্পানীর নেটওয়ার্কে লোডশেডিংয়ের মতোই ভেলকিবাজি শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ গ্রাহকদের। শহর কিংবা গ্রামীণ জনপদে অন্যান্য কোম্পানির দূর্বল নেটওয়ার্কের কারনে গ্রামীণ ফোন কোম্পানী একচেটিয়া ব্যবসা করে আসছে। কর্মকর্তা, কর্মচারী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, ছাত্র, কৃষক, গৃহিনীর হাতে প্রয়োজনীতায় রয়েছে গ্রামীণ ফোনের সিম সম্বলিত ফোন। গ্রামীন জনপদের হাটবাজার থেকে দূরবর্তী এলাকায় গ্রামীণ ফোন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। দুই চার বছর  আগেও হাতে গোনা কয়েকটি টাওয়ার নির্মাণ হয়েছে যা দিয়ে সাধারণ গ্রাহক তাদের প্রয়োজনে দেশ-বিদেশের সাথে যোগাযোগ করছে। কিন্তু আধুনিকতার এই সময়ে হারিকেন- লন্ঠনের মতো নিবু নিবু নেটওয়ার্ক বিভিন্ন ফোন কোম্পানির গ্রাহকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামীণ ফোন কোম্পানীর অবাধ নেটওয়ার্কের কারনে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ গ্রাহক এর সীম ব্যবহার করে। কিন্তু কি অজ্ঞাত কারনে এখন গ্রামীণ ফোন কোম্পানীর নেটওয়ার্কে বাজে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা সাধারন মানুষ জানেন না।
এ ব্যাপারে রানীরবন্দর কলেজ মোড়ের ব্যবসায়ী মসিউর রহমান বলেন, গ্রামীণ ফোন কোম্পানী হয়তো আর বেশিদিন এ দেশে থাকবে না। এ কারনে নেটওয়ার্ক সরবরাহে এত উদাসীনতা। বন্দরে গ্রামীণের টাওয়ার থাকা সত্বেও খোদ ইছামতি কলেজ মোড়ে পুরো নেটওয়ার্ক পায়না। ফোন আসলে বারবার কেটে যায়।
চিরিরবন্দরের চম্পাতলী বাজারের নরুজ্জামান নামের এক শিক্ষকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, শিক্ষকতার পাশাপাশি আমি বিকাশ, ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করি। এজন্য নকিয়া পুরাতন ১১০০ ও ২৬০০ মডেলের ফোন ব্যবহার করি। এই সেট গুলোতে কখনও গ্রামীণ নেটওয়ার্কের সমস্যা হয়নি কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে এ ফোন কোম্পানীর নেটওয়ার্ক অপর্যাপ্ত। প্রায়শ:ই বিকাশে টাকা রিসিভ করতে, পাঠাতে কিংবা লোড দিতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। চম্পাতলী বাজারের এক সিম বিক্রেতার কাছে গেলে সে রবি সিম নেওয়ার পরামর্শ দেয়। ওই শিক্ষক আরো জানায়, আমার গ্রামীণ সিমটি বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়ের কাছে সুপরিচিত বলে চেঞ্জ করতে পারছিনা। যদি কন্টিনিউ এ অবস্থা হয় তাহলে চেঞ্জ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
গ্রামীণ ফোনের টাওয়ার পর্যাপ্ত থাকার পরও এর নেটওয়ার্ক কভারেজ খুবই খারাপ অবস্থায়। টাওয়ার থেকে ২/৩ কিলোমিটার দূরত্ব হলেই এ অবস্থা। এক প্রকার অভিযোগের সুরে খানসামার বিপ্লবী নামের এক গৃহিনী বলেন, কি ফালতু নেটওয়ার্কের জন্য বারবার কল কেটে যাচ্ছে। একটা কল করতে বারবার কেটে গেলে বিরক্ত হয় আত্মীয়স্বজন সহ বাড়ীর কর্তাও। তিনি আরো বলেন, মোবাইল থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো। বাড়িতে কথা বলা যায় না। কল আসলে বাইরে ছুটে যেতে হয়। রাতে ফোন আসলে কিভাবে বাইরে গিয়ে কথা বলি?
খানসামার বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জে গ্রামীণের নেটওয়ার্কের বেহাল অবস্থা। প্রায় দীর্ঘ কয়েক বছর যাবত খানসামা- রানীরবন্দর রাস্তার উপকন্ঠে অবস্থিত পুলেরহাট বাজার নেটওয়ার্কের বাইরে ছিল। বাজার থেকে কোন কথা শোনা যায় না। এ্যামনকি দোকানে কোন নেটওয়ার্ক না পাওয়ায় মোবাইল আনরিচেবল দেখায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ঈদুল-ফিতরের পর বাজারের উত্তর পাশে ৩-৪ শ গজ দূরে নতুন করে একটি
টাওয়ার নির্মিত হয় যা কিছুদিন পূর্বে ছেড়ে দেয়। কিন্তু এখনও খোদ পুলের হাটে পুরো নেটওয়ার্ক পায়না। এখন কথা শুনা গেলেও ইন্টারনেট সেবা পায় না। এ ব্যাপারে কম্পিউটার অপারেটারের কাজ করা কৃষ্ণ বলেন, টাওয়ার নির্মাণের পূর্বে ভাবছিলাম এখানে গ্রামীণের টাওয়ার হলে ইন্টারনেট ব্যবসা করব। বিভিন্ন পরীক্ষার রেজাল্ট, এ্যাপ্লিকেশন, স্কুল- কলেজের কাজের জন্য পাকেরহাট কিংবা রানীরবন্দরে যেতে হয়। টাওয়ার নির্মাণের পর মনে করলাম এই কাজগুলো এখন পুলের হাট থেকেই দেবো। কিন্তু সে আশা গুড়েবালি কারন ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক না পাওয়ায় ফেসবুক চালাতে পারছি না। অথচ সেবার মান না দিয়ে  গ্রামীণ ফোন কোম্পানি একটার পর একটা অফার দিয়ে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করছে।
এ বিষয়ে আজ ৬ জুলাই দূপুর ২ টার দিকে গ্রামীণ ফোন কাস্টমার সেন্টারে ফোন করলে দায়িত্বরত কাস্টমার জানান, গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কের কাজ। আপগ্রেড চলছে। এজন্য সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। এ অবস্থার কবে অবসান হবে প্রশ্নের উত্তরে ম্যানেজার বলেন আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আশা করি সব কিছু ঠিকঠাক হবে।

  • কাগজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডটকম এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!