টাঙ্গাইলে দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলায় এমপি রানা গ্রেপ্তার হচ্ছেন!

 

 

 

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

টাঙ্গাইলে যুবলীগের দুই নেতাকে হত্যা করে লাশ গুমের মামলায় টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমার খান রানা গ্রেপ্তার হচ্ছেন বলে জানাগেছে। ওই মামলায় এমপি রানাকে গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেষ্ট) উদ্যোগ নিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানাগেছে। জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় আদালতে আত্মসম্পনের পর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে এমপি রানা গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন।
নিহত দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলা সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো. শামীম (২৮) এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন মিয়া (২৫) বিগত ২০১২ সালের ১৬ জুলাই সকালে বাড়ি থেকে টাঙ্গাইর শহরের উদ্দেশে বের হন। তারপর তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে শামীমরে মা আছয়িা খাতুন বাদী হয়ে পরদনি ১৭ জুলাই টাঙ্গাইল মডলে থানায় একটি সাধারণ ডায়িের করনে।
নিহত দুইজনের পারিবারিক সূত্র জানায়, ঘটনার পর তাঁরা মামলা করার সাহস পাননি। বিগত ২০১৩ সালের জুন মাসে টাঙ্গাইল শহরের তুহিন নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর বিশ্বাস বেতকা এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে ও যুবলীগ নেতা মোর্শেদ আত্মগোপণ করেন। তখন ছেলে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় এক বছর পর মামুন মিয়ার বাবা আব্দুল আজিজ বিগত ২০১৩ সালের ৯ জুলাই টাঙ্গাইলের বিচারিক হাকিম আদালতে মোর্শেদসহ ১৩ জনের নামোল্লেখ করে মামুন ও শামীমকে হত্যা এবং তাঁদের লাশ গুম করার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন আদালত। মডেল থানা পুলিশ ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর মামলাটি নর্থিভূক্ত করে। পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি)।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে এ মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি শাহাদত হোসেন সাধু (৪৫) ও খন্দকার জাহিদুল ইসলাম (৩৮) টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম রূপম কান্তি দাস দু’জনের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।
জবানবন্দিতে হত্যার বর্ণনায় দুই আসামি বলেন, বিগত ২০১২ সালের ১৬ জুলাই শহরের বিশ্বাস বেতকায় মোর্শেদ তাঁর র্কাযালয়ে শামীম ও মামুনকে ডাকেন। সে সময় তাঁরা বলেন, যুবদল নেতা শাতিলকে তাঁরা হত্যা করতে পারবে না। টাকা ও অস্ত্র ফেরত চাইলে তাঁরা বলেন, টাকা খরচ হয়ে গেছে এবং মোটরসাইকেল ও অস্ত্র ফেরত দেবেন না। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে কার্যালয়ের মধ্যেই কুপিয়ে ও পিটিয়ে শামীম ও মামুনকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বস্তায় ভরে বাসাইল উপজলোর নথখোলায় নিয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় লাশ দু’টির মাথা বিচ্ছিন্ন করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়। রাতে মোর্শেদ ও তাঁর সহযোগীরা এমপি আমানুর রহমান খান রানার সঙ্গে দেখা করেন। এমপি আমানুর রহমান খান রানা তাঁদের কিছুদিনের জন্য আত্মগোপণে থাকতে বলেন।
তাদের জবানবন্দিতে ঘটনার সাথে এমপি রানা এবং তার ছোট ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকনের যোগসাজসের বিষয়টি বের হয়ে আসে।
এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি অশোক কুমার সিংহ জানান, যুবলীগ নেতা মামুন ও শামীম মিয়া হত্যা মামলার তদন্তে এমপি রানার জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে চলে এসেছে। এছাড়া আরেক যুবলীগ কর্মী মামুন, ব্যবসায়ী তুহিন এবং শ্রমিক নেতা গোলাম আযমসহ বেশকয়েকটি হত্যাকান্ডে রানা ও তার ছোট ভাইদের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ আরও জানান, যুবলীগ নেতা শামীম ও মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের জবানবন্দি যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। যাদের নাম এসেছে তাদের ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত পদক্ষপে নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!