ধারাবাহিক/Organon of Medicine

ধারাবাহিক/Organon of Medicine
by Dr. S. Hahneman
সূত্রের ইংরেজি ও পাদটীকা ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য
ডা. আওলাদ হোসেন

অধিকাংশ ছাত্র/ছাত্রী ডা. হ্যানিম্যানের দেয়া অর্গানন এ পাদটীকা নোট বই পড়ার কারণে অথবা পাদটীকা থেকে প্রশ্ন না থাকার কারণে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান লাভ করতে পারেন না সেহেতু পাদটীকা-৭ একটু বড় হলেও পড়তে হবে।

সূত্র-৯, ভাইটাল ফোর্স।

In the healthy condition of man, the spiritual vital force (autocracy), the dynamis that  animates the material body (organism), rules with  unbounded sway, and retains all the parts of the organism in admirable, hermonios, vital operation, as regards both sensations and functions, so that our indwelling, reason-gifted mind can freely employ  this living, healthy instrument for the higher purposses or our existance.

অনুবাদ: মানুষের সুস্থ অবস্থায়, অদৃশ্য জীবনীশক্তি (একনায়কতন্ত্র), সূক্ষ্ম চালিকা শক্তিই জড়দেহকে (সুসংগঠিত প্রাণী দেহে) জীবন্ত রাখে, অসীম কর্তৃত্বে শাসন করে এবং দেহের সকল যন্ত্রাংশকে প্রশংসনীয়, সুশৃঙ্খল জৈব ক্রিয়াকলাপে সচল রাখে, এমনকি অনুভূতি ও ক্রিয়াকলাপের দিক থেকেও, যাতে আমাদের অন্তঃবাসী বিবেকপ্রাপ্ত মন আমাদের অস্তিত্বের মহৎ লক্ষ্য সাধনের নিমিত্তে স্বাধীনভাবে এ-জীবন্ত সুস্থ্য যন্ত্রটিকে নিয়োগ করতে পারে।

সূত্রঃ-১১-জীবনী শক্তির বিশৃঙ্খলাই রোগ-
When a person falls ill, it is only this spiritul, self-acting (automatic) vital force, everywhere present in his organism, that is primarily deranged by the dynamic influences upon it of a morbific agent inimical to life, it is only the vital principle, deranged to such abnormal state,  that can furnish the organism with its disagreeble sensations, and incline it to the irregular processess which we call disease; for, as a power invisible in itself, and only congnizable by its effects on the organism, its morbid derangement only makes itself known by the manifestation of disease in the sensations and functions of those parts of the organism exposed to the senses of the observer and physician, that is, by morbid symptoms, and in no other way can it make itself known.

পাদটীকা-৭, সূত্র-১১, সূক্ষ্ম ক্রিয়াশীল প্রভাব-সূক্ষ্ম শক্তি কী?
আমাদের পৃথিবী গোপন অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে আটাশ দিন কয়েক ঘন্টায় চন্দ্রকে তার চতুর্দিকে প্রদক্ষিণ করায় এবং চন্দ্র পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট সময়ে (অর্থাৎ অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময়) আমাদের উত্তর অঞ্চলের সমুদ্রে জোয়ার সৃষ্টি করে এবং পুনরায় অনুরুপভাবে ভাটা সৃষ্টি করে। দৃশ্যতঃ তা কোন স্থল উপকরণের মাধ্যমে সংঘটিত হয় না। আমরা আমাদের চারপাশে আরও অনেক ঘটনা দেখি যা কোন এক সূক্ষ সত্তার উপর আরেক সূক্ষ সত্তার অদৃশ্য ক্রিয়ার ফল। কিন্তু কারণ ও ফলের মধ্যে কোন ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য যোগসূত্র আমরা শনাক্ত করতে পারি না। কেবলমাত্র তুলণা ও বিশ্লেষণে দক্ষ, সুশিক্ষিত ব্যক্তি তার নিজের মধ্যে এক ধরণের অতীন্দ্রিয় ধারণা গঠণ করতে পারে, যা তার চিন্তায় যান্ত্রিক এবং বস্তুগত যা কিছু আছে তার সবকিছুকে এরুপ ধারণা থেকে পৃথক করার জন্য যথেষ্ট হবে। তিনিই এরুপ ক্রিয়াফলগুলোকে সূক্ষ প্রভাবজনিত, গুনগত বলে স্বীকার করেন, অর্থাৎ যা নিরঙ্কুশ, সুনির্দিষ্ট, বিশুদ্ধ শক্তি থেকে উৎপন্ন হয় এবং এক সূক্ষ সত্তার উপর অপর সূক্ষ সত্তার ক্রিয়া হিসাবে সংঘটিত হয়।
উদাহরণস্বরুপ সুস্থ দেহের উপর পীড়া উৎপাদক শক্তিসমূহের সূক্ষ ক্রিয়াফল সংক্রমণ ব্যতীত অন্য কোনভাবেই সংঘটিত হয় না এবং তদরুপভাবে স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার করার ক্ষেত্রে জীবনীশক্তির উপর ঔষধের সূক্ষশক্তির ক্রিয়া সংক্রমণের মাধ্যমেই কেবল সংঘটিত হয়, কোনভাবেই স্থুল প্রক্রিয়ায় হয় না এবং যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়ও হয় না। ঠিক যেমন চুম্বকদন্ডের যে শক্তি লৌহদন্ড যে শক্তিলৌহদন্ড বা ইস্পাত আকর্ষণ করে সে শক্তি না বস্তুগত না যান্ত্রিক। চুম্বকদন্ডের প্রান্ত কর্তৃক লৌহদন্ড আকর্ষণ করতে দেখা যায় বটে কিন্তু কিভাবে আকর্ষণ করার জন্য চুম্বকের এ-অদৃশ্য শক্তির কোন যান্ত্রিক সহায়ক উপকরণ, আংটা অথবা টেনে নেয়ার জন্য কোন যন্ত্র লাগে না। চুম্বক নিজেই তার দিকে আকর্ষণ করে এবং লৌহদন্ডের উপর অথবা ইস্পাতের উপর এটি ক্রিয়া বিশুদ্ধভাবে অবস্তুগত, অদৃশ্য, ধারণাসংক্রান্ত সহজাত শক্তির মাধ্যমে অর্থাৎ অদৃশ্যভাবে এবং চুম্বকদন্ড ইস্পাতে চুম্বক শক্তি সংক্রমণ করে একইরুপ অদৃশ্যভাবে। ইস্পাতটি নিজেই তখন চুম্বকে পরিণত হয়, এমনকি দুর থেকেও যখন চুম্বক ইস্পাতকে স্পর্শই করে না। এবং অন্য ইস্পাত শলাকাকে অদৃশ্যভাবে (ফুহধসরপধষষু) একই রুপ চুম্বক গুনে চুম্বকায়িত করে, যে গুনবিশিষ্ট চুম্বক দ্বারা তা ইতঃপূর্বে চুম্বকায়িত করা হয়েছে। ঠিক একইভাবে গুটিবসন্ত অথবা হাম রোগে পীড়িত শিশু নিকটস্থ সুস্থ শিশুর দেহে বিনাস্পর্শে অদৃশ্যভাবে হাম বা বসন্ত রোগ সংক্রমণ করে। অর্থাৎ দুর থেকেই সংক্রমণ করে, পীড়িত শিশুর দেহ থেকে কোন জড় বস্তু তার কাছে যায় না অথবা সংক্রমিত হওয়ার জন্য জড় কোন বস্তু কারও কাছে যাওয়ার যোগ্য নয়। সুনির্দিষ্ট ধারণাগত অদৃশ্য শক্তি নিকটস্থ শিশুর দেহে একইভাবে গুটিবসন্ত অথবা হাম সংক্রমণ করে ঠিক যেভাবে চুম্বক নিকটস্থ ইস্পাত শলাকার চুম্বক গুণ সংক্রমণ করে।

একইরূপে মূল্যায়ন করতে হবে জীবন্ত মানুষের উপর ঔষধের ক্রিয়াফল। ঔষধ হিসাবে ব্যবহৃত উপাদানসমূহ যথেষ্টভাবে এর স্বকীয় নির্দিষ্ট শক্তি অর্জন করেই কেবল ঔষধ হয়, তাদের সূক্ষ ধারণাগত শক্তির দরুণ তারা ধারণাগত, নিয়ন্ত্রণকারী জীবনীশক্তির উপর জীবন্ত øায়ুতন্ত্রের সাহায্যে ক্রিয়া করে মানব স্বাস্থ্যের পরিবর্তন ঘটায়। ঐ বস্তুগত উপাদানসমূহের ঔষধি গুনকেই আমরা যথার্থ ঔষধ বলি। শুধুমাত্র এই গুণটিই তাদের শক্তি যা প্রাণী জীবনের স্বাস্থ্যের পরিবর্তনসমূহ সম্পন্ন করে। এই ধারণাগত জীবনীশক্তির উপরেই নির্ভর করে ঔষধসমূহের স্বাস্থ্য পরিবর্তনকারী, ধারণাগত(সূক্ষ) ঔষধিশক্তি। ঠিক যেমন চুম্বকমেরুর নৈকট্য ইস্পাতে শুধুমাত্র চুম্বক শক্তিই প্রেরণ করে(অর্থাৎ একপ্রকার সংক্রমণ দ্বারা) কিন্তু অন্য কোন গুণ প্রেরণ করতে পারে না(যেমন-অধিক কাঠিন্যতা, নমনীয়তা ইত্যাদি) এবং এভাবে প্রত্যেক নির্দিষ্ট ঔষধি বস্তু এক প্রকার সংক্রমনের মাধ্যমে মানুষের এরুপ সুস্বাস্থ্যগত অবস্থার পবিবর্তন করে, একটি স্বকীয় রীতি অনুসারে যা একেবারেই তার নিজস্ব এবং এমন কোন রীতি অনুসারে নয় যা অন্য ঔষধের নিজস্ব রীতি, যেমন গুটিবসন্তে পীড়িত শিশুর নৈকট্য কোন সুস্থ শিশুতে শুধু গুটি-বসন্তই সংক্রমণ করেএবং হাম সংক্রমণ করে না। এ-ঔষধগুলোও ঔষধি বস্তুর স্থল অংশের সংস্রব ছাড়াই আমাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার উপর ক্রিয়া করে, সুতরাং অদৃশ্যভাবে, যেন সংক্রমণের মাধ্যমেই। উৎকৃষ্টভাবে শক্তিকৃত ঔষধের ক্ষুদ্রতম মাত্রা কর্তৃক রোগীর দেহে অনেক বেশী আরোগ্য শক্তি প্রকাশ পায়। হিসাব অনুসারে যার মধ্যে এতই সামান্য ঔষধ থাকে যে তার সূক্ষতা চিন্তা করা এবং ধারণা করা উত্তম গাণিতিক মনেও সম্ভব নয়। কিন্তু একই ঔষধের বৃহৎ মাত্রা দ্বারা এরুপ আরোগ্য অর্জিত হয় না। অতএব এরুপ ক্ষুদ্রতম মাত্রা ধারণ করে কেবলমাত্র বিশুদ্ধ, অবাধ বিকশিত, ধারণাগত ঔষধিশক্তি এবং শুধুমাত্র অদৃশ্য ক্রিয়ার মাধ্যমে এত বেশি সুফল দেয়, যা একই ঔষধের স্থুল উপাদান বৃহৎ মাত্রায় সেবন করে কখনো পাওয়া যাবে না।
ঔষধের দৃশ্যমান পরমাণুসমূহে থাকে না অথবা তাদের পদার্থিক বা গাণিতিক পৃষ্ঠেও থাকে না খুঁজে পাওয়া যাবে, (শক্তিকৃত ঔষধের উচ্চ ক্ষমতা ব্যাখ্যা করা হয় পরমাণুর সংখ্যা দিয়ে। কিন্তু শক্তিকৃত ঔষধের যে স্তরে পরমাণু গণনা করা যায় সেই স্তরে ঔষধটি যথেষ্টই স্থুল।) খুব সম্ববত ঔষধি বস্তুর মধ্যে ধারণকৃত ঔষধি শক্তি ঔষধসিক্ত বড়ি অথবা দ্রবণে ব্যক্ত, বিমুক্ত, স্বকীয় বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অবস্থায় অদৃশ্যভাবে ক্রিয়া করে, (জীবনীশক্তিতে বস্তুগত কিছুই প্রেরণ করা হয় না), এবং এই শক্তিকে হোমিওপ্যাথিক নিয়মে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যত বেশি উন্মুক্ত এবং নিরাকার শক্তিতে পরিণত করা যায়, তত বেশি শক্তিশালীভাবে ক্রিয়া করে।

তাহলে কি স্বচ্ছ চিন্তাবিদ মানব সম্পদে সমৃদ্ধ আমাদের এ-যুগে সূক্ষ্ম শক্তিকে অদৃশ্য কিছু মনে করা একবারেই অসম্ভব, যখন আমরা নিত্যদিনে অনেক ঘটনা দেখি যা অন্য কোন পদ্ধতিতে ব্যাখ্যা করা যায় না? যদি কেউ ঘৃণ্য কোন কিছুর দিকে তাকায় এবং বমনেরচ্ছুক হয় তখন তার উদরে কি বমনকারক বস্তু প্রবেশ করে যা তাকে বমনক্রিয়ায় বাধ্য করে? তা কি তার কল্পনার উপর ঘৃণাজনক রূপের সূক্ষ্ম ক্রিয়াফল নয়? এবং যদি কেউ তার হাতটি উত্তোলন করে তা কি বস্তুগত দৃশ্যমান যন্ত্রের মাধ্যমে অর্থাৎ ভার উত্তোলনকারী যন্ত্রের মাধ্যমে সংঘটিত হয়? যা হাতটি উত্তোলন করে তা কি সম্পূর্ণরূপে তার ইচ্ছার ধারণাগত অদৃশ্য শক্তি নয়?

পাদটীকা-৮, জীবনীশক্তি দেহকে দিয়ে কিভাবে রোগলক্ষণ প্রকাশ করায়, অর্থাৎ কিভাবে এটি রোগ উৎপাদন করে তা জানার ব্যবহারিক আবশ্যকতা চিকিৎসকের নেই এবং চিরদিন তা অজ্ঞাতই থাকবে, তার প্রয়োজন রোগসম্পর্কে জানা এবং রোগ আরোগ্যে সক্ষম হওয়ার জন্য তাই-ই যথেষ্ট।

রোগের নিদর্শন লক্ষণরূপে জানাযায়ই: সূত্র-১৪, There is, in the interior of man, nothing morbid that is curable and no visible morbid alteration that is curable which does not make itself known to the accurately observing physician by means of morbid signs and symptoms- an arrangement in perfect conformity with the infinite goodness of the all- wise preserver of human life.

সূত্র-১৪ এর বাংলা- রোগসংক্রান্ত যা আরোগ্যযোগ্য তার কিছুই মানুষের মধ্যে অন্তর্নিবিষ্ট থাকে না এবং রোগসংক্রান্ত দৃশ্যমান পরিবর্তন যা আরোগ্যযোগ্য তা এমন নয় যে, সঠিক পর্যবেক্ষণকারী চিকিৎসকের কাছে রোগের নিদর্শন এবং লক্ষণরূপে পরিজ্ঞাত হয় না এ ব্যবস্থাটি মানবস্বাস্থ্যের সর্বজ্ঞ সংরক্ষকের অসীম করুণার সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!