পাইকগাছা কলেজের আয়োজনকে কাজে লাগিয়ে সাংসদ নুরুল হকের জনপ্রিয়তা জাহিরের চেষ্টা

 

নিজস্ব প্রতিনিধি  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

পাইকগাছা সরকারি কলেজের সুবর্নজয়ন্তী ও পুর্নমিলনী’র অনুষ্ঠানকে ঘিরে বিনাভোটে নির্বাচিত বিতর্কিত সাংসদ নুরুল হকের পাইকগাছায় প্রবেশ নিয়ে সচেতন মহলে চলছে নানান গুন্জন । আজ দুপুর থেকে এটা পাইকগাছার টক অব দি সিটিতে পরিনত হয়েছে ।  সুকৌশলে তিনি আজ পাইকগাছা কলেজের সুবর্ন জয়ন্তির আয়োজনে নিজের মোড়ক লাগিয়ে এলাকায় নিজের রাজনৈতিক ভীত ও জনপ্রিয়তার জাহির করলেন । আর কলেজের আয়োজিত ডায়াসে দাড়িয়ে আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল আজিজের বসতবাড়ী দখলের ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি নিজের কৃতকর্মকে নিছক একটা ভুল বোঝাবুঝি ও যুবলীগের কতিপয় কর্মীর সামান্য ভুল বলে জাহির করলেন । কিন্ত শুরু থেকেই প্রস্তাবিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহন না করায় সচেতন মানুষের বুঝতে বাকি নেই যে সাংসদের দৈন্যতা ।

উল্লেখ্য পাইকগাছা কলেজের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ছিল আজকের বর্নাঢ্য আয়োজন । শুরুতে শোনা গিয়েছিল কলেজের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পাইকগাছা’র জামাইখ্যাত ড: মশিউর রহমান । জানাগেছে সাম্প্রতিক সময়ে স্থানীয় সাংসদ নুরুল হকের বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারনে ক্লিন ইমেজের ভদ্রলোকখ্যাত ড: মশিউর রহমান শেষ পর্যন্ত কৌশলে বিষয়টি এডিয়ে যান । অগত্যা সাংসদ নুরুল হক শেষ ভরসা করেন খুলনা জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রবীন রাজনীতিবিদ শেখ হারুন উর রশীদের উপর । সেই অনুযায়ি নিমন্ত্রণ পত্রও ছাপা হয় । কৌশলমত সাংসদ নুরুল হক সকল দলীয় নেতাকর্মীদের আওয়ামীলীগের জেলা সভাপতি আসছেন বলে অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য হুইপ জারি করেন । নেতা কর্মীরাও অনেকটা দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়ে যান ।

সাংসদ সকলকে জানান শেখ হারুন সাহেবসহ জেলার নেতারা আসবেন তাই সকলকে পাইকগাছা উপজেলার সীমান্ত এলাকা শাপলা চত্বর থেকে নেতাদের রিসিভ করে মোটর শোভাযাত্রা সহকারে পাইকগাছা নিয়ে যেতে হবে । তাই সাংসদকে অনেকের অপছন্দ সত্বেও শুধুমাত্র দলীয় সিনিয়র নেতাদের সন্মানের কথা ভেবে যেতে হয় মোটর শোভাযাত্রায় । কিন্ত সাংসদের বিধি-বাম। সাংসদের বর্তমান পরিস্থিতি আঁচ করে পোড় খাওয়া ঝানু রাজনীতিবিদ শেখ হারুন উর রশীদসহ নেতৃবৃন্দ শেষ পর্যন্ত যাননি পাইকগাছায়। তাই শেষ পর্যন্ত সমস্ত আয়োজনের মধ্যমনি হয়ে উঠেন সাংসদ নুরল হক। ঠিক  যেন এমনটাই তিনি চাইছিলেন। সদ্য সরকারি হওয়া কলেজের সমস্ত আয়োজনকে কাজে লাগিয়ে তিনি নেমে পড়লেন ড্যামেজ কন্ট্রোল । আর শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত তিনি তাই করলেন । সাধারন মানুষসহ উপস্থিত নেতৃবৃন্দ দেখলেন নুরুল হকের ভেল্কিবাজি।

উল্লেখ্য পাইকগাছা কলেজের সুবর্ন জয়ন্তি উপলক্ষ্যে আজ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ, স্মরণিকা প্রকাশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে । এ উপলক্ষে গোটা ক্যাম্পাস এলাকা সাজানো হয় বর্ণিল সাজে, আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয় প্রধান ফটক ও ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান সমূহ। শনিবার সকালে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলেজ মাঠে সমবেত হয় । ১৯৬৭ সাল থেকে অদ্যাবধি প্রায় অর্ধশত ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর বিভিন্ন ব্যাচের শত শত শিক্ষার্থীরা কলেজ জীবনের সহপাঠি একে অপরকে পেয়ে মেতে ওঠেন আনন্দ উল্লাসে। পুরাতন শিক্ষার্থীদের আনন্দ আর উল্লাসে পুর্নমিলনী অনুষ্ঠান পরিণত হয় মহামিলন মেলায়। প্রধান অতিথির অনুপস্থিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিহির বরণ মন্ডলের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রধান হয়েছিলেন সংসদ সদস্য ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এ্যাডঃ শেখ মোঃ নূরুল হক। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রভাষক মাসুদুর রহমান মন্টু, সুষ্মিতা সরকার, সুফল চন্দ্র মন্ডল ও আসাবুর রহমান শিমুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!