পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের ব্যাপক সংঘর্ষ

অনলাইন ডেস্ক  কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

চট্টগ্রামের এম এ আজিজ আউটার স্টেডিয়ামে সুইমিংপুল নির্মাণ প্রতিরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ছাত্রলীগের ঘেরাও কর্মসূচির একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের জের ধরে কাজীর দেউড়ি, ওয়াসা, জিইসি মোড় ও প্রবর্তক এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহন ভাঙচুর এবং সড়কে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় নগরজুড়ে যানজট ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা সুইমিংপুল ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে বিকেলে মিছিল নিয়ে আউটার স্টেডিয়ামে জড়ো হন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন এবং সুইমিং পুলের নির্মাণ সামগ্রী ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। পুলিশ বাধা দিলে তাদের সঙ্গে নেতাকর্মীদের তর্ক বাঁধে। একপর্যায়ে ইটের আঘাতে পুলিশের সহকারী কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম ও কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন আহত হন। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও রাবার বুলেট ব্যবহার শুরু করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান। এরপর ছাত্রলীগের কর্মীরা রাস্তায় ব্যাপক গাড়ি ভাঙচুর করেন।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার এস এ মোস্তাইন হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা জানেন যে এই সুইমিং পুলের বিষয় নিয়ে একটা বিতর্কের বিষয় ছিল। আজকে পৌনে ৪টার দিকে ছাত্রলীগের রনি ও ইমুর নেতৃত্বে চার থেকে পাঁচশ লোক বিক্ষোভ প্রদর্শন করার জন্য আসে। প্রথমে শান্তিপূর্ণ ছিল। আমরা তাদের শান্তিপূর্ণভাবে প্রোগ্রাম করার তাৎক্ষণিক অনুমতি দেই, আগে তো অনুমতি নেয়নি। গণতান্ত্রিক দেশে যে কারো কোনো কিছু বলার থাকতে পারে। কিন্তু একটা পর্যায়ে তারা ভায়োলেন্ট (সহিংস) হয়ে যায়, ভাঙচুর শুরু করে। আমরা তাদের ছত্রভঙ্গ করছি। এই ধরনের একটা সরকারি প্রোগ্রাম, এটাকে ফোর্স ইউজ করে নস্যাৎ করার সুযোগ নাই। আর সরকারি দলের একটা পার্ট তারা করছে। এটা ভালো করে নাই। ভিডিও ফুটেজ আছে। মামলা হবে। প্রত্যেককে অ্যারেস্ট করব। কাউকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নাই এবং এদের ইন্ধনদাতা কেউ যদি থাকে, তাদেরও ধরা হবে।’

সংঘর্ষের ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের  সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সুইমিং পুলের পক্ষে। কিন্তু খেলার মাঠ নষ্ট করে কখনোই সুইমিং পুল নির্মাণ দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের যে রাজনীতি তা কখনোই সমর্থন করে না। কিন্তু বিনা উসকানিতে কোনো অশুভ শক্তির বলে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর বেপরোয়াভাবে লাঠিচার্জ এবং গুলি করা হয়েছে তা আপনাদের মাধ্যমে আমি জানতে চাই এবং নগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে গুলি করতে চেয়েছিল, তাদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছিল যা নিন্দনীয়।  আমি এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি এবং যারা পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার জন্য পুলিশ বাহিনীর ভেতর থেকে এমন কর্মকাণ্ড করেছে আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’

গত ১০ এপ্রিল চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে এক জনসভায় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে খুনি আখ্যায়িত করে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে সুইমিং পুল নির্মাণ না করতে ১৫ দিনের একটি আলটিমেটাম দেন। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আরেকটি সভা করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুইমিং পুল সরিয়ে না নিলে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!