১৪৯ বছরে পা রাখলো দেশসেরা রাজশাহী কলেজ

সৈয়দ মাহামুদ শাওন, তানোর উপজেলা প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী দেশসেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী কলেজের জন্মদিন আজ বৃহস্পতিবার। প্রতিষ্ঠার ১৪৮ বছর পেরিয়ে ১৪৯ বছরে পা রাখলো এই কলেজটি। ১৮৭৩ সালের ১ এপ্রিল রাজশাহী শহরে ‘রাজশাহী কলেজ’ নামে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বীজবপন করা হয়েছিল তা আজ এক ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। মাত্র ৬ জন ছাত্র নিয়ে পথচলা শুরু করে বর্তমানে প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয় এই কলেজ।

রাজশাহী কলেজ মানেই পরিপাটি ক্যাম্পাস। পড়ালেখা, আড্ডা, গল্প আর গান সবকিছু চলছে একসঙ্গেই। নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও স্বমহিমায় এগিয়ে চলেছে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষায়তন। শুধু লেখাপড়ায় নয়, কী ভাষা আন্দোলন, কী মুক্তিযুদ্ধ, বাঙালীর সকল গৌরবোজ্জল ইতিহাসে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে রাজশাহী কলেজের নাম।

আজ থেকে ১৪৮ বছর আগে যার জন্ম হয়েছিল জমিদার রাজার হাতে। তারপর কত উজ্জ্বল নক্ষত্র এখানে এসেছেন, নিজেকে গড়েছেন, আবার কালের বিবর্তনে আলো বিলিয়ে চলে গেছেন। সেই আলোতে আজও পথ চলে নতুন প্রজন্ম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২৮টি সূচকে টানা চারবার এবং শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি সূচকে চারবার সেরার মুকুট অর্জন করে রাজশাহী কলেজ। পেয়েছে মডেল কলেজের স্বীকৃতি।

পরবর্তী র‌্যাংকিং ঘোষণাতেও প্রথম হওয়ার প্রত্যাশায় রয়েছে কলেজটি। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, উপমহাদেশের খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি স্যার যদুনাথ সরকার, বৈজ্ঞানিক প্রথায় ইতিহাস চর্চার পথিকৃত অন্যতম সাহিত্যিক অক্ষয় কুমার মৈত্র, সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান, জননেতা ও শিক্ষানুরাগী মাদার বখশ এবং বাংলাদেশের জাতীয় নেতার একজন এএইচএম কামারুজ্জামানের মতো বরেণ্য ব্যক্তিত্ব এ কলেজের ছাত্র ছিলেন। বর্তমানে একবিংশ শতাব্দির প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে ডিজিটাল করে নিয়েছে রাজশাহী কলেজ।

রাজশাহী কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর মোহাঃ আব্দুল খালেক বলেন, সরকারের সুদৃষ্টি, শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা, শিক্ষার্থীদের মানষিকতার পরিবর্তনের ফলে কলেজ সফলতার উচ্চ শিখরে পৌচেছে। করোনা পরিস্থিতির জন্য এবার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তেমন অনুষ্ঠান রাখা হয়নি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০ টায় কেক কাটা, ডকুমেন্টরি প্রকাশ ও ফেস্টুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। আগামীতে ১৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করা হবে।

রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান বলেন, আমি মনে করি, রাজশাহী কলেজ অন্যান্য শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানের জন্য আদর্শ। শিক্ষার্থী, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পিওর ড্রিংকিং ওয়াটার পদ্ধতি কিংবা স্যানিটেশন সবগুলো কার্যক্রমই অনুকরণীয়। একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠানের যতগুলো বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার; তার সবই এখানে রয়েছে। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল জাতি রুপে প্রতিষ্ঠিত করতে রাজশাহী কলেজ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!