সেলিনা জাহান প্রিয়ার ধারাবাহিক গল্প: ‘অ-মানব’-(৩৫ তম পর্ব)

 

অ-মানব-৩৫-তম-পর্ব

———————–সেলিনা জাহান প্রিয়া

 

বৃষ্টি আর বৃষ্টি সারারাত বৃষ্টি। রেবেকা বেগম আর আমজাদ সাহেব সকাল বেলা বারান্দায় বসে বৃষ্টি দেখছে। বৃষ্টি থামার কোন লক্ষণ নাই। মিতা চা নিয়ে আমজাদ সাহেব কে দেয়। আমজাদ সাহেব বলে আমাদের অ-মানব একটা দারুন মানুষ মিতা কাল রাতে আকাশ দেখলাম পরিষ্কার আর মাঝ রাতে থেকে বৃষ্টি। মিতা একটু হেসে বলল দেখবেন এই বৃষ্টির জন্য আমাকে সে দোষ দিবে।
—- তোঁকে দোষ দিবে কেন?
—- অ-মানব বলে আমি গান গাইলেই নাকি বৃষ্টি হবে।
—– মিতা তুই কি গান গেয়েছিলি।
—- হ্যাঁ খালু জান গেয়েছিলাম। আপনার সেই প্রিয় গান টা!!
রেবেকা বেগম বলল যা তো মিতা এখান থেকে যত সব পাগলের কাজ। তুই গান গাইলে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে তো তো কে খরা এলাকার লোক জন নিয়ে যাবে। মিতা রেবেকা বেগমের কাছ থেকে চলে যায়। আমজাদ সাহেব মিতার দিকে চেয়ে বলে রেবেকা একটা জিনিস লক্ষ্য করেছ।
—– কি জিনিস?
—– মিতার হাটা টা কিন্তু আমার মায়ের মত।
—- চুপ থাক! বেশি কথা বল! তোমাদের কথা শুনলে! মানুষ যে কি মনে করবে?
—– আচ্ছা তুমি কি দেখ না।
—– আমার দেখার দরকার নাই। তোমার মা জিবনে আমাকে কোন দিন মেনে নেয় নাই। তোমার মা আমাকে দেখলে সব সময় চেহারা বাকা করে রাখত।
—– দেখ! আমার মাকে একা দোষ দিয়ে কি লাভ। আমি তো মায়ের কষ্টের কারন। মায়ের বোনের টাকায় লিখা পড়া করলাম। খালাত বোন কে বিয়ে করার কথা। ব্যাংক এ চাকুরী তোমার সাথে পরিচয়। আর তোমাকে বিয়ে। মা এটা মেনে নেয় নেই। কিন্তু মা আমাকে কোন দিন বলে নাই যে তোমাকে মায়ের পছন্দ না। মা বলত ছেলে সুখী হলে আমি সুখী।
—– রাখ মায়ের কথা। আমার শুনতে ভাল লাগে না। এত বৃষ্টি আমার ছেলে জানি কোথায়। ছেলে কে আমি এমন সুন্দর মেয়ে বিয়ে করাব যে ছেলে বাড়ি থেকে বাহিরে না যায়।
—– দেখ আবার ছেলের বউ যেন তোমার মত না হয়।।
—— আর যাই হউক মিঃ আমজাদ তোমার মায়ের মত হবে না।
রাজ সেই ছোট বেলা গ্রামে এসেছিল। কিছু কিছু মনে আছে। বৃষ্টির জন্য কোথায় যেতে পারছে না। তাদের বাড়ি দেখা শুনা করে গফুর ডাকাত। রাজ কিন্তু গফুর ডাকাত কে ভাল করে চিনে। তাই দুপুরে বৃষ্টি শেষ হলে সে গফুর ডাকাদের বাড়ি যায়। গফুর ডাকাতের এখন বয়স প্রায় ৬৫ বছর। রাজ কে দেখে গফুর ডাকাতের বউ বলল আরে রাজ বাবা যে ঘরে আসো। তুমি গ্রামে আসবে আমরা তো কিছুই জানি না। আমি তো আরও ভাবছিলাম ঢাকা যাব।
—- ঢাকা! গেলেই ভাল হত। আমি একটা কাজে এসেছি। ভাবলাম নিজের গ্রাম টা দেখে যাই। কিন্তু বৃষ্টির জন্য আর গ্রাম দেখা হল না।
—– আরে বৃষ্টি কি আর সারা বছর হবে। গ্রাম হল মানুষের আসল ঠিকানা। রাজ বাবা আমি একটা কথা আপনার গফুর চাচা আসার আগেই বলতে চাই।
—– কি কথা চাচী বলেন।
—– আমার ছেলে তো আপনাদের বাড়িতেই অনেক বছর। আপনার মায়ের কাছে থেকে বড় হয় হয়েছে। কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে আমি চিন্তায় আছি।
—- কি বিষয়।
—- আমার ছেলে তোমাদের বাসার মেয়ে মিতা কে বিয়ে করতে চায়। কিন্তু আমার পক্ষে ঐ মেয়ে কে বউ বানানো সম্ভব না।
—- কেন চাচী তা জানতে পারি।
—- আরে বাবা ঐ মেয়ে তো বেজন্মা। মেয়ের কোন বাপের পরিচয় নাই। তোমার মা খুব ভাল মানুষ যে ঐ পাপি মেয়ে টাকে তোমাদের বাড়িতে নিয়ে মানুষ করেছে। যে মেয়ের বাপের পরিচয় নাই সে মেয়ে কি করে আমার ঘরের বউ বানাই।
—- তা ঠিক চাচী কিন্তু মিতার মা কোথায়?
—– আরে বাবা তুমি কি কিছুই জান না।
—– না চাচী কিছুই জানি না।
—– মিতার মা কে তো তোমার আপন ছোট চাচা খুন করে। সেই খুনের পর তোমার চাচার যাবত জীবন জেল হয়ে যায়।
—- আমার ছোট চাচা তো বিদেশে।
—- আরে না বাবা কে বলছে বিদেশে। এখন পর্যন্ত জেলে। গত তিন বছর আগে শুনছিলাম বরিশাল কারাগারে। আমাদের এলাকার এক ছেলে ঐ জেলে ছিল। তোমার চাচার নামে ঐ মহিলা বদনাম দেয়। যে মিতা তোমার চাচার মেয়ে। যেই দিন এই কথা বলে সেই দিন রাতেই মিতার মা খুন হয়। মিতার মায়ের নাম মিনা ছিল। তোমার দাদার পালক মেয়ে ছিল। তবে মিনার বাড়ি ছিল আঠারো বাড়ি । তোমাদের বাড়ির এক কাজের লোকের মেয়ে ছিল। এখন তো মিনার ভাইদের অবস্তা ভাল।
—–চাচী মিতার মা ছিল মিনা আর মিনার বাড়ি আঠারো বাড়ি। যাই হউক। আপনি যখন চান না তাহলে হবে না। আপনার কথা গুলো ভাল লাগলো। এই বিষয় নিয়ে আপনি আর কোন চিন্তা করবেন না। গফুর চাচা কে বলার দরকার নাই আমার সাথে কি আলোচনা হয়েছে।
রাজ আজ সত্যি খুব অবাক হয়। তার বাবা মা কেউ কোন দিন তাদের ছোট চাচা কে নিয়ে কোন কথা বলে না। বাবা হয়ত এই লজ্জা বা কোন ভয়ে গ্রামে আসে না। কিন্তু চাচা যদি মিতার মাকে হত্যা করে থাকে তাহলে মিতা কে কেন আবার আমার পরিবার লালন পালন করেছে। কে দিতে পারে এই সকল প্রশ্নের উত্তর।।
শিমুল তলা বাজারে আসামাত্র ভীমরুল খায়ের সাথে দেখা। রাজ কে দেখে ভয় পেয়ে বলল স্যার আপনে গ্রামে আসছেন এটা আপনার মাকে কোন দিন বলবেন না। কারন আপনার মা চাই না আপনি গ্রামে আসেন। স্যার আপনি তো জানেন না। গফুর ডাকাত লোক ভাল না।
—– আরে তুমি তা নিয়ে চিন্তা কর না। গফুর ডাকত কে এই বয়সে কি করবে। সে তো আমাদের বাড়ি দেখা শুনা করে। আচ্ছা ভীমরুল আমার চাচা আজ এত বছর জেলে তুমি তো কোন দিন বল নাই।
—- স্যার আপনার মা আমাকে বলতে নিষেধ করেছেন পারিবারিক কোন বিষয়ে।
—– ও আচ্ছা। তা তুমি কি গ্রামে থাকবে।
—– হ্যাঁ আপনাদের বাড়িতে থাকব। আগে গফুর ডাকাত জমি দেখত। এখন দুই জনে মিলে দেখব।
—– আচ্ছা যা ভাল হয় কর। আমি যে গ্রামে এসেছি মা কে আবার ফোন করে বল না।
—- স্যার আপনার সাথে আমার দেখাই হয় নাই।
রাজ সন্ধ্যায় চলে আসে আঠারো বাড়ি বাজারে। দু একজন কে জিজ্ঞাসা করতেই মিতা মামাদের বাড়ি খুজে পেয়ে যায়। মিতার মামার নাম সাজুমিয়া গ্রামের বাজারে একটা দোকান। রাজ কে দেখে চিনতে পারে নাই।পরিচয় দেয়ার পর বলল

—– বাবা রাজ আপনাদের পরিবারের অনেক নুন খেয়েছি আমরা। তাই আপানদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে পারি না। কিন্তু আমাদের পরিবার কে তোমার বাবা মা শেষ করে দিয়েছে। আমাকে ও দুই ৫ বছর জেল খাটিয়েছে তোমার বাবা। যাই হউক বাবা তুমি কি মনে করে। আমি তো তোমাদের গ্রাম ছেড়ে চলে আসছি এটা ১৬ বছর।
—- আমি মিতার বিষয় জানতে চাই।
—- কি আর বলব। আমার বাবা তোমার দাদার বাড়িতে কাজ করত। আমাদের জন্য সেই বাড়িতেই জন্ম। আমার বাবা মারা গেলে আমার মায়ের অন্য জায়গায় আবার বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু আমরা আপনার দাদার বাড়িতেই আমরা ভাই বোন থেকে যাই। আমার বোন মিনা কে মেয়ের মত আদর করে বড় করে আপনার দাদা। আমি ছোট মানুষ, মিনা আমার বড়। আপনার বাবা ঢাকায় অনেক বড় ব্যাংক এ চাকুরী পায়।
আপনার মাকে বিয়ে করে গ্রামে আসে। কিন্তু আপনার দাদী আপনার মাকে মেনে নেয় না। আমার বোন কে আপানার দাদা খুব ভালবাসত। কিন্তু আমার বোন একটা ভুল করে। তখন আপনার ছোট চাচা ঢাকা লিখা পড়া করত। আমার বোনের সাথে তার সম্পর্ক ছিল তা আমরা জানতে সবাই বোন কে চাপ দেই। বোন কোন কথা বলে না। একটা সুন্দর ফুটফুটে মেয়ের জন্ম হয়। আপনার দাদা তখন অনেক অসুস্থ।
গ্রামের মানুষ একটা বিশাল বিচারের ব্যবস্থা করে। পরের দিন বিচার। রাতেই আমার
বোন বলে এই বাচ্চার বাবা নাকি আপনার ছোট চাচা আরমান সাহেব। সেই রাতেই আমার বোন খুন হয়। গ্রামের মানুষ বলে আপনার চাচা খুন করেছে। কিন্তু আপনার চাচা কোন কথা বলে না। আপনার এলাকার গফুর ডাকাত আপনার চাচা কে ধরে
পুলিশে দেয়। আপনার দাদা মারা যায়। আমরা ঐ গ্রাম ছেড়ে নিজেদের বাবার বাড়ি চলে আসি। আমার নামে ডাকাতি একটা মামলা হয়। গফুর ডাকাত মামলা করে। আর আপনার চাচার মামলা ৫ বছর পর সাজা হয়। গফুর ডাকাত, ভীমরুল খাঁ আর একজনের নাম জানি না তাদের সাক্ষীতে যাবত জীবন জেল হয় আপনার চাচার। এখন পর্যন্ত জেলে আছে। তবে আপনার বাবা কে আমি মাপ করে দিয়েছি। কারন আপনাদের লবণ খেয়ে বড় হয়েছি। আর আমার বোনের মেয়েটা আপনার বাবা লালন পালন করছে জেনে।
— আচ্ছা তাহলে মিনার জন্মদাতা বাবা কে?
— আপনি ছোট মানুষ। জানতে চান ঠিক আছে। মিতার বাবা আরমান সাহেব। কারন মিতা কে আপনার দাদির মত দেখা যায়। রক্ত বলে কথা। আমার বোন খুন হওয়ার আগে আমি নিজেই দেখেছি যে আপনার চাচার সাথে আমার বোনের ছিল খুব সুন্দর সম্পর্ক। তবে আল্লাহয় জানে মিতার বাবা কে? এটা গ্রামের মানুষ ও বলে যে মিতা আরমান সাহেবের জন্ম। তবে মুল রহস্য আপনার বাবা মা জানে। আপনার চাচা বরিশাল জেল থেকে এখন ময়মনসিংহ জেলে আছে।
রাজ অবাক হয়ে মিতার মামার কথা শুনে। আবার বৃষ্টি শুরু হয়। রাজ আঠারো বাড়ি রেল ষ্টেশনে এসে একটা লোকাল ট্রেনে ওঠে ময়মনসিংহ চলে এসে। রাজ নিজেকে ভাবতে থাকে। এত কিছু তার পরিবারে কিন্তু সে কিছুই জানে না।
সকাল ১০ টা আকাশ আজ অনেক পরিষ্কার রাজ ময়মনসিংহ একটা হোটেলে উঠেছে। নাস্তা শেষ করে সোজা চলে যায় ময়মনসিংহ কারাগার। রাজ জেলারের সাথে দেখা করে। জেলার দেখা করার ব্যবস্থা করে দেয়। একটা সুন্দর মানুষ রাজের সামনে আসে। মুখ ভর্তি সাদা দাড়ি। মাথার চুল গুলো সাদা। সাজা শেষ হয়েছে কিন্তু অভিভাবক না থাকায় সে বের হতে পারছে না। আরমান মিয়া খুব অবাক হয়ে বলে ১৫ বছর পর আমার সাথে কে দেখা করতে এলো।
রাজের সামনে আরমান এসে বলে আপনি কে? এই দুনিয়ায় আমার তো কেউ নেই আমার সাথে কে আপনি দেখা করতে এসেছেন। রাজ চাচার চেহারার দিকে চেয়ে চেয়ে কাদতে থাকে। চাচা কে বুকে জড়িয়ে কান্না করে দেয়। আরমান মিয়া বলে কে বাবা তুমি। কেন কান্না করছ। রাজ চাচা কে পা ছুঁয়ে সালাম করে। আরমান মিয়া আবার বলে বাবা তুমি কে?
— আমি আপনার ছেলে। আমার নাম রাজ।
— আরমান রাজের মুখটা নিজ হাতে ছুঁয়ে বলে! বাবা তুমি অনেক বড় হয়েছ। চোখের পানি মুছে আরমান বলে তা চাচার কথা মনে হল। তোমার জন্মের সময় অনেক বৃষ্টি ছিল বাবা। আমি সেই বৃষ্টির মধ্যে তোমার মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। ডাক্তার প্রথমে তোমাকে আমার কুলে দেয়। যাই হউক আমাকে কি করে খুজে পেলে।
—- সে অনেক কথা। চাচা আপনি যে জেলে আমি তা জানতাম না। আমি জানি আপনি বিদেশে।
—- থাক সে কথা বাবা। তোমরা সবাই ভাল আছ। তোমার দুই বোন কেমন আছে

—- ভাল আছে।
—- আমি উকিলের সাথে আজ কথা বলে সব কাগজ জেলে জমা দিব। আপনাকে নিয়েই যাব। আপনার সাজা শেষ। এটা আমি জানি।
—- বের হয়ে কি হবে।
— কি হবে মানে?
— মিতার জন্য আপনার বের হতে হবে।
—- মিতা???
— হ্যাঁ
— মিতা কে?
—- মিনার কথা তো মনে আছে চাচা , যাকে খুন করেছেন বলে জেল হল।
—- বাবা রাজ আমি খুন করি নাই। আর মিতা কে?
—- মিনার মেয়ে।
—- মিনার মেয়ে তো আমার মেয়ে বাবা। আমি খুব গোপনে বিয়ে করেছিলাম। মিনা কে। কিন্তু আমি প্রকাশ করার আগেই ও খুন হয়।
—- তাহলে মিনা কে! কে খুন করে।
—- থাক বাবা সব জানতে হয় না। বল আমার মিতা কত বড় হয়েছে। লিখা পড়া করে কি? তোমার বাবা বলেছিল সে আমার মেয়ে কে দেখে রাখবে।
—- রাজ একটু হেসে বলল। থাক সে কথা চাচা আপনার মেয়ে ভাল আছে। আমাদের বাসায় বড় হয়েছে, আপনার মত সে খুব চুপচাপ থাকে। আপনার কাগজ পত্র হয়ত ঠিক হতে দশ বার দিন লাগবে। আমি মিতা কে নিয়ে আপনাকে নিতে আসব।
রাজ চাচার কাছ থেকে চোখের পানি মুছে বিদায় নেয়। আরমান রাজের দিকে চেয়ে থাকে। রাজ ভাবতে থাকে তাহলে মিতার মাকে কে খুন করল।

অ-মানব রেবেকা বেগমের কাছে এসে বলল আম্মাজান আমার সুয়েটার টা খুজে পাচ্ছি না। যেটা পড়ে আমি এই বাসায় আসছিলাম।
—-এই গরমে সুয়েটার দিয়ে কি হবে?
—- আম্মাজান এই বাড়িতে আমার কোন কাজ নাই।
—- কাজ নাই মানে।
—– এই যে রান্না,আপনি করেন, বাজার আপনি করেন, বড় আপা ছোট আপা যে যার কাজ করে, মিতা তো সিঁড়ি ঘর মুছার কাজ করে। স্যার বাগানের কাজ করে। আমার তো কোন কাজ নাই। তাই ভাবছি জামা কাপড় গুছিয়ে রাখি। আমি আবার কাজ ছাড়া থাকতে পারি না।
—– তবে আম্মাজান আমি একটা খারাপ স্বপ্ন দেখেছি। আমার স্বপ্ন আবার সত্য হয়। আমজাদ সাহেব বলল কি স্বপ্ন দেখলে অ-মানব, আমাকে বলা যায়। আম্মাজান এই সবপ্নের কথা বললে যদি আপনি আমাকে ভুল বুঝেন তাই।
—- থাক আমি স্বপ্ন বিশ্বাস করি না।
এর মধ্যে রাজ বাসায় আসে। রেবেকা বেগম ছেলের মুখের দিকে তাকিয়ে অবাক গত তিন দিনে ছেলে চেহারা একদম কালো হয়ে গেছে। রেবেকা বেগম বলল

—– রাজ ছেলে আমার কোন ফোন নাই কেন। মা চিন্তা করে না বুঝি।
—– আমি কোথায় গেছি মা তুমি ভাল করে জান।
—— হ্যাঁ ভাল করে জানি। তুমি তোমার বাবার বাড়িতে গিয়েছিলে।
—— তাই বুঝি কোন চিন্তা করার নেই।
—— চিন্তা হয়।
—– চিন্তা হয় তাহলে মা।
—– হবে না কেন। সব মায়ের তার সন্তানের জন্য চিন্তা হয়। আমজাদ সাহেব বলল কি শুরু হল রাজ। তুমি তো কোন দিন তোমার মায়ের সাথে এমন ব্যবহার কর না।
—- হ্যাঁ করি না। আজ করলাম। কারন মা জানে আমি কোথায় গিয়েছি কিন্তু বাবা তুমি জান না।
—- তোমার বাবার জানার দরকার নাই। তাই জানে না।
—- থাক মা সে কথা। লায়লা এর পারু আপা কোথায়।
—– যে যার রুমে। এই অ-মানব যাও তো ওদের ডেকে আনো? লায়লা আর পারু এসে বলল রাজ আমাদের ডেকেছিস।
—- হ্যাঁ মিতা কোথায়?
—- ভাইজান আমি আপনার পিছনে।
—- সামনে আয়। এই সোফায় বস।
—- না ভাই জান সোফায় বসতে হবে না। রেবেকা বেগম বলল রাজ কি শুরু করেছ।
—- দেখতে পাবে কি শুরু করেছি। আব্বু যে কথা আমাকে বলে নাই আমি তা জেনেছি। আমজাদ সাহেব- কি জেনেছ?
—– এই মিতা আমাদের চাচাত বোন। মিতার বাবার নাম আরমান সাহেব। সে আপনার ছোট ভাই। মিতা আমার আপন চাচাত বোন। এই বাড়ি গ্রামের বাড়ি সব আমার দাদার সম্পতি সহ এই বাড়ি থেকে শুরু করে আমাদের গ্রামের সকল কিছুর অর্ধেক মালিক এই মিতা। আর মাত্র ৭ দিন মিতার বাবা পাই পাই করে হিসাব নিবে। তোমাদের কাছ থেকে। মিতা রাজের দিকে চেয়ে বলল আমার বাবা আছে ভাইজান। মিতা কে জড়িয়ে ধরে বলল হ্যাঁ মিতা তুই আমার রক্ত। আমার বোন। এদের মাপ করে দে। এরা অর্থের পুজারি। আমজাদ সাহেব আর রেবেকা বেগম চুপ হয়ে গেল।

অ-মানব মিতার দিকে তাকিয়ে বলল—।

চলমান —

অ-মানব-প্রথম পর্ব    অ-মানব-দ্বিতীয় পর্ব    অ-মানব-তৃতীয় পর্ব    অ-মানব-চতুর্থ পর্ব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!