আজ বিশ্ব এইডস দিবস :’এইচআইভি সংক্রমণ ও এইডস মৃত্যু: নয় একটিও আর। বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়ব সবাই, এই আমাদের অঙ্গীকার।’

 

শফিক ইসলাম , টাঙ্গাইল, বিশেষ প্রতিনিধি । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম

এইডস AISD পূর্ণ রূপ: Acquired Immunodeficiency Syndrome) হচ্ছে (HIV) নামক ভাইরাসে কারণে সৃষ্ট একটি ব্যাধি, যা মানুষের শরীরের রোগ-প্রতিরোধের ক্ষমতা হ্রাস করে দেয়। এতে করে একজন এইডস রোগী খুব সহজেই যে কোন সংক্রামন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন, যা শেষ পর্যন্ত তার মৃত্যু ঘটাতে পারে।

এইচ.আই.ভি. সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গেই সর্বদা এইডস হয়না। কিন্তু যেহেতু একবার সংক্রামক এইচ.আই.ভি. শরীরে ঢুকলে তাকে পুরোপুরি দূর করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি, তাই এইচ.আই.ভি. সংক্রমণ হলে এইডস প্রায় অনিবার্য। তবে বিনা চিকিৎসায় এইডস পর্যায়ে পৌঁছতে যদি লাগে গড়ে দশ বছর তবে চিকিৎসার দ্বারা তাকে আরো কিছু বছর পিছিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু “হার্রট” (HAART) নামে এইডস এর যে কম্বিনেশন ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা পদ্ধতি তা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ।

যেভাবে ছড়ায়:
১। শরীরের নিতটি তরল যেমন: রক্ত, বীর্য, ও মায়ের দুধ এর মাধ্যমে ছড়ায়।

২। নেশা কারীরা একই সিরিঞ্জ দিয়ে ড্রাগ নেয়ার সময় এই ভাইরাস ছড়ায়।

৩। একাধিক যৌন সঙ্গী যাদের অাছে বিশেষ করে সমকামীদের মধ্যে এ রোগ বেশি ছড়ায়।

৪। গর্ভবর্তী মায়ের এইডস থাকলে তাঁর সন্তানেরও এইডস হয়। (যেমনটি হয় হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের ক্ষেত্রে যার কারণে লিভার ক্যান্সার হতে পারে।)

৫। সেলুন দোকানে একই ব্লেড বা ক্ষুর দিয়ে একাধিক মানুষের দেহে কাজ করলে।

৬। হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের রক্ত দেয়া নেয়ার সময়।

৭। একই চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়ালেও হতে পারে ।
আরো বিভিন্নভাবে এইডস ছড়াতে পারে। অাক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শে আসলে বা জামা কাপড় ও একই থালা -বাসন ব্যহার করলে এইডস ছড়ায় না।

রোগের লক্ষন: এই্ডস এর জীবানু দেহে কয়েক বছর পর্যন্ত কোন রোগ লক্ষণ নাও প্রকাশ করতে পারে।

১। এই রোগের প্রধান লক্ষণ হলো দেহের রোগ প্রাতিরোধ ক্ষমতা একেবারে কমে যায়। ফলে সে মানুষটি যেকোন ছোট ওসুখ যেমন (ডায়রিয়া, কাশি, নিয়োমোনিয়া, যক্ষা) ইত্যাদি রোগে মারা যায়।

২। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব জনিত কারণে এইচ অাই ভি আক্রান্ত মানুষটি একই সাথে অনেকগুলো রোগে আ্ক্রান্ত হয়। কারণ একটি রোগ দ্বারা আক্রান্ত হলে সে রোগটি আর ভাল হয়না।

৩। দেহের ওজন কমে যায়, দীর্ঘ দিন শুকনো কাশি সহ পাতলা পায়খানা থাকতে পারে।

৪। দেহের লসিকা গ্রন্থিগুলো ফুলে যেতে পারে। ত্বকে বিভিন্ন স্টপ দেখা যেতে পারে। জ্বর থাকতে পারে।

৫। এভাবে কয়েক মাস বা কায়েক বছরের মধ্যে রোগী মারা য়ায়।

এইডস রোগে ওষুধ কোয়ার্ড আবিষ্কার: সারা বিশ্বের এইডসের রোগীদের জন্য কোয়ার্ড নামের নতুন ১টি ওষুধ বাচাঁর আশার আলো দেখাচ্ছে।মার্কিনীদের সদ্য আবিষ্কত এই ট্যাবলেটটা দিনে মাত্র ১টা খেলেই চলে। এইচআইভি চিকিৎসায় এই ওষুধটা দারুন সাফল্য দেখিয়াছে। আমেরিকাতে এই কোয়ার্ড নিয়ে ব্যাপক ক্লিনিক্যাল ট্র্য়ায়াল সম্প্রতি শেষ হয়েছে। তাতে অনেক রোগী বেশ উপকৃত হয়েছে। এই ট্রায়ালে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন-যত রোগীর ক্ষেত্রে এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে ৮৮% সফল হয়েছে। এই কোয়ার্ড ওষুধে রয়েছে ৪ প্রকার উপাদান।

৪ ধরনের উপাদানগুলো হল- টেনোফভির, এমটিসিটাবাইন, এলফাইটিগ্রাভিন নামের নতুন ১ টি অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল ড্রাগ ও কভিসিস্ট্রাস নামে ১টি  এন হেনসিস্টারের সংমিশ্রণ।এইডসের চিকিৎসায় ১৯৯৫ সাল থেকেই ট্রিপল থেরাপি ককটেল বা ৩ টি উপাদানের ওষুধ ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে এই প্রথম ৪ প্রকার উপাদানের মিশ্রিত থেরাপি আশ্চর্য সাফল্য দেখাল। তবে এই কোয়ার্ড ওষুধের দাম এখনও ঠিক করা হয়নি। তবে দাম খুব বেশিই নির্ধারণ করা হবে বলে ধারণা করাহচ্ছে। যেমন- এটট্রিপলা ওষুধের খরচ পড়ে বছরে ২২০০০ ডলার মাসে প্রায় ২০০০ ডলার। অথচ ভারতের সিপলা ওষুধ কোম্পানি, ঐ একই ওষুধের জেনেরিক করে বাইরাডে নামক ওষুধের জন্য রাখে মাত্র ২০০ ডলার। তাই দেখা যাচ্ছে ওষুধ কোম্পানিগুলো খরচের তুলনায় বেশ কয়েক গুণ লাভ করে থাকে। আশা করা হচ্ছে- আমেরিকার ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনেস্টকান এই ওষুধটার বাজারজাতকরনের অনুমোদন দিবে।

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। কাগজ২৪-এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য কাগজ২৪ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!