নির্বাচনে ফেসবুকের তথ্য কাজে লাগিয়েছে কংগ্রেস-বিজেপিও!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

তথ্য পাচারের প্রশ্নে সকালে ফেসবুকের মালিক মার্ক জুকেরবার্গকে সমন পাঠানোর হুমকি দিয়েছিল মোদী সরকার। আঙুল তুলেছিল কংগ্রেসের দিকে। বেলা গড়াতে দেখা গেল তথ্য হাতানোর সঙ্গে জড়িত সংস্থার সঙ্গে বিজেপিরই যোগ দীর্ঘদিনের।

ফেসবুক থেকে তথ্য হাতিয়ে আমেরিকার ভোটে নাক গলানোর অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে, সেই সংস্থার সঙ্গে কেন কংগ্রেসের মাখামাখি? মোদী সরকারের আইন ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ আজ যখন দিল্লিতে প্রশ্নটি তোলেন, বিজেপি শিবিরে তখন মুচকি হাসি। ভাবটা, বেড়াল বেরিয়ে পড়ল তো ঝুলি থেকে!

শুধু কংগ্রেস নয়, রবিশঙ্কর আজ তীব্র আক্রমণ শানান ফেসবুকের উদ্দেশেও। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামে একটি ব্রিটিশ সংস্থা ব্রিটেনের ৫০ লক্ষ ফেসবুক-ব্যবহারকারীর তথ্য হাতিয়ে আমেরিকার নির্বাচনে ডোনান্ড ট্রাম্পের পক্ষে তা কাজে লাগিয়েছে বলে অভিযোগ। চাপের মুখে অ্যানালিটিকার সিইও অ্যালেকজান্ডর ফক্স ইস্তফা দিয়েছেন কাল। ফেসবুককেও জবাবদিহি করতে হচ্ছে ব্রিটেনে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই রবিশঙ্কর আজ হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘এটা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা বাক্‌স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যম ও ভাবপ্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। ফেসবুক বা অন্য সোশ্যাল মিডিয়া এ দেশের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে বরদাস্ত করা হবে না।’’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার সামাজিক ভূমিকা নিয়ে বরাবরই বেশ উছ্বসিত। গিয়েছেন ফেসবুকের দফতরেও। বুকে জড়িয়েছেন জুকেরবার্গকে। সেই জুকেরবার্গের নাম করেই রবিশঙ্কর আজ বলেন, ‘‘…মনে রাখবেন ফেসবুকের মাধ্যমে যদি ভারতীয়দের তথ্য চুরি হয়, তবে তা সহ্য করব না। আমাদের কঠোর তথ্যপ্রযুক্তি আইন রয়েছে। তা প্রয়োগ করা হবে। দরকারে সমন পাঠিয়ে আপনাকে ডেকে আনা হবে।’’

ফেসবুক থেকে তথ্য হাতানোয় অভিযুক্ত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ ওঠায় কংগ্রেস আজ প্রথমে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে যায়। দলের সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল যোগাযোগ সেলের প্রধান দিব্যা স্পন্দনা জবাব হাতড়ে বলেন, ‘‘ইরাকে এত জন ভারতীয় মারা গেলেন। সরকার চেপে গিয়েছিল। ব্যাপারটা এখন সামনে আসায় অস্বস্তি ঢাকতে প্রসঙ্গ ঘোরাচ্ছে। আমাদের সঙ্গে এমন সংস্থার যোগাযোগ নেই।’’

এর পরেই সামনে আসে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ভারতীয় শাখার ডিরেক্টর ঢাক পিটিয়ে লিখেছেন, ‘বিজেপির হয়ে গত ৪টে ভোট সফল ভাবে সামলেছি। মিশন ২৭২ সফল করতে সাহায্য করেছি।’ কংগ্রেসের রণদীপসিংহ সুরজেওয়ালা এ বার চড়া সুরে জবাব দেন, ওই বিতর্কিত সংস্থার সঙ্গে যোগ রয়েছে বিজেপিরই। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ‘মিশন ২৭২’ সফল করতে বিজেপিই কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার ভারতীয় শাখা ওভলেনো বিজনেস ইন্টেলিজেন্স প্রাইভেট লিমিটেড (ওবিআই)-এর সাহায্য নিয়েছিল। আসলে ওই মিশনটা ছিল পুরোপুরি ‘ধাপ্পা’।

কংগ্রেস কি তবে এদের সাহায্য নেয়নি? ওবিআই-এর ওয়েবসাইট বলছে, বিজেপি ও কংগ্রেস তো বটেই, তাদের পরিষেবা নেয় সংযুক্ত জনতা দল ও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কও। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই, স্পষ্ট হয়ে যায় ঝুলি নয়, এটা একটা জালের মতো। বাইরে থেকেই দিব্য দেখা যাচ্ছে, সব র়ঙেরই মাছ রয়েছে এতে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!