সাকিবের কাছে হার মুশফিকের

স্পোর্টস ডেস্ক : বিপিএলে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স। ১০৯ রানের স্বল্প পুঁজি নিয়েও সিলেট সুপার স্টার্সকে ৬ রানে হারিয়েছে সাকিবের দল।

বৃহস্পতিবার মিরপুরে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ১০৯ রান করে রংপুর। জবাবে ১৯.২ ওভারে ১০৩ রানে অলআউট হয়ে যায় সিলেট।

ব্যাট হাতে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেছিলেন সাকিব। পরে বল হাতে ৪ ওভারে ৩১ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। আগের ম্যাচেও ব্যাট হাতে ২৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলার পর বোলিংয়ে ৪ উইকেট নিয়ে রংপুরের জয়ের নায়ক ছিলেন সাকিব। টানা দুই ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও উঠেছে তার হাতেই।

এবারের আসরে চার ম্যাচে এটা রংপুরের তৃতীয় জয়, আর তিন ম্যাচের সবগুলোতেই হারল মুশফিকুর রহিমের সিলেট। প্রথম দুই ম্যাচেই ১ রানে হারে তারা!

রংপুরের দেওয়া ১১০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই সাকিবের ঘূর্ণির সামনে পড়ে সিলেট। ইনিংসের ও নিজের প্রথম ওভারেই জসুয়া কবকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন সাকিব। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে আরেক ওপেনার দিলশান মুনাবীরাকেও নিজের শিকারে পরিণত করেন রংপুর অধিনায়ক।

এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে সিলেট। ১০ ওভার শেষে সিলেটের স্কোর দাঁড়ায় ৫৬/৫। তখনো ক্রিজে ছিলেন অধিনায়ক মুশফিক। কিন্তু তাকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি কেউই।

দলীয় ৭৩ রানে আবু জায়েদের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ মিথুনকে ক্যাচ দেন নাসুম আহমেদ। দলীয় ৮৫ রানে সাকিব নিজের শেষ ওভারে বোল্ড করেন নাজমুল হাসান মিলনকে। দলীয় ৯৬ রানে ফিরে যান নুরুল হাসান সোহানও।

শেষ দুই ওভারে সিলেটের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। ১৯তম ওভারে ড্যারেন সামির দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ শহীদ চার মেরে ব্যবধান কমালেও পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান তিনি।

শেষ ওভারে সিলেটের প্রয়োজন ছিল ৭ রান। আবু জায়েদের প্রথম বল থেকে কোনো রান নিতে পারেননি অজান্তা মেন্ডিস। আর দ্বিতীয় বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে স্বদেশী সেনানায়েকের হাতে মেন্ডিস ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে জয়ের উল্লাসে মেতে ওঠে রংপুর শিবির। নন-স্ট্রাইক প্রান্ত থেকে চেয়ে চেয়ে দলের পরাজয় দেখা ছাড়া কিছু করার ছিল না ২৫ রানে অপরাজিত থাকা মুশফিকের। দলের সপ্তম উইকেট পড়ার পর স্ট্রাকিং প্রান্তেই যেতে পারেননি তিনি!

এর আগে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রংপুর অধিনায়ক সাকিব। কিন্তু শুরুটা ভালো হয়নি। ১৯ রানেই ফিরে যান সৌম্য সরকার (৭)। আগের ম্যাচে ছয়ে নামা সাকিব এদিন সৌম্যের বিদায়ের পরই তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে আসেন।

এক প্রান্তে সাকিব রানের চাকা সচল রাখলেও অপর প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারাতে থাকে রংপুর। দলীয় ৫৪ রানের মধ্যেই ফিরে যান লেন্ডল সিমন্স (১৩), মোহাম্মদ মিথুন (৪) ও জহুরুল ইলসাম (৮)।

এরপর পঞ্চম উইকেটে সাকিবের সঙ্গে ২৬ রানের একটা জুটি গড়েছিলেন থিসারা পেরেরা। তবে পেরেরার (২১) বিদায়ের পর দ্রুত ড্যারেন সামি ও সাচিত্রা সেনানায়েকেও ফিরে যান। তখনো এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন সাকিব।

ইনিংসের শেষ ওভারে মোহাম্মদ শহীদের দ্বিতীয় বলে বিদায় নেন সাকিব (৩৩)। পরের বলে আরফাত সানীকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন শহীদ। শেষ পর্যন্ত হ্যাটট্রিক না হলেও ডাবল উইকেট মেডেন নিয়েই ওভার শেষ করেন সিলেটের এই পেসার, শেষ বলে একটি রান হয় শুধু লেগ বাই থেকে।

৩৭ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় ৩৩ রানের ইনিংসটি সাজান সাকিব। রংপুরের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সাকিব ছাড়া দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল থিসারা পেরেরা (২১) ও লেন্ডল সিমন্স (১৩)।

১২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে সিলেটের সেরা বোলার শহীদ। এ ছাড়া নাজমুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ ও রবি বোপারার ঝুলিতে জমা পড়ে একটি করে উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!