শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা: ৯ জনের ফাঁসি-২৫ জনের যাবজ্জীবন

অনলাইন ডেক্স । কাগজটোয়েন্টিফোরবিডিডটকম

পাবনার ঈশ্বরদীতে বহুল আলোচিত তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে গুলিবর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া একই ঘটনায় ২৫ জনের যাবজ্জীবন ও ১৩ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুস্তম আলী বুধবার দুপুর ১২টায় এ রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলার ৫২ আসামির মধ্যে জীবিত আছেন ৪৭ জন। এর মধ্যে রায় গোষণার সময় ৩২ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামিরা সবাই ঈশ্বরদী উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ঈশ্বরদীর সাবেক পৌর মেয়র ও বিএনপি নেতা মোখলেসুর রহমান, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সভাপতি জাকারিয়া পিন্টু, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আখতারুজ্জামান প্রমুখ।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কর্মসূচিতে ট্রেনবহর নিয়ে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনে তাকে বহনকারী ট্রেনবহর যাত্রাবিরতি করলে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে রেলওয়ে পুলিশ বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করে।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি পুনঃতদন্ত করে পুলিশ। তদন্ত শেষে নতুনভাবে বিএনপি নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করার বছরে এ মামলায় পুলিশ কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। কিন্তু আদালত সে রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।

প্রথম চার্জশিটের সাত আসামির বাইরেও এ মামলায় যাদের নতুনভাবে যুক্ত করা হয় তাদের মধ্যে রয়েছেন ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান বাবলু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র শামসুল আলম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন বিশ্বাস, পাবনা জেলা বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক কে এম আক্তারুজ্জামান আক্তার, পাকশীর সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, সাহাপুরের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, সাবেক ছাত্রনেতা মাহবুবুর রহমান পলাশ, সাবেক ভিপি রেজাউল করিম শাহীন, যুবদল নেতা আজিজুর রহমান শাহীন, সেলিম আহমেদ, পৌরসভার কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন জনি, বিএনপি নেতা ইসলাম হোসেন জুয়েল, শহীদুল ইসলাম অটল ও আবদুল জব্বার প্রমুখ। আসামিদের মধ্যে গত ২৫ বছরে ওসিয়া, আলী আজগর, খোকন, তুহিন ও আলমগীর মারা যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!